বিশেষ প্রতিবেদক
অনলাইনে সব ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়ার লক্ষ্যে দেশের সব প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (পিটিআই) একটি করে ডিজিটাল স্টুডিও করবে সরকার। প্রাথমিকের শ্রেণি কার্যক্রম রেকর্ডিং, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কর্মশালা, সেমিনার এবং মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যবহার করা হবে এই ডিজিটাল স্টুডিও। প্রথম পর্যায়ে বিভাগীয় শহরের পিটিআইগুলোতে স্টুডিও করা হলেও পর্যায়ক্রমে সব পিটিআইকে এর অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে টানা ছুটি থাকায় শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনলাইন শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সংসদ টেলিভিশনে অনলাইন শ্রেণি কার্যক্রম প্রচার শুরু করা হয়। অধিদফতর শ্রেণি কার্যক্রমের ভিডিও করে শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ঘরে বসে শিখি’ ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করতে গিয়ে নানা সংকটের সম্মুখীন হতে হয়। প্রথমেই স্টুডিও সংকট দেখা দেয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ভালো শিক্ষকদের ঢাকায় নিয়ে এসে শ্রেণি কার্যক্রম রেকর্ডিং করানো সম্ভব হয়নি। জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে ভিডিও শ্রেণি কার্যক্রম প্রস্তুত করা হয়। ফলে বর্তমানে প্রচারিত ঘরে বসে শিখি কার্যক্রমে পাঠদানে সংকট দেখা গিয়েছে।পুনঃপ্রচারের মাধ্যমে ক্লাসরুটিন সাজানো হচ্ছে।এসব সমস্যা সামনে আসায় দেশের পিটিআইগুলোতে স্টুডিও করার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়। স্থায়ী ভাবে ‘ঘরে বসে শিখি’ অনলাইন পোর্টাল তৈরির উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে।
এ প্রসংগে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ্ বলেন, ‘সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমরা গতানুগতিক কিছু কার্যক্রমে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি। এরই অংশ হিসেবে দেশের পিটিআইগুলোতে ডিজিটাল স্টুডিও করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। প্রথমে বিভাগীয় পর্যায়ের পিটিআইগুলোতে ডিজিটাল স্টুডিও করা হবে। এসব স্টুডিও থেকে সব ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে অন যাতে কর্মকর্তা ও শিক্ষকরা কর্মস্থলে বসেই অনলাইনে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ ছাড়া বিভিন্ন মিটিং, সেমিনার ও কর্মশালা করা যাবে। এছাড়া উন্নত স্টুডিও থেকে আমরা শিক্ষকদের ভিডিও শ্রেণি কার্যক্রমে রেকর্ডিং করবো।’
মহাপরিচালক আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় যারা দক্ষ শিক্ষক রয়েছেন তাদের ভিডিও শ্রেণি কার্যক্রম বিভাগীয় কিংবা জেলা পর্যায়ে তৈরি করা হবে। এই কাজের জন্য শিক্ষকদের ঢাকায় আনার দরকার হবে না। এছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকা থেকে কোনও অনলাইন ট্রেনিং প্রোগ্রাম করা হলে বিভাগীয় বা জেলাকে যুক্ত করে তা করা সম্ভব হবে। কোনও একটি স্টুডিওতে থেকে দেশের সব পিটিআইকে অনলাইনে সংযুক্ত করা যাবে। এলাকাভিত্তিক প্রশিক্ষন, মিটিং করা যাবে এলাকার পিটিআইগুলোকে সংযুক্ত করে।
মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে জানা গেছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই স্টুডিও করার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। অর্থ সংকট নেই। প্রাথমিক শিক্ষার জন্য যে বরাদ্দ রয়েছে সে টাকা থেকেই এই কাজগুলো করা সম্ভব হবে ।
Discussion about this post