শিক্ষার আলো ডেস্ক
‘মূকাভিনয় আমাদের সর্বজনীন ভাষা’— এই স্লোগানকে সামনে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক মূকাভিনয় উৎসব শুরু হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশন (ডুমা) চতুর্থবারের মতো এর আয়োজন করেছে। রোববার পর্যন্ত চলবে এই উৎসব। এতে বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের মূকাভিনয় দলের সদস্যরা মূকাভিনয় প্রদর্শন করবেন।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, মূকাভিনয় খুব প্রাচীন একটি শিল্প। ফরাসি বিপ্লবের সময়ে প্যারিসের রাজপথে ও পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মূকাভিনয় ছিল প্রতিবাদের শক্তিশালী একটি মাধ্যম, যা সমাজে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটিয়ে দিয়েছিল। তখন দার্শনিকদের বাণী ও লেখনী যতটা ভূমিকা রেখেছিল, তার চেয়ে বেশি শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছিল মূকাভিনয় শিল্পীদের প্রদর্শনী ও তাদের অভিনয়।
ডুমার সভাপতি শাহ পরান শুভ্রের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবু সাদাত মো. সায়েমের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, সংস্কৃত বিভাগের অধ্যাপক ড. অসীম সরকার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান ইসরাফিল আহমেদ এবং বাংলাদেশ মাইম ফেডারেশনের সাবেক চেয়ারম্যান জাহিদ রিপন। স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের মডারেটর ফাদার তপন ক্যামিলাস ডি রোজারিও।
উৎসবের উদ্বোধনী দিনে বন্যপ্রাণী নিধন নিয়ে ‘সাইলেন্ট থিয়েটার’ মঞ্চস্থ করে ‘প্রলয় নাচন। ‘থিয়েটার সার্কেল মুন্সিগঞ্জ’ মঞ্চস্থ করে ‘দ্যা অনেস্ট’। ভারতীয় মাইম ‘লিটল ড্রামা’ মঞ্চস্থ করে ‘জুম চাষ’। ‘মাইম আর্ট’ চারটি নকশা মূকাভিনয় প্রদর্শন করে। ‘শ্রুতি’ মঞ্চস্থ করে ‘বৃক্ষ লিপি’ এবং ঢাকার ‘গোল্লাছুট নাট্যদল’ মঞ্চস্থ করে ‘থার্ড পারসন’ ও ‘কাতুকুতু’।
আয়োজকেরা জানান, এবারের উৎসবে তুরস্ক, ইরান ও ভারতের শিল্পীরা ছাড়াও অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের কয়েকটি সংগঠনের শিল্পীরা। প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে উৎসবের মূল আয়োজন। এ ছাড়া শহীদ মিনার, কার্জন হল, কলাভবন, শাহবাগসহ পুরো ক্যাম্পাসজুড়েই থাকবে পথ শো। উৎসব উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতেও প্রদর্শনী হয়েছে। তিন দিনের আয়োজনে থাকছে মূকাভিনয়বিষয়ক কর্মশালা, সেমিনার, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে মূকাভিনয় প্রতিযোগিতা ও পোস্টার প্রদর্শনী।
Discussion about this post