নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত দেশের ২ হাজার ২৬০টি কলেজকে অনলাইন ক্লাস চালুর নির্দেশনা দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ। শনিবার (২ মে) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নভেল করোনাভাইরাসের কারণে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন সব কলেজকে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস নিতে আহ্বান জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে গত ৩০ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনলাইনে এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা সোয়া ৬টা পর্যন্ত এই সভা চলে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই সভার সিদ্ধান্তের আলোকে লকডাউন চলাকালীন শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে অধিভুক্ত প্রায় দুই হাজার ২৬০টি কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে বেশ কিছু নির্দেশনা দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ।
নির্দেশনাগুলো হচ্ছে:
১. যেসব কলেজের অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে তারা জরুরিভিত্তিতে অন-লাইন ক্লাস চালু করবে। যেসব কলেজ/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনলাইন ক্লাস সুবিধা নেই, তাদেরও দ্রুত এই সুবিধার আওতায় আসতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করা মোবাইল অ্যাপস কিংবা জুম সফটওয়্যার ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অন-লাইন ক্লাসে যুক্ত হওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে রাজশাহী কলেজসহ বেশ কয়েকটি কলেজ/প্রফেশনাল প্রতিষ্ঠান অন-লাইন ক্লাস শুরু করে দিয়েছে।
২. কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার আগে পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোয় কোনও সেশনজট ছিল না। সেই ধারাবাহিকতা বহাল রাখতে লকডাউন শেষে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নিজ নিজ ঘরে বসে পরীক্ষার যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে বলা হচ্ছে। এই দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠার পর আমরা যেন একের পর এক পরীক্ষা নিতে পারি তার সব প্রস্তুতি কলেজ ও শিক্ষার্থীদের থাকতে হবে। এক্ষেত্রে সেশনজট নিরসনে আগে যেমন আমরা ক্রাশ প্রোগ্রামে করে সফল হয়েছি। সেই রকম মেথড এখানেও অ্যাপ্লাই করতে হবে।
৩. শিক্ষার্থীদের মনে রাখা উচিত কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সিংহভাগ কারিকুলাম শিক্ষার্থীকে তার নিজ উদ্যোগে সম্পন্ন করতে হয়। এই মহামারি চলাকালীন শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে এবং নিজ নিজ বাড়িতে বসে কারিকুলাম অনুযায়ী পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হবে।
৪. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও অনলাইন কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। ছুটি দীর্ঘায়িত হলে নতুন করে সেশনজটে না পড়তে পরীক্ষা ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্যে শিক্ষকদের কাজ করে যেতে হবে।
৫. সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপরোক্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে বিশেষ সহযোগিতা কামনা করছি।
Discussion about this post