নিজস্ব প্রতিবেদক
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দায়বদ্ধতা থেকে বিজ্ঞানের ভয়কে জয় করে বিজ্ঞানমুখী প্রজন্ম গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই প্রতিবছর বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করে আসছে চট্টগ্রামের প্রথম ও পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল স্কুল সাউথ এশিয়ান স্কুল। এরই ধারাবাহিকতায় সাউথ এশিয়ান স্কুলে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো বিজ্ঞান মেলা ২০২২।
স্কুল অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত এই মেলায় ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা ব্যাপক আগ্রহ ও উদ্দিপনায় অংশগ্রহণ করে। সমবেত হন প্রচুর অভিভাবক ও দর্শনার্থী।প্রদর্শনীতে অংশ গ্রহণকরীরা তাদের বিজ্ঞান প্রকল্পগুলোর লক্ষ্য উদ্দেশ্য কলা কৌশল উপযোগিতা ও প্রয়োগসহ নানা বিষয়ে দর্শনার্থীদের সামনে তুলে ধরেন।
ক্ষুদে বিজ্ঞানিরা তাদের তৈরি নানা রকম প্রকল্প নিয়ে হাজির হয়েছিল। তাদের তৈরি বৈদ্যুতিক পাওয়ার প্ল্যান্ট, ইলেট্রনিক স্যানিটাইজার, ভূমিকম্প সংকেত যন্ত্র, ইলেকট্রিসিটি জেনারেটর উইথ রেইন ওয়াটার, ওয়াটার টানেল, থ্রিডি হলোগ্রাম দর্শকদের অবাক করে। বিজ্ঞান মেলার আয়োজন কিশোর তরুণ সম্প্রদায়কে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমূলক কাজে আগ্রহী এবং জাতীয় ভিত্তিতে বিজ্ঞানের জয়যাত্রায় এ প্রদর্শনী সুফল বয়ে আনছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব সৈয়দ লকিতুল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরণী সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার জনাব ফরিদুল আলম হোসাইনী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জনাব মো: নাজিম উদ্দীন আরো উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় সাবেক কাউন্সিলর জনাব আঞ্জুমান আরা বেগম, বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক জনাব মো: সালেহ উদ্দীন, একাডেমিক কোঅর্ডিনেটর এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক জনাব শামীমা নাসরিনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি বলেন বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি শিক্ষার বিবেচনায় আমরা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারিনি। বিভিন্ন কারণে বিজ্ঞান ও গণিত শিক্ষায় ছাত্ররা আগ্রহ হারাচ্ছে। ফলে বিজ্ঞানের ভবিষ্যৎ নিয়ে বাংলাদেশ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তাই সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়নে এখন থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বিজ্ঞানমনস্ক করে তুলতে পারলে তারা একদিন খ্যাতনামা বিজ্ঞানী হয়ে দেশের উন্নয়নে এগিয়ে আসবে।
সভাপতির বক্তব্যে প্রধান শিক্ষক বলেন, প্রযুক্তির ধারা অব্যাহত রাখতে এবং সরকারের রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে শিক্ষাক্ষেত্রে বিজ্ঞানও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়তে হবে। সেজন্য আমরা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে স্কুলে নিয়মিত এ মেলার আয়োজন করে চলেছি।জ্ঞান ও প্রযুক্তির এ প্রদর্শনী সংস্কারমুক্ত সৃষ্টির সুবাতাস বয়ে আনে। জাতীয় জীবনে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা মেলার আয়োজনকে শুধু সৃষ্টিশীল নয়, এ প্রজন্মের গবেষকদেরও তুলে নিয়ে আসে।
মেলায় প্রাথমিক বিভাগে প্রথম হয় আরাফ আল আমিন , প্রকল্প- সৌর বিদ্যুত, বায়ুকলের মাধ্যমে বিদ্যুত উৎপাদন, দ্বিতীয় হয় লাবিবা মজিদ,প্রকল্প- বিদ্যুৎ তৈরির পদ্ধতি, তৃতীয় হয় খালিদ বিন রাশেদ,অরিত্র সূত্রধর,. সিহামুল ইসলাম , প্রিতম দে , মো: হোসাইন খান নাসিফ, প্রকল্প- আগ্নেয়গিরি, ফিল্টার, বৈদ্যুতিক পাখা।
জুনিয়র বিভাগের ফল- ১ম স্থান ইয়ামিন (৬ষ্ঠ শ্রেণি)প্রকল্প- লাভা উদ্গীরন,২য় স্থান ফারিয়ান (৮ম শ্রেণি)প্রকল্প-পাওয়ার প্ল্যান্ট, ৩য় স্থান সায়মা (৭ম শ্রেণি) প্রকল্প-থ্রিডি হলোগ্রাম।
মাধ্যমিক বিভাগের ফল- ১ম স্থান ফারিয়া খান এর দল (দশম: বিজ্ঞান) প্রকল্প-জলবিদ্যুৎ, ২য় স্থান তাসিল আবরার এর দল (নবম: বিজ্ঞান)প্রকল্প- নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ, ৩য় স্থান আরহাম, জাওয়াদ,জাহাংগীর,তালহা,কাউসাইন,সাফিন (দশম: বিজ্ঞান)প্রকল্প- ওয়াটার টানেল।
মেলা শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির হাত থেকে উদ্ভাবকরা পুরস্কার এবং সনদপত্র গ্রহণ করেন।
Discussion about this post