করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে যদি ছুটি আরও দীর্ঘমেয়াদি হয়, তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালুর কথা ভাবছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
সোমবার (২০ এপ্রিল) ডিনদের সঙ্গে উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের সম্ভাব্যতা যাচাই করার সিদ্ধান্ত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মাহমুদ আলম সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সোমবার তার বাসভবন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিনদের সঙ্গে অনলাইন ভার্চুয়াল মিটিং প্লাটফর্ম জুমের মাধ্যমে এক সভায় মিলিত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ এবং প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ এ সভায় সংযুক্ত ছিলেন।
সভায় করোনাভাইরাস উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম যেন ব্যাহত না হয়, সে বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ডিনরা সভায় জানান যে, গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করা যায়, তাহলে শিক্ষকরা সংশ্লিষ্ট সেমিস্টার/বার্ষিক পদ্ধতির কোর্সগুলোর অতিরিক্ত ক্লাস ও ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্রহণ করে এই অনির্ধারিত ছুটির কারণে সৃষ্ট ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস দীর্ঘ সময় বন্ধ রাখার প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সাময়িকভাবে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার বিষয়টি সভায় আলোচিত হয়।
অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের সেই সম্ভাব্যতা মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো ও প্রযুক্তিগত বিষয়ে (গুগল ক্লাসরুম, জুম, মিট প্রভৃতি) শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পরিচিত করার প্রয়োজনীতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ডিনরা নিজ নিজ অনুষদের বিভাগগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের সম্ভাব্যতা যাচাই করবেন এবং প্রযুক্তিগত সুবিধাদির মধ্যে প্রবেশাধিকারের বিষয়টি নিশ্চিত করার পরে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
মাহমুদ আলম আরও জানান, ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও অনুষদ তাদের অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের সহায়তা প্রদানে এগিয়ে এসেছেন, সভায় তাদের উদ্যোগের প্রশংসা করা হয়। একইভাবে এই সভা থেকে অন্যান্য বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও অনুষদকেও তাদের অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়। এবিষয়ে নিজ নিজ বিভাগীয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সহায়তা নিতে পারেন। পরীক্ষার ফলাফল সংক্রান্ত যেসব কাজ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস, সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের পরীক্ষা কমিটি সমন্বয় করে চূড়ান্ত করতে পারে, সেই কাজগুলো এই বন্ধকালীন সময়ে শেষ করার জন্য সভা থেকে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। এবিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিস সব ধরনের সহায়তা প্রদান করবে। সভায় করোনা পরিবেশ, শিক্ষা ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে প্রভাব পড়বে, সে সব বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের সুচিন্তিত মতামত গ্রহণ করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
Discussion about this post