৭ মার্চের ভাষণঃ ১০ মার্চ,২০১৭ মাননীয় প্রধান মন্ত্রী কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ৭মার্চ এর ভাষন নিয়ে এক সেমিনারে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ মূলত ২৩ মিনিটের ছিল,তবে যেটি রেকর্ড করা হয়েছিল সেটি ছিল ১৮-১৯ মিনিটের। মোট শব্দ : ১,১০৮টি দাবী : ৪ টি ইউনেস্কো র স্বীকৃতি : ৩০ অক্টোবর , ২০১৭ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি ইউনেসকোর মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড (এমওডব্লিউ) কর্মসূচির অধীনে আন্তর্জাতিক তালিকায় (ইন্টারন্যাশনালরেজিস্টার) মোট ৭৮টি দলিলকে মনোনয়ন দিয়েছে। এ তালিকায় ৪৮ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণটিকে স্থান দেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আন্তর্জাতিক দলিলে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে তালিকাভুক্ত ঐতিহ্যের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪২৭টিতে। সংবিধানে : ১৫০(২)। ৫ম তফসিল বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ এর ভাষণ ১২ টি ভাষায় অনুবাদ করা হয় ,তাজউদ্দীন আহমেদ অনুবাদ ও পরিমার্জনা করেন। . বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ এর ভাষণ কে ২৫০০ বছরের ইতিহাসে ৭ টি ভাষণ এর মধ্যে ৬ নং ভাষণ এর মর্যাদা দেওয়া হয় ” jacob F Filed এর লেখা “we shall fight on the beaches :the speeches that inspired history বইয়ের ২০১ পেইজে . ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস বলা হয কেন? গণহত্যার বৈশিষ্ট্য ১৯৪৮ সালে গৃহীত জাতিসংঘের কনভেনশন অন দ্য প্রিভেনশন অ্যান্ড পানিশমেন্ট অব দ্য ক্রাইম অব জেনোসাইডে গণহত্যার পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ আছে। ১। কোনো গোষ্ঠীর মানুষকে হত্যা, ২। তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে চরম ক্ষতিসাধন, ৩।জীবনমানের প্রতি আঘাত ও শারীরিক ক্ষতিসাধন, ৪।জন্মদান বাধাগ্রস্ত করা এবং ৫। শিশুদের অন্য গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া এই পাঁচটি উপাদানের কোনো একটি থাকলেই কোনো ঘটনা গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত হবে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তুরিন আফরোজ প্রথম আলোকে বলেন, শেষটি ছাড়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আর সব ধরনের অপরাধই সংঘটিত হয়েছে। তাই একে গণহত্যা না বলার কোনো কারণ নেই। এসব বৈশিষ্ট্য থাকার পর বাংলাদেশের গণহত্যা স্বীকৃতি না পাওয়ার কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনীহাকে দায়ী করেন আর্জেন্টিনার আইনজীবী এবং সে দেশের গণহত্যার বিচারের আন্দোলনের কর্মী ইরেন ভিক্টোরিয়া মাসামিনো। মুক্তিযোদ্ধা ও খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ============================== জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষনা শুনে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর যে সকল ব্যক্তি দেশের জন্য কাজ করেছেন তারাই মুক্তিযোদ্ধা। . মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য কিছু বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে সরকার। তন্মধ্যে একটি হলো মুক্তিযুদ্ধকালীন বয়স ১৩ বছর হতে হবে। . মোট খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা (৬৭৬+১) =৬৭৭ বীরশ্রেষ্ঠ = ৭ জন বীর উত্তম (৬৮+১) = ৬৯ (সর্বশেষ= ব্রিগেডিয়ার জামিল উদ্দীন) বীর বিক্রম = ১৭৫ বীর প্রতীক = ৪২৬ (মহিলা=২, নিখোজ= ৫৫। কিন্তু দেবদাস বিশ্বাস ওরফে খোকা বিশ্বাস বীর প্রতীক নামে ঝালকাঠির এক ব্যক্তিকে সনাক্ত করেন বিমল কান্তি দে। তাই বর্তমানে নিখোঁজ সংখ্যা হবে ৫৪) . মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত 68 জন। কিন্তু মোট বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্তের সংখ্যা 69 জন। 2010 সালে 75 এর অভ্যুত্থানের সময় বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হওয়া ব্রিগেডিয়ার জামিলকে বীর উত্তম খেতাব দেয়া হয়। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সোহরাওয়ার্দী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোজাফ্ফর আহমেদ কে বীর বিক্রম খেতাব দেয়া হয়। তাই মুক্তিযুদ্ধে 175 জন বীর বিক্রম খেতাব পেলেও মোট বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত 177 জন।