নিউজ ডেস্ক
করোনা মহামারিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় হলে বা মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের বাড়িতে ফিরতে হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বাড়ি ফেরাটা স্বাভাবিক হলেও সঙ্কটে পড়েছেন বহু শিক্ষার্থী। অনেক শিক্ষার্থী টিউশনি বা খন্ডকালীন চাকরি করে চলেন। কেউ কেউ দরিদ্র বাবা-মাকেও সহযোগিতা করেন। কিন্তু সেই সুযোগ এখন না থাকায় পুরো পরিবারটিই বিপদে।
এমন সমস্যায় পড়া শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করতে সাতটি ক্যাম্পাসে কাজ করছে ভোক্তা অধিকার সংস্থা কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি (সিসিএস) এর যুব শাখা ‘কনজুমার ইয়ুথ বাংলাদেশ’ (সিওয়াইবি)। সংগঠনটি ‘করোনায় উপহার’ শিরোনামে একটি সহযোগিতামূলক ক্যাম্পেইন করছে। যার মাধ্যমে শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সহায়তা করা হচ্ছে।
সাতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, গোপালগঞ্জ।
‘করোনায় উপহার’ক্যাম্পেইনের দায়িত্বে থাকা সিওয়াইবির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইমরান শুভ্র জানান, প্রতিটি ক্যাম্পাসে ক্যাম্পেইনের শিরোনাম আলাদা। যেমন, জাবিতে ‘করোনায় জাবিয়ানকে জাবিয়ানের উপহার’, ইবিতে ‘করোনায় ইবিয়ানকে ইবিয়ানের উপহার,’ রাবিতে ‘করোনায় রাবিয়ানকে রাবিয়ানের উপহার’। প্রতিটি ক্যাম্পাসে ইভেন্ট পরিচালনার জন্য সিওয়াইবির দুইজন করে স্বেচ্ছাসেবী দায়িত্ব পালন করছেন।
উপহার প্রোগ্রাম চালু করার পর এ পর্যন্ত ২০০ এর বেশি শিক্ষার্থীকে সহায়তা করা হয়েছে। ক্যাম্পাসগুলোতে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে সিওয়াইবির গ্রুপ রয়েছে। যখন কোনো শিক্ষার্থী তার সমস্যার কথা জানান তখন তার পরিচয় গোপন রেখে বিভাগ ও বর্ষ উল্লেখ করে গ্রুপে পোস্ট করে অন্যদের উপহার প্রদানের অনুরোধ করা হয়। বেশিরভাগ অনুরোধে দ্রুতই সাড়া পাওয়া যায়।
সিওয়াইবির কেন্দ্রীয় সভাপতি পলাশ মাহমুদ জানান, করোনায় আমাদের মোট চারটি প্রোগ্রাম চলছে। তার মধ্যে ‘করোনায় উপহার’ একটি। এছাড়া ‘করোনায় স্বেচ্ছাসেবী’ টিমে প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী ৫৪টি জেলায় কাজ করছে। ‘করোনায় ইফতারি উপহার’ নামে আরেকটি প্রোগ্রাম চলছে দেশজুড়ে। কয়েকটি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী স্বল্পমেয়াদে বৃত্তি প্রদান প্রোগ্রাম চলছে। করোনায় উপহার প্রোগ্রামটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের যেমন উপহার দেয়া হচ্ছে তেমনি এটি দেখার পর কোথাও কোথাও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও শিক্ষার্থীদের সহায়তার উদ্যোগ নিয়েছে। যেমন, জাককানইবিতে শিক্ষকরা ২৩০ জন শিক্ষার্থীকে সহায়তার উদ্যোগ নিয়েছে। জাবিতে প্রতিটি বিভাগ থেকে নোটিশ দেয়া হয়েছে, বিভাগের কোনো শিক্ষার্থী সমস্যায় পড়লে বিভাগ থেকে সহায়তা করা হবে।
‘করোনায় উপহার’ চালু করার পর ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা বড় পরিসরে এগিয়ে এসেছে। তারা সিসিএস এর মাধ্যমে ইবির ১০০ শিক্ষার্থীকে আগামী তিন মাস ২ হাজার টাকা করে বৃত্তিমূলক সহায়তা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
Discussion about this post