শিক্ষার আলো ডেস্ক
গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নিতে অনীহা প্রকাশ করায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুইজন জাতীয় পদকপ্রাপ্ত শিক্ষক রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক নির্দেশনায় তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকরা হলেন- রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি, রাজবাড়ির স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম, জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমান।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তিনজন প্রাথমিক শিক্ষককে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি প্রচলিত বিধি মোতাবেক খোরাকি ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
অভিযোগে বলা হয়, ঢাকায় ১১ মার্চ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৩ এবং প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০১৯ ও ২০২২ প্রদানের মহড়া অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের হাত থেকে পদক গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার প্রদান করেন এ তিন শিক্ষক এবং অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী অন্যদের সাক্ষাৎকার প্রদানে উৎসাহিত করায় অনুষ্ঠানের শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়।
বিষয়টি সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আচরণ পরিপন্থি। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ১২ (১) ধারা মোতাবেক তাদের সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
এর আগে বিষয়টি নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ডিপিই। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারাদেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিকা নির্বাচিন হন। করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেওয়া হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন।
এর ৬৮ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার তাদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তাদেরকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ জারি করে পত্র দেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, পদক নিতে অস্বীকৃতি কোথায় জানালাম? আমি পদক তো নিয়েছি। মহড়ার দিন আমরা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পদক নেওয়ার আকাঙ্খা ব্যক্ত করেছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নিতে চাওয়া তো অপরাধ নয়। প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক পাওয়া আমাদের প্রাথমিক শিক্ষকদের কাছে স্বপ্নের মতো।
Discussion about this post