পার্বত্য চট্টগ্রামে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত 2 জনসহ মোট বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত 177 জন। তবে মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত 175 জন। . নারী মুক্তিযোদ্ধা- ২ জন (২ জনই বীরপ্রতীক) (সেতারা বেগম ও তারামন বিবি) নারী মুক্তিযোদ্ধা- সেতারা বেগম, তারামন বিবি ও কাঁকন বিবি আদিবাসী নারী মুক্তিযোদ্ধা-কাঁকন বিবি কাঁকন বিবি- খাসিয়া কাঁকন বিবির আসল নাম- কাকাত হেনইঞ্চিতা সর্বকনিষ্ঠখেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা-শহীদুল ইসলাম চৌধুরী (মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর বয়স-১২ বছর) একমাত্র আদিবাসী/উপজাতি খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা- ইউ কে চিং (বীরবিক্রম) একমাত্র বিদেশি বীরপ্রতীক-ডব্লিউ এ এস ওডারল্যান্ড(অস্ট্রেলিয়া; জন্ম নেদারল্যান্ড)ওডারল্যান্ড মারা যান- ১৮ মে ২০০১ সালে! অপারেশন সার্চলাইট অপারেশন সার্চলাইট (ইংরেজি: Operation Searchlight) ১৯৭১সালে ২৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া পাকিস্তানী সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত পরিকল্পিত গণহত্যা, যার মধ্যমে তারা ১৯৭১ এর মার্চ ও এর পূর্ববর্তী সময়ে সংঘটিত বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দমন করতে চেয়েছিল।[৯] এই গণহত্যা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকদের আদেশে পরিচালিত,যা ১৯৭০ এর নভেম্বরে সংঘটিত অপারেশন ব্লিটজ্ এর পরবর্তি অণুষঙ্গ। অপারেশনটির আসল উদ্দেশ্য ছিল ২৬ মার্চ এর মধ্যে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) সব বড় বড় শহর দখল করে নেয়া এবং রাজনৈতিক ও সামরিক বিরোধীদের এক মাসের ভেতর নিশ্চিহ্ন করে দেয়া[১০]। বাঙালিরা তখন পাল্টা প্রতিরোধ সৃষ্টি করে,যা পাকিস্তানী পরিকল্পনাকারীদের ধারণার বাইরে ছিল[১১]। মে এর মাঝামাঝি সময়ে সকল বড় বড় শহরের পতন ঘটার মধ্যে দিয়ে অপারেশন সার্চলাইটের প্রধান অংশ শেষ হয়। এই সামরিক আক্রমণ ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে ত্বরান্বিত করে। এই গণহত্যা বাঙালিদের ক্রুদ্ধ করে তোলে যে কারণে পাকিস্তান সেনবাহিনীর বাঙ্গালি সেনাপতি ও সৈনিকেরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষিত হয় এবং বহু মানুষকে শরণার্থীরূপে ভারতে আশ্রয় নিতে হয়। এই ভয়াবহ গণহত্যা ১৯৭১ এর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটায় এবং বাঙালিরা দখলদারী পাকিস্তানী বাহিনীকে বিতারিত করার সংগ্রামে লিপ্ত হয় পরিণতিতে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ কমান্ড “মিত্র বাহিনী” এর কাছে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বিনাশর্তে আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয় — একনজরে অপারেশ সার্চলাইট : ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পরিকল্পিত গণহত্যাকে বলা হয় – অপারেশন সার্চলাইট (Operation Searchlight)। <$> অপারেশন সার্চলাইটের নেতৃত্ব দেন- জেনারেল টিক্কা খান। <$> অপারেশন সার্চলাইটের মূল পরিকল্পনাকারী- ১৪তম ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল খাদিম হুসাইন রাজা এবং মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি। <$> ঢাকার সৈন্যদের কমান্ডে ছিলেন- রাও ফরমান আলি এবং অন্য সব স্থানের সৈন্যদের কমান্ডে ছিলেন- জেনারেল খাদেম। <$> গণহত্যার খবর বহির্বিশ্বে পৌঁছে দেন রয়টার্সের সাংবাদিক – সাইমন ড্রিং। জাতীয় গণহত্যা দিবস’ ———————————————– <$> ‘জাতীয় গণহত্যা দিবস’- ২৫ মার্চ। <$> ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’- ৯ ডিসেম্বর। <$> ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পরিকল্পিত গণহত্যাকে বলা হয় – অপারেশন সার্চলাইট (Operation Searchlight)। <$> অপারেশন সার্চলাইটের নেতৃত্ব দেন- জেনারেল টিক্কা খান। <$> অপারেশন সার্চলাইটের মূল পরিকল্পনাকারী- ১৪তম ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল খাদিম হুসাইন রাজা এবং মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি। <$> ঢাকার সৈন্যদের কমান্ডে ছিলেন- রাও ফরমান আলি এবং অন্য সব স্থানের সৈন্যদের কমান্ডে ছিলেন- জেনারেল খাদেম। <$> ওই সময়ে পূর্ব পাকিস্তানে রয়টার্সের সাংবাদিক ছিলেন- সাইমন ড্রিং। <$> ২৫ মার্চ রাতের শেষ প্রহর তথা ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেন- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। <$> বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন- EPR-এর Wireless-এর মাধ্যমে। <$> বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণাটি অনুবাদ- “এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, আপনারা যেখানেই থাকুন, আপনাদের সর্বস্ব দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সর্বশেষ পাকিস্তানি সৈন্যটিকে উত্খাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ পর্যন্ত আপনাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক।” <$> ‘জাতীয় দিবস/স্বাধীনতা দিবস’- ২৬ মার্চ। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ছয় দফা উম্মে হাবিবা ফারজানা সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৩৭ তম বিসিএস। ছয় দফার প্রেক্ষাপট, ছয় দফা দাবি প্রণয়ন ও উত্থাপন এবং বাঙালি জাতির মুক্তির সনদঃ ছয় দফা দাবি হঠাৎ করে দাবি করা হয়নি। ১৯৫৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত গ্রান্ড ন্যাশনাল কনভেনশনে লিয়াকত আলী খানের মৌলিক আদর্শ কমিটির সুপারিশের যে বিকল্প রিপোর্টটি গ্রহন করা হয় সেখানে ছয় দফার অনুরূপ দাবি সন্নিবিষ্ট হয়েছিল। ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা কর্মসূচির ১৯ নম্বর দফাটিতে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবিটি সুস্পষ্টভাবে স্থান পেয়েছিল। লাহোর প্রস্তাবে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট অঞ্চলে দুইটি সার্বভৌম রাষ্ট্র সৃষ্টির দ্ব্যর্থহীন অঙ্গীকার ছিল।তা বাস্তবায়ন তো হয়ইনি, একই সাথে ছিল পূর্ব বাংলার জনগনকে রাজনৈতিক অধিকার, প্রশাসনে অংশগ্রহণ, সামরিক ক্ষেত্রে বঞ্চিত করা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চরম বঞ্চনা। ছয় দফার প্রেক্ষাপট মূলত এ সকল বঞ্চনা। রাজনৈতিক পটভূমিঃ ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে ভারতবর্ষে, মুসলমানদের রাষ্ট্র পাকিস্তান সৃষ্টি না হওয়ায় পূর্ব বাংলাকে কখনোই লাহোর প্রস্তাব ভিত্তিক স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দেয়া হয়নি। ২৩ মার্চ, ১৯৪০ লাহোরে শেরে বাংলা যে প্রস্তাব উল্লেখ করেছিলেন সেখানে বলা হয়েছিল একটি যুক্তরাষ্ট্র গঠন করা হবে। কিন্তু এপ্রিল,১৯৪৬ দিল্লীতে মুসলিমলীগের আইন পরিষদের সভায় মি জিন্নাহ লাহোর প্রস্তাবের যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা পরিবর্তন করে একটি অখণ্ড রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন।১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে নির্বাচন দেয়া হয়। মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে যুক্তফ্রন্ট ব্যাপক জয়লাভ করে সরকার গঠন করলেও পশ্চিমা সার্থান্বেষী মহলের চক্রান্তে ৩০ মে, ১৯৫৪, ৯২ক ধারা প্রয়োগ করে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করা হয়। ১৯৫৬ সালে পকিস্তানে প্রথম সংবিধান প্রণীত হলেও সেখানে পূর্ব বাংলাকে রাজনৈতিক অধিকার দেয়া হয়নি। ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইস্কান্দর মির্জা পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি করেন এবং জেনারেল আইয়ুব খানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করেন।আইয়ুব খান পূর্ব বাংলার রাজনীতিকদের মৌলিক অধিকার হরণ করে ১৯৫৯ সালে মৌলিক গণতন্ত্র নামক অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু করেন।এতে মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে ১৯৬০ ও ১৯৬৫ সালে নির্বাচনের নামে প্রহসন করেন।এর ফলে বাংলায় কোন জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি। এমনই বাস্তবতায় শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা দাবি উত্থাপন করে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য স্বায়ত্তশাসন দাবি করেন। প্রশাসনিক পটভূমিঃ পাকিস্তানের প্রশাসনিক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের প্রথম শ্রেণি থেকে শুরু করে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পর্যন্ত সকল স্তরে পূর্ব বাংলার অংশগ্রহণ ছিল খুব কম।পাকিস্তানি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হাসান আশকারী রিজভী একটি পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে দেখিয়েছেন, আইয়ুব আমলে মোট ৬২ জন মন্ত্রীর মধ্যে মাত্র ২২ জন ছিলেন বাঙালি। এমনকি সেই ২২ জনের মধ্যে কেউ কোন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন না। এ কারণেই শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফায় স্বায়ত্তশাসন দাবি করে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে সীমিত ক্ষমতা রেখে আঞ্চলিক সরকারের ক্ষমতা বৃদ্ধির দাবি করেন। অর্থনৈতিক পটভূমিঃ পরিকল্পিত উপায়ে পূর্ব বাংলাকে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বঞ্চিত করা হচ্ছিল। রাজধানী পশ্চিম পাকিস্তানে হওয়ায় ব্যাংক, বীমা, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান অফিস ছিল সেখানে।ফলে পূর্ব বাংলায় অর্জিত আয় স্বাভাবিকভাবে পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যেত। চাকরির ক্ষেত্রে পশ্চিম পাকিস্তানিদের সংখ্যাধিক্য থাকায় সমস্ত আয় মূলত তারাই ভোগ করতো। রপ্তানি বানিজ্যে পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত ৬০% আসে বাংলা থেকে। আয়ের ক্ষেত্রে পূর্ব বাংলার অবদান বেশি হলেও ভোগ ও উন্নয়ন হয়েছে পশ্চিম পাকিস্তানের।এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৯৬০-৬১ অর্থবছর থেকে ১৯৬৪-৬৫ অর্থবছর পর্যন্ত পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যয় হয়েছিল ২১৫০ কোটি টাকা, যেখানে পূর্ব বাংলার জন্য ব্যয় করা হয় ৯৭০ কোটি টাকা। শেখ মুজিব ছয় দফায় বাংলার জনগনের জন্য অর্থনৈতিক সাম্য প্রতিষ্ঠার দাবি করেন। শিক্ষাগত পটভূমিঃ আইয়ুব খান ক্ষমতা গ্রহন করে তার ক্ষমতা গ্রহনকে “অক্টোবর বিপ্লব” নামে অভিহিত করেন। সামরিক সরকার পূর্ব পাকিস্তানের হামিদুর রহমান কমিশনের রিপোর্টের মাধ্যমে শিক্ষা সংকোচনের চেষ্টা করলে ১৯৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তানে প্রবল ছাত্র বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এই বিক্ষোভ বস্তুত আইয়ুব বিরোধী বিক্ষোভ ছিল। ছাত্র সমাজ ১৯৬২ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর শিক্ষা দিবস পালন করে, সেদিন ছাত্রসমাজের উপর নেমে আসে দমননীতির স্টিম রোলার। বিক্ষোভ মিছিলের উপর সশস্ত্র বাহিনী গুলি চালালে সেদিন ওয়াজিলা, বাবুল, মুস্তাফিজুর শহীদ হন। ৬২-৬৩ শিক্ষাবর্ষে সর্বমোট ২৭ দিনের বেশি ক্লাস হয়নি। ১৯৬২ সালের মাঝামাঝি সময়ে আব্দুল মোনায়েম খান পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হয়ে আসেন। তিনি ড. ওসমান গনীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরভাইস চ্যান্সেলর নিযুক্ত করেন এবং আইয়ুব বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করার জন্য “জাতীয় ছাত্র ফেডারেশন” নামধারী এক গুন্ডা বাহিনী গঠন করান।সেই গুন্ডা বাহিনী ১৯৬৩ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।এই সকল অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য ছয় দফা খুব জরুরি ছিল। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণঃ ১৯৬৪ সালে ২৫ শে জানুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ পুনরুজ্জীবিত হয়। তখন অব্যাহত গতিতে দমননীতি চলছিল ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করা হয়। এর প্রতিবাদে ঐ সব পত্রিকায় শূন্য সম্পাদকীয় স্তম্ভ পরিবেশন করা হয়। এছাড়া “সংবাদপত্রের মুখ বন্ধ করা চলবে না”, “গলাটিপা প্রেস অর্ডিন্যান্স বাতিল কর”, “বাক স্বাধীনতা দিতে হবে”, ইত্যাদি শ্লোগান সংবাদপত্রে প্রচারিত হতে থাকে।পরে পত্রিকাগুলো রিট আবেদন করলে দীর্ঘ শুনানির পর মামলার পত্রিকাগুলির জয় হয়। এই ধরনের পীড়নকারী ঘটনাগুলো থেকে মুক্তির জন্য ছয় দফা ছিল অতি যৌক্তিক পদক্ষেপ। সামরিক পটভূমিঃ ছয় দফা উত্থাপনে সামরিক প্রেক্ষাপট ছিল গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তান রাষ্ট্রের সামরিক, নৌ এবং বিমানবাহিনীরর সদরদপ্তর ছিলো পশ্চিম পাকিস্তানে। জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীতে পূর্ব বাংলার অংশগ্রহণ ছিল অতি নগন্য।১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় সামরিকভাবে পূর্ব বাংলা ছিল অরক্ষিত। সম্ভাব্য ভারত আক্রমণ প্রতিহত করার মতো কোনো শক্তি পূর্বাঞ্চলে ছিলো না। এমনই বাস্তবতায় শেখ মুজিব ছয় দফায় পূর্ববাংলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আঞ্চলিক আধাসামরিক বাহিনী গঠনের দাবি উত্থাপন করেন। ছয় দফা দাবি প্রণয়ন ও উত্থাপন এবং এর প্রতিক্রিয়াঃ ১৯৬৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পাকিস্তান ভারতকে আক্রমণ করলে পাক-ভারত যুদ্ধ শুরু হয় এবং ১৭ দিন চলার পর ২৩ সেপ্টেম্বর যুদ্ধ বিরতি হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধানমন্ত্রী এলেক্সি কেসিগিনের মধ্যস্থতায় উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে পাকিস্তান-ভারত শীর্ষ বৈঠক শুরু হয় ১৯৬৬ সালের ৪ জানুয়ারি। ১০ জানুয়ারি একটি সমঝোতা চুক্তিতে সাক্ষর করেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। “তাসখন্দ চুক্তির” ফলশ্রুতিতে পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি “শত্রু সম্পত্তি” হিসেবে ঘোষিত হয়।১৯৬৫ সালের পাক ভারত যুদ্ধের প্রেক্ষিতে জারিকৃত জরুরি আইনের আওতায় শত্রু সম্পত্তি জারি করা হয়।এ চুক্তিতে ভারতের কাছে পাকিস্তানের স্বার্থ বিকিয়ে দেয়া হয়েছে এই অভিযোগে পশ্চিম পাকিস্তানে আইয়ুব খান সমালোচিত হন। এই চুক্তি নিয়ে পর্যালোচনা করার জন্য পশ্চিম পাকিস্তানের বিরোধী দলীয় রাজনীতিবিদরা ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে একটি জাতীয় সম্মেলন ডাকেন। ১৯৬৬ সালের ১৬ জানুয়ারি আওয়ামীলীগের ওয়াকিং কমিটির সভা শেষে শেখ মুজিব সংবাদিকদের বলেন,”আমরা তাসখন্দ ঘোষণা নিয়ে চিন্তিত নই। আমরা আমাদের কথা ভাবছি। আমরা চাই পূর্ব পাকিস্তানের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন। “ নিখিল পাকিস্তান আওয়ামীলীগের সভাপতি নসরুল্লাহ খান ঢাকায় এসে শেখ মুজিবুর রহমানকে এই সম্মেলনে যোগ দিতে বলেন। শেখ মুজিব সম্মেলনে নিজে অংশ না নিয়ে প্রতিনিধি পাঠানোর কথা ভাবলে, দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক মানিক মিয়া শেখ মুজিবকে বলেন,”মুজিবুর মিয়া, যদি যেতেই হয় আপনি যান আর আপনার মনে এতো কাল যে কথাগুলো জমা হয়েছে, সেগুলো লিখে নিয়ে যান। ওরা শুনুক আর না শুনুক এতে কাজ হবে।” অতঃপর শেখ মুজিব সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি যাবেন। লাহোরে গিয়ে কী কী বিষয় আলোভনা করবেন তার একটা বিষয়সূচি বা টকিং পয়েন্ট লিখে দেওয়ার জন্য শেখ মুজিব বাঙালি সিএসপি অফিসার রুহুল কুদ্দুসের সঙ্গে আলোচনা করেন।