জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান বিষয়ে একবছর মেয়াদী স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা কোর্সের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। করোনা ভাইরাসের ছোবলে যখন বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবী সার্বিক দিক থেকে বিপর্যস্ত। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এমন অনিশ্চয়তা ও আতঙ্কিত পরিস্থিতির মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বছর মেয়াদী গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা কোর্স পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইন পাঠদান কার্যক্রম চালু করেছে।
শনিবার (১৮ এপ্রিল) বিকালে অনলাইন পাঠদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) ও ডিন (স্নাতকপূর্ব) এবং গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম নাসিরুদ্দিন মিতুল। এসময় তিনি যুগোপযোগী এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং এ কার্যক্রমে যাতে সকল শিক্ষার্থী সংযুক্ত থাকতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান, ডিন (স্নাতকোত্তর) প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন, কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর ড. মো. মনিরুজ্জামান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর ড. মো. মনিরুজ্জামান এমন উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দেন। অনুষ্ঠানের সাথে অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন বিভিন্ন কোর্সভিত্তিক বিষয় বিশেষজ্ঞ শিক্ষক, অংশগ্রহণকারী কলেজগুলোর অধ্যক্ষ, প্রতিষ্ঠাতা বা চেয়ারম্যান ও শিক্ষার্থীরা।
লাইব্রেরি সায়েন্স কলেজসমূহের সমন্বিত অনলাইন ক্লাসের পরিকল্পনাকারী, লাইব্রেরি সায়েন্স কলেজ এসোসিয়েশনের সভাপতি এবং ড. এম মিজানুর রহমান প্রফেশনাল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ড. মো. মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন হাজীগঞ্জ আইডিয়াল প্রফেশনাল কলেজের অধ্যক্ষ ও লাইব্রেরি সায়েন্স কলেজ এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি মো. সালাউদ্দিন। আরও বক্তব্য দেন ইলিস রাজশাহীর চেয়ারম্যান এম এ বসির, সাতক্ষীরা কলেজ অব এডুকেশনের অধ্যক্ষ মো. নাজিরুল ইসলাম, বগুড়া লাইব্রেরি সায়েন্স কলেজের অধ্যক্ষসহ বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান কলেজ এসোসিয়েশনের সভাপতি ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, এটি একটি ব্যবহারিক ও টেকনিক্যাল প্রফেশনাল কোর্স। কোর্সটি শেষ করে স্কুল-কলেজসহ যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগারিক ও সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে চাকরিপ্রাপ্তদের কর্মক্ষেত্রে ব্যবহারিক জ্ঞান প্রয়োগ করতে হয়। তাই একদিকে ক্লাস না করে এ কোর্সে পাস করা যেমন কঠিন তেমনি পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকলে দক্ষতার সাথে চাকরি করাও সম্ভব নয়। এ বিষয়টি বিবেচনা করে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের যাতে ক্ষতি না হয় সে জন্য ২০টি কলেজ একত্রে এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এতে শিক্ষার্থীরা বর্তমান অবসর সময়টা পাঠগ্রহণের কাজে ব্যয় করে উপকৃত হবে।
শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট যুক্ত তাদের নিজ নিজ মোবাইলে ঘরে বসে এ কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হয়ে সরাসরি ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারবে। প্রতিদিন ৩টি করে সপ্তাহে ৫ দিন ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে।
অনলাইন কার্যক্রমে যুক্ত হওয়া কলেজগুলো হলো- ঢাকার ড. এম মিজানুর রহমান প্রফেশনাল কলেজ, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ আইডিয়াল কলেজ অব এডুকেশন, রাজশাহীর ইনস্টিটিউট ফর লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন স্টাডিজ (ইসি), সাতক্ষীরার কলেজ অব এডুকেশন, বগুড়া লাইব্রেরি সায়েন্স কলেজ, ঢাকার আলহাজ্ব মকবুল হোসেন ডিগ্রি কলেজ, ঢাকার নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজ, ময়মনসিংহের ইনস্টিটিউট অব লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন সায়েন্স (ইলিস), বরিশাল গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, পটুয়াখালী গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান কলেজ, যশোর বাংলাদেশ সাউথ ওয়েস্ট মডেল ইনস্টিটিউট, গাজীপুর লাইব্রেরি সায়েন্স অ্যান্ড প্রফেশনাল ইনস্টিটিউট, মাদারীপুরের ইনস্টিটিউট অব লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন সায়েন্স, নোয়াখালী মর্ডান ইনস্টিটিউট, ময়মনসিংহের ব্রিটিশ বাংলা ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি, উপমা ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, সিলেটের জাস ইনস্টিটিউট, জয়পুরহাট মডার্ন ইনস্টিটিউট অব লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন সায়েন্স, দিনাজপুরের এস এফ লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন সায়েন্স কলেজ এবং কুমিল্লা ইনস্টিটিউট অব প্রফেশানল এডুকেশন।
Discussion about this post