শিক্ষার আলো ডেস্ক
আধুনিক সভ্যতার এই যুগে মানুষ যখন অনলাইন গেম কিংবা মাদকের দিকে ঝুঁকছে, তখন মানুষকে বই পড়ার প্রতি আকৃষ্ট করে তুলছে ‘বইবৃক্ষ’। লিস্টের যে বই পছন্দ হয় সেটা ফেসবুক গ্রুপের কমেন্টে জানাতে হয়। কমেন্ট দেখে এক দিনের মধ্যে বইবৃক্ষের সমন্বয়কেরা বিনা মূল্যে পাঠকের বাসায় বই পৌঁছে দেয়। নির্দিষ্ট সময়ে সেই বই আবার ফেরত দিতে হয়।
এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উচ্চতর মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র (কারাস) মিলনায়তনে ঢাবি শাখার উদ্বোধন করল বই পড়ুয়াদের ডিজিটাল প্ল্য়াটফর্মটি।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ইকবাল রউফ মামুন, পাবলিক লাইব্রেরির মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব আবু বক্কর সিদ্দিক এবং কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল ইমরানসহ অনেকে।
কুইজ প্রতিযোগিতা, উপহার, বই নিয়ে আড্ডা, পরিচয়পর্বসহ বিভিন্ন বইপ্রেমীদের বক্তব্যের মাধ্যমে চলে মনোমুগ্ধকর এ আয়োজন। কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৪০ জনকে প্রায় চল্লিশ হাজার টাকার বই পুরস্কার দেওয়া হয়।
বইবৃক্ষের উদ্যোগ নেন রমজান আলী ইমন, খশরু, মেহেদী হাসান, আব্দুর রাফি ও নাসিম রেজা।
বই পড়া এবং সংগ্রহ করা যেন রমজানের নেশা। ছাত্রাবাসে নবীনবরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় ঘোষণা দেন তার কাছে ৩০টি বই আছে। কেউ পড়তে চাইলে দিতে চান, তবে ফেরত দিতে হবে। এরপর থেকেই শুরু হয় বই নিয়ে আলোচনা। বন্ধুরা উপহার দিল আরও ৫০টি বই। ঠিক করলেন ‘বইবৃক্ষ’ নামে একটি গ্রুপ খুলবেন। গ্রুপের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে বই বিনিময় করবে।
পরে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক-২০ ব্যাচের কয়েকজন বন্ধুর উদ্যোগে কলেজের উত্তর ছাত্রাবাসে যাত্রা শুরু হয় ‘বইবৃক্ষে’র।
বইবৃক্ষের একটি ফেসবুক পেইজ ও একটি গ্রুপ রয়েছে। বর্তমানে ফেসবুকে এই গ্রুপটির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার। স্থায়ী সদস্য রয়েছেন প্রায় ৫০০ জন। তাদের উদ্যোগে সাড়া দিয়ে এখন পর্যন্ত বই পড়েছেন ছয় হাজারের বেশি পাঠক।
দেশের ১৩টি জেলা এবং ১৪টি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পাঠকদেরকে নিয়মিত বই পড়িয়ে আসছে ‘বইবৃক্ষ’।
বইবৃক্ষের উদ্যোক্তা রমজান আলী বলেন, ’ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বইপড়ার আন্দোলন এক শহর থেকে অন্য শহরে ছড়িয়ে গেছে। দেশের বাইরের দুটি শাখা চীন ও অস্ট্রেলিয়া বইবৃক্ষে যুক্ত হবে।’
Discussion about this post