১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা মেনুফেস্ট এবং ১৯৬৪ সালের ৫ জুন উপস্থাপিত শেখ মুজিবের ১১ দফার ভিত্তিতে একটি বিষয়সূচি প্রণয়ন করেন। রুহুল কুদ্দুস আলোচনার জন্য ৭ দফা খসড়া তৈরি করে দেন। ৭ নং দফায় ছিল প্রদেশে নির্বাচিত গভর্নরের বিধান রাখতে হবে। আওয়ামীলীগ যেহেতু সংসদীয় গনতন্ত্রে বিশ্বাস করত তাই ৭ নং দফাটি বাদ দিয়ে দেয়া হয়। অতঃপর, পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামীলীগের সংগঠনিক সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোজাফফর আহমদ চৌধুরী, ড নুরুল ইসলাম ও রেহমান সোবহান ও ড খান সরোয়ার মোরশেদের সহোযোগিতায় পরিমার্জন করে ছয় দফায় আনা হয়।বাঙালি সিএসপি অফিসার রুহুল কুদ্দুস ইংরেজিতে খসড়াটি তৈরি করে দিয়েছিলেন। তখন ভারতের উপর দিয়ে পাকিস্তানের দুই অংশের বিমান চলাচল বন্ধ। শ্রীলংকা ঘুরে করাচিতে রওনা করেন ৬ জনের দল। দলে ছিলেন- ১। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ২। তাজউদ্দীন আহমদ, ৩। আব্দুল মালেক উকিল, ৪। আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ নূরুল ইসলাম চৌধুরী, ৫। এবিএম নূরুল ইসলাম এমএনএ এবং ৬। অধ্যাপক মোঃ ইউসুফ আলী। নেজামে ইসলাম প্রধান চৌধুরী মোহাম্মদ আলীর বাসভবনে ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ তারিখে নিখিল পাকিস্তানের বিরোধীদলের সমাবেশে শেখ মুজিব ছয়দফা উত্থাপন করার জন্য উপস্থিত হন। ছয় দফা দাবিঃ প্রস্তাব ১ঃ শাসনতান্ত্রিক কাঠামো ও রাষ্ট্রপদ্ধতিঃ দেশের শাসনতান্ত্রিক কাঠামো এমন হতে হবে যেখানে পাকিস্তান হবে একটি ফেডারেশনভিত্তিক রাষ্ট্রসংঘ এবং তার ভিত্তি হবে লাহোর প্রস্তাব। সরকার হবে পার্লামেন্টারি পদ্ধতির। সর্বজনীন ভোটে নির্বাচিত পার্লামেন্ট হবে সার্বভৌম। প্রস্তাব ২ঃ কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতাঃ কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা কেবলমাত্র দু’টি ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ থাকবে। যথা- দেশরক্ষা ও বৈদেশিক নীতি। অবশিষ্ট সকল বিষয়ে রাষ্ট্রগুলোর ক্ষমতা থাকবে নিরঙ্কুশ। প্রস্তাব ৩ঃ মুদ্রা ও অর্থ সম্পর্কীয় ক্ষমতাঃ মুদ্রার ব্যাপারে নিম্নলিখিত দু’টির যেকোন একটি প্রস্তার গ্রহন করা যেতে পারে। ১। সমগ্র দেশের জন্য দু’টি পৃথক অথচ অবাধ বিনিময়যোগ্য মুদ্রা চালু থাকবে। ২। সমগ্র দেশের জন্য কেবল একটি মুদ্রা চালু থাকতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে শাসনতন্ত্র ব্যবস্থা থাকতে হবে যে, পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে অর্থ পাচার বন্ধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তান পৃথক ব্যাংকিং রিজার্ভের ব্যবস্থা করতে হবে এবং পাকিস্তানের জন্য আর্থিক বা অর্থননৈতিক নীতি প্রবর্তন করতে হবে। প্রস্তাব ৪ঃ রাজস্ব, কর বা শুল্ক সম্বন্ধীয় ক্ষমতাঃ ফেডারেশনের অঙ্গ রাষ্ট্রগুলোর কর বা শুল্ক ধার্যের ব্যাপারে সার্বভৌম ক্ষমতা থাকবে। কেন্দ্রীয় সরকারের ধার্যের ক্ষমতা থাকবে না। তার প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহের জন্য অঙ্গ রাষ্ট্রের রাজস্বের একটি অংশ কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাপ্য হবে। অঙ্গ রাষ্ট্রগুলোর সকল করের শতকরা একই হারে আদায়ীকৃত অংশ দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল গঠিত হবে। প্রস্তাব ৫ঃ বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক ক্ষমতাঃ ১। ফেডারেশনভুক্ত প্রতিটি রাষ্ট্রের বহিঃবানিজ্যকে পৃথক হিসাব করতে হবে। ২। বহিঃবানিজ্যের মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা অঙ্গ রাষ্ট্রগুলোর এখতিয়ারাধীন থাকবে। ৩। কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা সমান হারে বা সর্বসম্মত কোন হারে অঙ্গ রাষ্ট্র মিটাবে। ৪। অঙ্গ রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে দেশজ দ্রব্যাদির চলাচলের ক্ষেত্রে শুল্ক বা কর জাতীয় কোন বাধা নিষেধ থাকবে না। ৫। শাসনতন্ত্রে অঙ্গরাষ্ট্রগুলোকে বিদেশে নিজ নিজ বানিজ্য প্রতিনিধি প্রেরণ ও স্ব-স্বার্থে বানিজ্যকে চুক্তি সম্পাদনের ক্ষমতা দিতে হবে। প্রস্তাব ৬ঃ আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষমতাঃ আঞ্চলিক সংহতি ও শাসনতন্ত্র রক্ষার জন্য শাসনতন্ত্রে অঙ্গ রাষ্ট্রগুলোকে স্বীয় কর্তৃত্বাধীন আধা সামরিক বা আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠন ও রাখার ক্ষমতা দিতে হবে। ৫ ফেব্রুয়ারি মুসলিমলীগের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আফজালের সভাপতিত্বে সম্মেলন শুরু হয়। সাবজেক্ট কমিটির সভায় শেখ মুজিব ছয় দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। উপস্থিত অন্যান্য সবার আপত্তির মুখে মুজিবের প্রস্তাব সম্মেলনের এজেন্ডায় রাখা হলো না। শেখ মুজিব ক্ষুব্ধ হয়ে সম্মেলন থেকে ওয়াকআউট করলেন। পরে সংবাদিকদের কাছে তিনি ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন। এই প্রেক্ষাপটে লাহোরে সম্মেলনটি ব্যর্থ হয়ে যায়। ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৬ শেখ মুজিব ঢাকা ফিরে আসেন এবং বিস্তারিত ব্যাখ্যা সহ ছয় দফা পেশ করেন। ২০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৬ আব্দুল মালেক উকিলার সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে অনুষ্ঠিত দলীয় সভায় ছয় দফা অনুমোদন করান। ছয় দফা নিয়ে একটি চুড়ান্ত ফয়সালার উদ্দেশ্যে শেখ মুজিব ১৮-২০ মার্চ, ১৯৬৬ ঢাকায় হোটেল ইডেন প্রাঙ্গণে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামীলীগের কাউন্সিল সভা ডাকেন। সভাপতি মাওলানা আব্দুল রশিদ তর্কবাগীশের অনুপস্থিতিতে সভায় সভাপতিত্ব করেন সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। এভাবে কাউন্সিল সভায় ছয় দফা অনুমোদন করা হয়। বিসিএস প্রিলি প্রস্তুতি ——————————– মুক্তিযুদ্ধ থেকে প্রশ্ন আসবেই তাই গুরুত্ব দিন ——————————————————- ১.যতকাল রবে পদ্মা, যমুনা মেঘনা,গৌরি বহমান ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান’’ পঙক্তিটির কার ? – অন্নদাশ শংকর রায় . ২.৯অক্টোবর ২০১৫ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মোমের প্রতিমূর্তি স্থাপন করা হয় কোথায় – কলকাতার ‘মাদার ওয়াক্স মিউজিয়ামে ‘ . ৩. যুক্তফন্টের মন্ত্রিসভায় বঙ্গবন্ধু কোন মন্ত্রী ছিলেন ? – কৃষি ও সমবায় . ৪.আগর তলা মামলায় বঙ্গবন্ধুর আইনজীবী কে ছিলেন ? -টমাস উইলিয়াম এমপি (যুক্তরাজ্য বাঙালি প্রবাসী কর্তৃক প্রেরিত) তবেেএই মামলায় ডিফেন্স টিমের নেতৃত্বদেন আইনজীবী আবদুস সালাম । . ৫.মুক্তিযুদ্ধ কোষ গ্রন্থটি কে সম্পাদনা করেন? – ড. মুনতাসির মামুন । . ৬.স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের সংবিধানে কবে সংযোজন করা হয় ? – পঞ্চদশ সংশোধনীতে, গেজেট ৩জুলাই ২০১১) —————————————————————— ৭ .মুজিবনগর সরকার / বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার ————————————————- গঠিত হয় >> ১০ এপ্রিল ,১৯৭১ শপথ >> ১৭ এপ্রিল , ১৯৭১ সদর দপ্তর ছিল > কলকাতার ৮ং থিয়েটার রোড মোট মন্ত্রণালয় >> ১২টি রাষ্ট্রপতি >> শেখ মুজিবুর রহমান উপরাষ্ট্রপতি >> সৈয়দ নজরুল ইসলাম ( বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি এবং পদাধিকারবলে সশস্ত্র বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন । প্রধানমন্ত্রী >> তাজউদ্দিন আহমেদ অর্থ মন্ত্রী >> এম. মনসুর আলী স্বরাষ্ট্র , ত্রাণ ও পুর্নবাসন , কৃষিমন্ত্রী > এ, এইচ কামরুজ্জামান পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী >> খন্দকার মোশতাক আহমেদ প্রধান সেনাপতি >> কর্নেল (অব) এম,এ, জি ওসমানী চিফ অব স্টাফ >> লে, কর্নেল (অব) আব্দুর রব ডেপুটি চিফ অব স্টাফ >> গ্রুপ ক্যাপ্টেন েএ.কে খন্দকার . ———————————————————— ———————————————————————- ৮. স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের জনপ্রিয় কিছু অনুষ্ঠান _____________________ ● চরমপত্র – (রম্যকথিকা ) পরিকল্পনা=আবদুল মান্নান, কথক= এম আর আখতার মুকুল ● ইসলামের দৃষ্টিতে ( ধর্মীয় কথিকা ) – কথক= সৈয়দ আলি আহসান ● জল্লাদের দরবার – জীবন্তিকা (নাটিকা), লেখক= কল্যাণ মিত্র, ভয়েস= রাজু আহমেদ এবং নারায়ণ ঘোষ । ● বিশ্বজনমত সংবাদ ভিত্তিক কথিকা – কথক= সাদেকীন ● পিন্ডির প্রলাপ (রম্যকথিকা) – কথক= আবু তোয়াব খান ● দর্পণ – ( কথিকা) – কথক= আশরাফুল আলম ● প্রতিধ্বনী -( কথিকা ) – কথক= শহীদুল ইসলাম ● কাঠগড়ার আসামী – ( কথিকা) – কথক= মুস্তাফিজুর রহমান ৯.ঊনসত্তরের গণঅভ্যূত্থান ——————————————— প্রথম শহীদ >> আসাদ (ঢা.বি) ২০জানুয়ারী ২য় শহীদ >> মতিউর (স্কুল ছাত্র) ২৪জানু ৩য় শহীদ >> সার্জেন্ট জহুরুল হক (১৫ ফেব্রু) ৪র্থ শহীদ >> ড. শামসুচ্ছজোহা ১৮ ফেব্রু ——————————————— ৯. বীর শ্রেষ্টদের মধ্যে ১ম শহীদ >> মুন্সী আব্দুর রউফ . ১০. ৭মার্চের মুল ব্যক্তব্যের বিষয় কয়টি ছিল ? – ৪টি। ১.চলমান সামরিক আইন প্রত্যাহার , সৈন্যদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া, ৩. গণহত্যার তদন্ত করা ৪. নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা । —————————————————————- কিছু দফা ———– ৪২ দফা >> আওয়ামী মুসলিম লীগের (১ম দফা > বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে স্বাকৃতি , প্রাদেশিক শাসন ) ৬ দফা (বাঙালির মুক্তির সনদ)>> আওয়ামী লীগের (>> ১ম দফা >. প্রাদেশিক শাসন , ১৯৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের ইশতেহার ৩৫দফা >> আওয়ামী লাীগের > এই দফার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেন । ২১ দফা >> যুক্তফন্টের ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের ইশতেহার>>> ১ম দফা > বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসিবে প্রতিষ্ঠা করা ) ১১ দফা >> ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের >> এর ভিত্তিতেই ‘৬৯ এর গণঅভ্যত্থান শুরু হয় বিসিএসের জন্য ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠর তথ্যাবলী ১) ফরিদপুরের ১ নাম্বার নায়েক রউফ EPR-এ কাজ করার সময় রাঙ্গামাটিতে মারা যান। . নাম:ল্যান্স নায়েক মুন্সি আবদুর রউফ . জন্ম:ফরিদপুর . কর্মস্থল : EPR . পদবী: ল্যান্স নায়েক . সেক্টর: ১ নং . সমাধি: