শিক্ষার আলো ডেস্ক
গ্লোবাল কোরিয়া স্কলারশিপের (জিকেএস) অধীনে দক্ষিণ কোরিয়ায় অধ্যায়ন করা সাবেক বাংলাদেশি ছাত্ররা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও জোরদার করার জন্য প্রথমবারের মতো একটি মিট-আপ ইভেন্ট করেছে। শনিবার (২৭ আগস্ট) ঢাকাস্থ কোরিয়া দূতাবাস জিকেএস বাংলাদেশ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় এই মিট-আপের আয়োজন করে।
জিকেএস হল দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সরকারি প্রোগ্রাম। যার মাধ্যমে বিদেশি শিক্ষার্থীদের বৃত্তিসহ কোরিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়। এই কর্মসূচির আওতায় প্রতি বছর প্রায় ২০ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে পড়ার জন্য কোরিয়া যাচ্ছেন। ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ১৭২ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী জিকেএস প্রোগ্রাম থেকে উপকৃত হয়েছেন। যার মধ্যে ১৩৭ জন স্নাতক প্রোগ্রামে এবং ৩৫ জন স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে ছিলেন। জিকেএস শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২০১১ সালে ৮ জন থেকে এ বছর (২০২২) বেড়ে ১৮ জন হয়েছে। ২০১১ সালে ১৭ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী জিকেএস প্রোগ্রামের মাধ্যমে কোরিয়ায় যান, যার মধ্যে ১৪ জন স্নাতক এবং ৩ জন স্নাতকোত্তর ছিলেন। এ বছর ১৮ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৪ জন স্নাতক এবং ৪ জন স্নাতকোত্তরে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
কোরিয়ার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন (এনআইআইইডি) দ্বারা পরিচালিত জিকেএস স্কলারশিপ প্রোগ্রামটি প্রতি বছর দুটি ট্র্যাকের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে সম্ভাব্য ছাত্রদের নিয়োগ করে: (১) দূতাবাস ট্র্যাক এবং (২) বিশ্ববিদ্যালয় ট্র্যাক। দূতাবাস ট্র্যাকের আবেদনের জন্য শিক্ষার্থীরা দূতাবাসে আবেদন জমা দেন। আর ইউনিভার্সিটি ট্র্যাকে আবেদন সরাসরি দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জমা দিতে হবে।
সব সাবেক জিকেএস বাংলাদেশি ছাত্ররা দেশের বিভিন্ন সেক্টরে সক্রিয়ভাবে অবদান রাখছে। বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বা পাবলিক কোম্পানি থেকে শুরু করে কোরিয়ান বিনিয়োগকারী এবং বাংলাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যেমন স্যামসাং, এলজি ও হুন্দাই।
বর্তমানে প্রায় ১ হাজার ৫০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছে। যাদের বেশিরভাগই জিকেএসসহ বিভিন্ন বৃত্তির সুযোগ পেয়েছে। প্রতি বছর কোরিয়ায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি সারা বিশ্বের শিক্ষার্থীদের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া একটি ক্রমবর্ধমান পছন্দের গন্তব্য হয়ে উঠছে। এর কারণ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ডিগ্রি, উদ্ভাবনের হাব এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতি থেকে শুরু করে সাশ্রয়ী টিউশন ফি এবং স্কলারশিপের সুযোগ।
রাষ্ট্রদূত লি জাং-কুন সাবেক জিকেএস শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলন এবং নেটওয়ার্কিং অনুষ্ঠানে অভিনন্দন জানান। তিনি দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার ও গভীর, বিশেষ করে অনেক মেধাবি এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষী বাংলাদেশি তরুণদের কোরিয়ান শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে জিকেএস বাংলাদেশের সাবেক ছাত্রদের ভূমিকার ওপর জোর দেন।
তিনি তাদের ২০২৩ সালে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে বলেন। তিনি আগামী বছরগুলিতে আরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী যেন দক্ষিণ কোরিয়ায় পড়ার সুযোগ পায়, সে জন্য জোর চেষ্টার প্রতিশ্রুতি দেন।
Discussion about this post