শিক্ষার আলো ডেস্ক
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির জিইসি মোড়স্থ ক্যাম্পাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে ।
সমাজবিজ্ঞানী, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি পরিবারের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।
উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেন, বাঙালি জাতিসত্তা কয়েক হাজার বছরের।
বহু বর্ণের সমন্বয়ে এই জাতিসত্তা গড়ে উঠে। বাংলা ভাষাভাষি বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চেই বাঙালি প্রথম স্বাধীনতা অর্জন করে। ১৯০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের অবসানে পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হলে পূর্ব পাকিস্তান বা বাংলাদেশ যথার্থ অর্থে স্বাধীনতা পায়নি। পশ্চিম পাকিস্তানের নিবিড় ঔপনিবেশিক শাসনের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়। এই শোষণ ছিল তীব্র ও নিষ্ঠুর। পূর্ব পাকিস্তান বা বাংলাদেশের সম্পদেই পশ্চিম পাকিস্তান গড়ে উঠে। সেই সময় পাকিস্তানের প্রধান অর্থকরি ফসল ছিল পাট। পশ্চিম পাকিস্তানের আমদানি তার রপ্তানির চেয়ে অনেকগুণ বেশি ছিল। পূর্ব পাকিস্তানের আমদানি তার রপ্তানির চেয়ে অনেক কম ছিল। এই আমদানির উদ্বৃত্ত দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের শিল্প-কলকারখানা, কেন্দ্রীয় রাজধানীর বেসামরিক ব্যয় ও বিশাল সামরিক ব্যয় নির্বাহ করা হতো।
ড. সেন আরও বলেন, এই পরাধীন বাঙালিকে অর্থনৈতিক মুক্তি দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে ৬ দফা ঘোষণা করেন। তারই পথ ধরে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে সূচিত হয় মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন স্বাধীনতা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। তাই আগস্ট হলো বাংলার আকাশ-বাতাস ও প্রকৃতির অশ্রুসিক্ত হওয়ার মাস। পাকিস্তানপন্থি একদল দুর্বৃত্ত সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাংলাদেশকে করেছে কলঙ্কিত। এই কলঙ্ক অমোচনীয়। বিশ্ব-ইতিহাসে এই দুর্বৃত্তরা চিরকাল ঘৃণিত হয়ে থাকবে।
তিনি বঙ্গবন্ধুর আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস বর্ণনা করেন। তিনি ‘ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই আমাদের পরবর্তী সমস্ত সংগ্রাম’ উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু সুদীর্ঘ ২৩ বছর বাঙালির অধিকারের জন্য আন্দোলন করেছিলেন। এই আন্দোলন তিনি কোনো পর্যায়েই বিসর্জন দিতে রাজি হননি, এমনকি প্রধানমন্ত্রী পদের বিনিময়েও নয়। সে-কারণেই পাকিস্তানের শাসকচক্র তাঁকে এবং বাঙালিদের স্তব্ধ করার জন্য শেষ পর্যন্ত সামরিক অস্ত্রের ভাষাই প্রয়োগ করে ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ। নিরস্ত্র বাঙালির উপর নেমে আসে অস্ত্রের ঘৃণ্যতম আঘাত। নয় মাস নিঃশেষে প্রাণ বিলিয়ে দিয়ে, স্বাধীনতার বেদীমূলে ত্রিশ লক্ষ প্রাণ উৎসর্গ করেই বাঙালি এক মৃত্যুঞ্জয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জন করে তার হাজার বছরের ইতিহাসের প্রথম-প্রকৃত-স্বাধীনতা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী শামীম সুলতানা, রেজিস্ট্রার খুরশিদুর রহমান, কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শেখ মুহম্মদ ইব্রাহিম, প্রকৌশল ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. তৌফিক সাঈদ, ব্যবসা-শিক্ষা অনুষদের সহকারী ডিন এম. মঈনুল হক, স্থাপত্য বিভাগের চেয়ারম্যান স্থপতি সোহেল এম. শাকুর, গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইফতেখার মনির, ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান সাদাত জামান খান, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান টুটন চন্দ্র মল্লিক, আইন বিভাগের চেয়ারম্যান তানজিনা আলম চৌধুরী, অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ফারজানা ইয়াসমিন চৌধুরী, জনস্বাস্থ্য (পাবলিক হেলথ) বিভাগের চেয়ারম্যান মো. জাহেদুল ইসলাম, ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার দাশ ও প্রক্টর আহমদ রাজীব চৌধুরী।
Discussion about this post