রাঙ্গামাটি . ২) ২ টাকার বাদাম নিয়ে সিপাহী কামাল প্রথমে ভোলা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যায়। . নাম: সিপাহী মোস্তফা কামাল . জন্ম: ভোলা . কর্মস্থল : সেনাবাহিনী . পদবী: সিপাহী . সেক্টর: ২ নং . সমাধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া . [ প্রথমে= তিনি বীরশ্রেষ্ঠদের মধ্যে প্রথমে শহীদ হন] তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধো বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ১৮ এপ্রিল, ১৯৭১ . ৩) মতিউর রহমান নরসিংদীতে ফাইট করে পাকিস্তান মারা যান। . নাম: ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান . জন্ম: নরসিংদী . কর্মস্থল : বিমান বাহিনী . পদবী: লেফটেন্যান্ট . সেক্টর: . সমাধি: প্রথমে পাকিস্তান, তারপর দেহবাশেষ মিরপুর বুদ্ধিজীবী গোরস্থানে। . ৪) EPR নূরকে ৮ টা রকেট ল্যান্সার দিয়ে নড়াইল থেকে যশোরে পাঠাল। . নাম: ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ . জন্ম: নড়াইল . কর্মস্থল :EPR . পদবী: ল্যান্স নায়েক . সেক্টর: ৮ নং . সমাধি: যশোর . ৫) সপ্তাহের ৭ দিনই মহিউদ্দিন ক্লাসের ক্যাপ্টেন থাকায় সর্বশেষ বরিশাল স্কুল থেকে তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা স্কুলে পাঠানো হয়েছে। . নাম: ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর . জন্ম: বরিশাল . কর্মস্থল : সেনাবাহিনী . পদবী: ক্যাপ্টেন . সেক্টর: ৭ নং . সমাধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ [সর্বশেষ>> বীরশ্রেষ্ঠদের মধ্যে সর্বশেষ শহীদ] . ৬) নোয়াখালীর বড় ভাই আমিন নৌবাহিনীর পরীক্ষায় ১০ স্কোর না পাওয়ায় তাকে খুলনা ট্রান্সফার করা হলো। . নাম: স্কোয়াড্রন লিডার রুহুল আমিন . জন্ম: নোয়াখালী . কর্মস্থল : নৌবাহিনী . পদবী: স্কোয়াড্রন ইঞ্জিনিয়ার . সেক্টর: ১০ নং . সমাধি: খুলনা রূপসা নদীর তীরে। তার কবর নেই। তাঁর পুড়ে যাওয়া মৃত দেহ ভেসে দেওয়া হয়েছিল। .. ৭) ছোট সাহেব সিপাহী হামিদুর রহমান ৪ জন সেনাবাহিনীর সাথে ঝিনাইদহে যুদ্ধ করে প্রথমে ত্রিপুরা তারপর মিরপুর আসল। নাম: সিপাহী হামিদুর রহমান . জন্ম: ঝিনাইদহ . কর্মস্থল : সেনাবাহিনী . পদবী: সিপাহী . সেক্টর: ৪ নং . সমাধি: প্রথমে ভারতের ত্রিপুরা,তারপর মিরপুর বুদ্ধিজীবী গোরস্থানে। [ ছোট ভাই>> বীরশ্রেষ্ঠদের মধ্যে তিনি সবার ছোট] ৭১ নিয়ে যত সাহিত্য ১.একাত্তরের দিনগুলি : জাহানারা ইমাম ২.একাত্তরের ডায়েরী : সুফিয়া কামাল ৩.একাত্তরের ঢাকা : সেলিনা হোসেন ৪.একাত্তরের নিশান : রাবেয়া খাতুন ৫.একাত্তরের বর্ণমালা : এম আর আখতার মুকুল ৬.একাত্তরের কথামালা : বেগম নুরজাহান ৭.একাত্তরের সাহিত্য : বশির আল হেলাল ৮.একাত্তরের বিজয়গাঁথা : মেজর রফিকুল ইসলাম ৯.একাত্তরের যীশু : শাহরিয়ার কবির ১০.একাত্তরঃকরতলে ছিন্নমাথা : হাসান আজিজুল হক ১১.একাত্তরের রনাঙ্গন : শামসুল হুদা চৌধুরী ১২.একাত্তরের গণহত্যা : বশির আল হেলাল ১৩.একাত্তরের অগ্নিকন্যা : তুষার আব্দুল্লাহ ১৪.একাত্তরের স্মৃতিময় দিনগুলি : অধ্যাপিকা হোসনে আরা আজাদ ১৫.একাত্তরের চিঠি (পত্র সংকলন) : সংকলনে প্রথম আলো ও গ্রামীণফোন ১৬.একাত্তরের পথের ধারে : শাহরিয়ার কবির ১৭.একাত্তর উপাখ্যান : সাইদ হাসান দারা ১৮.একাত্তরের নারী : মালেকা বেগম ১৯.একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা : আজাদুর রহমান চন্দন ২০.একাত্তরের যুদ্ধশিশু : সাজিদ হোসেন ২১.একাত্তরের স্মৃতি : বাসন্তী গুহঠাকুরতা ২২.একাত্তরের স্মৃতিচারণ : আহমেদ রেজা ২৩.একাত্তরের নয়মাস : রাবেয়া খাতুন ২৪.একাত্তরের নয়মাস : মোঃ আনোয়ারুল কাদির ২৫.একাত্তরের গণহত্যা ও নারী নির্যাতন : আসাদুজ্জামান আসাদ ২৬.একাত্তরের বধ্যভূমি ও গণকবর : সুকুমার বিশ্বাস ২৭.একাত্তরঃ নির্যাতনের কড়চা : আতোয়ার রহমান ২৮. একাত্তরের দুঃসহ স্মৃতি : শাহরিয়ার কবির ২৯.একাত্তরের গণহত্যা, নির্যাতন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার : শাহরিয়ার কবির ৩০.একাত্তরের ঘাতক ও দালালদের বিচার : মোস্তাক হোসেন। মুক্তিযুদ্ধের ১১ সেক্টর সেক্টর মহান মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গন (সেক্টর) ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার সামরিক কৌশল হিসেবে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সমগ্র ভৌগোলিক এলাকাকে ১১টি সেক্টর বা রণাঙ্গনে ভাগ করা হয়। প্রতি সেক্টরে একজন সেক্টর কমান্ডার (অধিনায়ক) নিয়োগ করা হয়। যুদ্ধ পরিচালনার সুবিধার জন্য প্রতিটি সেক্টরকে কয়েকটি সাব-সেক্টরে বিভক্ত করা হয় এবং প্রতিটি সাব-সেক্টরে একজন করে কমান্ডার নিয়োজিত হন। সেক্টর নিয়ে বিস্তারিত দেওয়া আলোচনা করা হল- ১নং সেক্টর চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা এবং নোয়াখালি জেলার মুহুরী নদীর পূর্বাংশের সমগ্র এলাকা নিয়ে গঠিত। এ সেক্টরের হেডকোয়ার্টার ছিল হরিনাতে। সেক্টর প্রধান ছিলেন প্রথমে মেজর জিয়াউর রহমান এবং পরে মেজর রফিকুল ইসলাম। এই সেক্টরের পাঁচটি সাব-সেক্টর (কমান্ডারদের নামসহ) হচ্ছে: ঋষিমুখ (ক্যাপ্টেন শামসুল ইসলাম); শ্রীনগর (ক্যাপ্টেন মতিউর রহমান এবং পরে ক্যাপ্টেন মাহফুজুর রহমান); মনুঘাট (ক্যাপ্টেন মাহফুজুর রহমান); তবলছড়ি (সুবেদার আলী হোসেন); এবং ডিমাগিরী (জনৈক সুবেদার)। এই সেক্টরে প্রায় দশ হাজার মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধ করেন। এদের মধ্যে ছিলেন ই.