নিজস্ব প্রতিবেদক
লেখাপড়ার গুণগত মান বৃদ্ধি ও পঠনপাঠনে সামঞ্জস্যতা বজায় রাখতে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় আসন সংখ্যা কমানো চিন্তাভাবনা করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন নীতিনির্ধারকেরা। সেই লক্ষ্য নিয়ে তাই এ বছরও কমানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু আসন সংখ্যা।
জানা গেছে, শ্রেণিকক্ষে পঠনপাঠনের গুণগত মান বৃদ্ধির পাশাপাশি গবেষণা ক্ষেত্রে অধিক সুযোগ সৃষ্টির কথা চিন্তা করে বিভাগগুলোতে আসন সংখ্যা কমানোর চিন্তা করা হচ্ছে। কেননা অধিক শিক্ষার্থীর ফলে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে যেমন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি শিক্ষার্থীর তুলনায় গবেষণা ল্যাব সংকুলান না হওয়ায় দক্ষ গবেষক ও গবেষণা কার্য সম্পাদনে ব্যাঘাত ঘটছে। এমনকি চাহিদা অনুসারে বাজেট প্রণয়নও সম্ভব হচ্ছে না। ফলে দিনের পর দিন কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন ব্যহত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, রাজশাহী বিভাগসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠছে। তাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও কিছু আসন কমানোর চিন্তা চলছে। যাতে সার্বিক বিষয়ে সামঞ্জস্য রেখে গুণগত শিক্ষা ও উন্নত গবেষণার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন তরান্বিত করা সহজ হয়।
আসন সংক্রান্ত বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে গবেষণা জায়গা। আমরা চাই, এখানে সর্বদা গুণগত শিক্ষা-গবেষণা চালু থাকুক। দেশ-জাতির নতুন কিছু অর্জন হোক। সেই লক্ষ্যে কাজ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে এ বছর কিছু আসন কমানো হয়েছে। পরবর্তীতে আরো কিছু আসন কমানোর চিন্তা করা হয়েছে।এর মাধ্যমে সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা সুষ্ঠুভাবে ফিল্ড ওয়ার্ক সম্পন্ন করতে পারবেন এবং ল্যাব ও ক্লাসে তাদের যথাযথভাবে পাঠদান ও গবেষণা কার্য সম্পাদন সম্ভব হবে। কেননা অধিক শিক্ষার্থীর ফলে এসব কাজ প্রতিনিয়ত ব্যাহত হচ্ছে।
বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২টি অনুষদের অধীনে ৫৯টি বিভাগ ও ৬টি ইনস্টিটিউট রয়েছে। ২০২১-২২ সেশনের ভর্তি পরীক্ষার তিন ইউনিটে আসন সংখ্যা কমেছে ১৬৮টি। যারমধ্যে কলা অনুষদভুক্ত ইতিহাস বিভাগে ১০টি, বাংলা বিভাগে ২০টি ও নাট্যকলা বিভাগে ৫টি আসন কমেছে।
তাছাড়া সমাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত অর্থনীতি বিভাগে ১০টি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ১০টি, সমাজকর্ম বিভাগে ২০টি, সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ২০টি, লোকপ্রশাসনে ১০টি, নৃবিজ্ঞানে ছয়টি ও ফোকলোর বিভাগে কমেছে ছয়টি আসন।
জীববিজ্ঞান অনুষদভুক্ত মনোবিজ্ঞান বিভাগে পাঁচটি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগে কমেছে ১৫টি আসন। প্রকৌশল অনুষদভুক্ত কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ১০টি এবং ভূ-বিদ্যা অনুষদভুক্ত ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগে কমেছে ছয়টি আসন।
চারুকলা অনুষদের চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগে কমেছে ১৫টি আসন। ফলে বিশেষ কোটা বাদে আসন সংখ্যা হয়েছে চার হাজার পাঁচটি। আগের দুই বছরে তিন ইউনিটে বিশেষ কোটা বাদে ছিল চার হাজার ১৭৩টি আসন।
Discussion about this post