নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টার ফর এ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন সায়েন্সেস ভবনে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরীক্ষার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গত মঙ্গলবার (৫ মে) এই ল্যাবের উদ্বোধন করেন এবং এই মহতি কাজে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করছে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (ডুআ)।
কভিড-১৯ পরীক্ষার এই ল্যাব স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। করোনাভাইরাসসহ জাতীয় প্রয়োজনে অন্য যে কোনো ভাইরাস ও অণুজীব শনাক্ত করতে এবং সংশ্নিষ্ট টেস্টিং কিট উদ্ভাবনের জন্য বিশেষায়িত এ ল্যাবটি স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ জন্য অধ্যাপক ড. শরীফ আখতারুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যবিশিষ্ট টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির অন্য তিন সদস্য হলেন অধ্যাপক ড. এম এ মালেক, অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ ও অধ্যাপক শাহরিয়ার নবী। এই কমিটি বর্তমানে সরকারের গঠন করা জাতীয় কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাস রেসপন্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি, জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগ, প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ এবং অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের সংশ্নিষ্ট বিশেষজ্ঞরা এই কাজে সম্পৃক্ত হয়েছেন। কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. শরীফ আখতারুজ্জামান বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে স্যাম্পল পাঠালে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে স্যাম্পলের সংখ্যা ধাপে ধাপে বাড়াতে বলেছি। যে কোনো ল্যাবেই এ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. এম এ মালেক জানান, তারা এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। ল্যাব স্থাপন করতে তাদের সাত দিন লেগেছে। বায়োটেকনোলজি, বায়োকেমিস্ট্রি এবং মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের দু`জন করে শিক্ষক এখানে কাজ করছেন।
অধ্যাপক ড. শরীফ আখতারুজ্জামান জানান, অন্য ল্যাবরেটরির সঙ্গে এ ল্যাবের মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি বিভাগ এ কাজে সম্পৃক্ত। সংশ্নিষ্ট কাজে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন দক্ষ লোকেরাই এ কাজটি এখানে করবেন। তাই দক্ষতা ও আস্থার সঙ্গেই এখানে পরীক্ষার কাজ চলবে। তিনি বলেন, পরীক্ষার কাজে নিরাপত্তা তথা সেফটি প্রটোকলকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ভবনের টপ ফ্লোরে ল্যাবটি স্থাপন করা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণরূপে সংরক্ষিত ও বিচ্ছিন্ন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, করোনার এই দুর্যোগে মানবিক আবেদনে সাড়া দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও এগিয়ে এসেছে। ফার্মাসি, বায়োটেকনোলজিসহ চারটি বিভাগ এর আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি শুরু করেছে। চিকিৎসা অনুষদের সহায়তায় ৫০ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে টেলিমেডিসিন সেবা চালু করা হয়েছে। একটি হান্টিং নম্বরে ২৪ ঘণ্টা তাদের পরামর্শ মিলছে। ছুটির সময়ে ঘরবন্দি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দিতে কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের সাইকোলজিস্টরা অনলাইনে পরামর্শ সেবা দিচ্ছেন। বায়োমেডিকেল ফিজিক্স বিভাগের অধীনে নেগেটিভ প্রেসার ক্যানোপি তৈরির কাজ চলছে। মাস্কের সামনের বাতাস দূরে ঠেলে দিতে এই প্রক্রিয়া কাজ করে। একই সঙ্গে চলছে ভেন্টিলেটর তৈরির কাজও।
উপাচার্য বলেন, এসব উদ্যোগের পাশাপাশি এখন আমরা এগিয়ে এসেছি করোনা টেস্টের কাজে। চমৎকার এই ল্যাবরেটরিতে দুটি পিসিআর সেখানে একসঙ্গে কাজ করছে। প্রতিটি পিসিআরে প্রতিদিন ২০০ করে টেস্ট করা যাবে।
Discussion about this post