নিজস্ব প্রতিবেদক
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) প্রশাসনের আশ্বাসে হলে ফিরেছেন অপরাজিতা হলের আন্দোলনরত আবাসিক ছাত্রীরা। মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) রাতে সাড়ে তিন ঘণ্টা অবস্থানের পর তারা হলে ফেরেন। রাত ২টার দিকে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা।
এর আগে ছাত্রীরা মঙ্গলবার রাতে সাড়ে ১০টার দিকে ছাত্রীরা প্রথমে হলের ভেতরের তলা ভেঙে বাইরে আসেন। পরবর্তীতে হলের গেট খুলে প্রতিবাদ শুরু করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জনা যায়, হলের প্রভোস্ট, সহকারী প্রভোস্ট ছাত্রীদের সাথে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ধমক দেওয়া থেকে শুরু করে সিট বাতিলের হুমকি দেন। মঙ্গলবার এক ছাত্রী ওই হলে বটি দিয়ে গলা কাটার চেষ্টা করলেও হাসপাতালে নিয়ে গেলে বেঁচে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রীদের রান্না করার সরঞ্জাম জব্দ করার নিদের্শ দেয় হল কর্তৃপক্ষ।
ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ, রাইস, কুকার, হিটার এগুলো না সরালে যার রুমে এগুলো পাওয়া যাবে তার সিট বাতিল হয়ে যাবে বলেও জানায়। এ ছাড়াও কিছু দিন আগে ফেসবুকে কমেন্ট করাকে কেন্দ্র করে এক ছাত্রীকে ৪৫ মিনিট ধরে ধমক এবং শাসানো হয়। যার ফলে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজিতা হলের প্রভোস্ট রহিমা নুসরাত রিমি বলেন, আমাদের সন্তান শিক্ষার্থীরা। তাদের সব দাবি মেনে নিয়েছি। আমরা চাই না সন্তানেরা কষ্ট পাক। তাদের হল তারা যেভাবে চাইবে সেভাবে চালাব। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী কখনও প্রতিপক্ষ হতে পারে না।
ছাত্রীদের দাবিগুলো হলো- রাইস কুকার ও রান্নার সরঞ্জামাদি ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে; যৌন হয়রানির প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলার কারণে ব্যক্তিগত আক্রমণ ও পারিবারিক শিক্ষা তুলে কথা বলায় ক্ষমা চাইতে হবে; হলে প্রয়োজনে অভিভাবক ও নারী আত্মীয়দের থাকার অনুমতি দিতে হবে; পানিতে পোকা ও খাবারের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে; প্রভোস্টদের নিজ ডিসিপ্লিনের স্টুডেন্টদের ডেকে ব্যক্তিগত ও একাডেমিক বিষয়ে হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং ক্ষমা চাইতে হবে; হলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দুর্ব্যবহার বন্ধ করতে হবে; যেকোনো পরিস্থিতিতে সিট বাতিলের হুমকি দেওয়া বন্ধ করতে হবে; যেকোনো পরিস্থিতিতে হলের ছাত্রীদের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে; মঙ্গলবারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোনো শিক্ষার্থীকে ব্যক্তিগতভাবে হুমকি দেওয়া যাবে না এবং দাবি না মানলে প্রভোস্ট কমিটিকে পদত্যাগ করতে হবে।
Discussion about this post