নিজস্ব প্রতিবেদক
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা বাধ্যতামূলক না করেই নির্দেশনা জারি করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই এ সংক্রান্ত চিঠি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পাঠানো হবে।
জানা যায়, গত ৩০ এপ্রিল অনলাইনে উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অংশগ্রহণে একটি ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে চলমান অচলাবস্থায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি নির্দেশনা তৈরির দায়িত্ব দেয়া হয় ইউজিসিকে। সে আলোকে একটি খসড়া নির্দেশনা তৈরি করেছে ইউজিসি। খসড়াটি ইউজিসি চেয়ারম্যান অনুমোদনের পর এ সপ্তাহেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে ইউজিসির সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান বলেন, ইউজিসির সম্মানিত সদস্যগণ একটি খসড়া নির্দেশনা তৈরি করে চেয়ারম্যান স্যারের কাছে পাঠিয়েছেন। চেয়ারম্যান স্যার নির্দেশনার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সেটি চিঠি আাকারে পাঠানো হবে।
নির্দেশনায় অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষার ক্ষেত্রে তিনটি পদ্ধতির কথা উল্লেখ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এর যে কোনটি অনুসরণের সুযোগ দিতে যাচ্ছে ইউজিসি।
এর মধ্যে একটি পদ্ধতি হলো— সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা অবলম্বন করে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস-পরীক্ষা দুটিই নেয়া যাবে। তবে বিজ্ঞান বিষয়ক প্রোগ্রামগুলোর ব্যবহারিক পরীক্ষা কোনোভাবেই অনলাইনে নেয়া যাবে না।
দ্বিতীয় পদ্ধতি হলো— বন্ধের মধ্যে পরীক্ষা না নিয়ে শুধু অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস সম্পন্ন করা। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় খুললে পরবর্তী সেমিস্টারের কোনো এক সময় পরীক্ষা নিয়ে নেওয়া। ওই সময় বড় পরিসরে পরীক্ষা নিতে প্রতিবন্ধকতা থাকলে এর আকার সীমিত করা যাবে।
আর তৃতীয় পদ্ধতি হলো— যেসব বিশ্ববিদ্যালয় করোনা পরিস্থিতির আগে ৭০ শতাংশ বা এর বেশি ক্লাস সম্পন্ন করেছে তারা এখন কোনো ক্লাস-পরীক্ষা না নিলেও চলবে। তারাও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় খুললে পরবর্তী সেমিস্টারে বাকি কার্যক্রম সমন্বয় করতে পারবে।
সে হিসাবে ইউজিসির দেয়া তিনটি পদ্ধতির মধ্যে দুইটিতেই অনলাইনে পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়নি। এছাড়া একটি পদ্ধতিতে ক্লাস বাধ্যতামূলক করা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে এ প্রসঙ্গে ইউজিসির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীসহ সবার কথা বিবেচনায় নিয়েই নির্দেশনার খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। বন্ধের মধ্যে সব করতে গেলে শিক্ষার্থীদের উপরও এক ধরনের বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে। বিশেষ করে পরীক্ষা নিতে গেলে বন্দী জীবনের ওপর আরেকটি বাড়তি চাপ যোগ হবে। আবার অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার না সুযোগ দিলে অনেক আগ্রহী বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থী বঞ্চিত হবে। তাই আমরা তিনটি অপশন দিচ্ছি। তারা তাদের সুযোগ-সুবিধা মতো এটি অনুসরণ করতে পারবে।
Discussion about this post