পি.আর, পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর প্রায় দুই হাজার নিয়মিত সৈন্য এবং গণবাহিনীর সংখ্যা ছিল প্রায় আট হাজার। এই বাহিনীর গেরিলাদের ১৩৭টি গ্রুপে দেশের অভ্যন্তরে পাঠানো হয়। ২ নং সেক্টর ঢাকা, কুমিল্লা, ফরিদপুর এবং নোয়াখালি জেলার অংশ নিয়ে গঠিত। এ সেক্টরের বাহিনী গঠিত হয় ৪- ইস্টবেঙ্গল এবং কুমিল্লা ও নোয়াখালির ইপিআর বাহিনী নিয়ে। আগরতলার ২০ মাইল দক্ষিণে মেলাঘরে ছিল এ সেক্টরের সদরদপ্তর। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন প্রথমে মেজর খালেদ মোশাররফ এবং পরে মেজর এ.টি.এম হায়দার। এই সেক্টরের অধীনে প্রায় ৩৫ হাজারের মতো গেরিলা যুদ্ধ করেছে। নিয়মিত বাহিনীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৬ হাজার। এই সেক্টরের ছয়টি সাব-সেক্টর (কমান্ডারদের নামসহ) হচ্ছে: গঙ্গাসাগর, আখাউড়া ও কসবা (মাহবুব এবং পরে লেফটেন্যান্ট ফারুক ও লেফটেন্যান্ট হুমায়ুন কবীর); মন্দভাব (ক্যাপ্টেন গাফফার); শালদানদী (আবদুস সালেক চৌধুরী); মতিনগর (লেফটেন্যান্ট দিদারুল আলম); নির্ভয়পুর (ক্যাপ্টেন আকবর এবং পরে লেফটেন্যান্ট মাহ্বুব); এবং রাজনগর (ক্যাপ্টেন জাফর ইমাম এবং পরে ক্যাপ্টেন শহীদ ও লেফটেন্যান্ট ইমামুজ্জামান)। এই সেক্টরের বাহিনীর অভিযানের ফলে কুমিল্লা ও ফেনীর মধ্যবর্তী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে পাক-বাহিনী সম্পূর্ণ বিতাড়িত হয় এবং মুক্তিযুদ্ধের সামগ্রিককালে এই এলাকা মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকারে থাকে। এই সেক্টরের বাহিনীর অভিযানের অন্যতম প্রধান সাফল্য হলো বেলোনিয়া সূচিবুূ্যহ প্রতিরক্ষা। ১ নং ও ২ নং সেক্টরের বাহিনীর যৌথ অভিযানের ফলে ২১ জুন পর্যন্ত বেলোনিয়া সূচিব্যুহের প্রবেশপথ সম্পূর্ণ মুক্ত ছিল। ২ নম্বর সেক্টরের কয়েকটি নিয়মিত কোম্পানি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অভিযান পরিচালনা করে। এই কোম্পানিগুলো ছিল সুবেদার লুৎফর রহমানের অধীনে বেগমগঞ্জ এলাকায় অভিযানরত নোয়াখালী কোম্পানি, সুবেদার জহিরুল আলম খানের অধীনে চাঁদপুর মতলব এলাকায় অভিযানরত চাঁদপুর কোম্পানি, ক্যাপ্টেন আবদুল হালিম চৌধুরীর অধীনে ঢাকার মানিকগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ এলাকায় অভিযানরত এক বিশাল বাহিনী, এবং ক্যাপ্টেন শওকতের অধীনে ফরিদপুরে অভিযানরত এক বাহিনী। শহরাঞ্চলের গেরিলারা ঢাকা শহরে কয়েকটি সফল অভিযান পরিচালনা করে। ৫ নং সেক্টর সিলেট জেলার দুর্গাপুর থেকে ডাউকি (তামাবিল) এবং জেলার পূর্বসীমা পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা নিয়ে গঠিত। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর মীর শওকত আলী। হেড কোয়ার্টার ছিল বাঁশতলাতে। আটশত নিয়মিত সৈন্য এবং পাঁচ হাজার গেরিলা সৈন্য সমন্বয়ে এই সেক্টর গঠিত হয়। সুনামগঞ্জ ও ছাতকের অধিকাংশ জলাভূমি ছিল এই সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত। এই সেক্টরের ছয়টি সাব-সেক্টর (কমান্ডারদের নামসহ) হচ্ছে: মুক্তাপুর (সুবেদার নাজির হোসেন এবং সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ফারুক); ডাউকি (সুবেদার মেজর বি.আর চৌধুরী); শেলা (ক্যাপ্টেন হেলাল; সহযোগী কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মাহবুবর রহমান এবং লেফটেন্যান্ট আবদুর রউফ); ভোলাগঞ্জ (লেফটেন্যান্ট তাহেরউদ্দিন আখুঞ্জী; সহযোগী কমান্ডার লেফটেন্যান্ট এস.এম খালেদ); বালাট (সুবেদার গনি এবং পরে ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন ও এনামুল হক চৌধুরী); এবং বড়ছড়া (ক্যাপ্টেন মুসলিম উদ্দিন)। এই সেক্টরের বাহিনী সিলেট, তামাবিল ও সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে বেশ কিছুসংখ্যক সেতু বিধ্বস্ত করে। এই সেক্টরের সর্বাধিক সফল অপারেশন ছিল ছাতক আক্রমণ। ৬ নং সেক্টর সমগ্র রংপুর জেলা এবং দিনাজপুর জেলার ঠাকুরগাঁও মহকুমা নিয়ে গঠিত। প্রধানত রংপুর ও দিনাজপুরের ইপিআর বাহিনী নিয়ে এই সেক্টর গঠিত হয়। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন উইং কমান্ডার এম খাদেমুল বাশার। সেক্টরের হেডকোয়ার্টার ছিল পাটগ্রামের নিকটবর্তী বুড়ীমারিতে। এটিই ছিল একমাত্র সেক্টর যার হেড কোয়ার্টার ছিল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। সেক্টরের সৈন্যসংখ্যা ছিল ৭০০ এবং ডিসেম্বর পর্যন্ত সৈন্য সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১১ হাজার। এদের মধ্যে ছিল ২০০০ নিয়মিত সৈন্য এবং ৯০০০ গণবাহিনী। এই সেক্টরের পাঁচটি সাব-সেক্টর (কমান্ডারদের নামসহ) হচ্ছে: ভজনপুর (ক্যাপ্টেন নজরুল এবং পরে স্কোয়াড্রন লীডার সদরউদ্দিন ও ক্যাপ্টেন শাহরিয়ার); পাটগ্রাম (প্রথমে কয়েকজন ই.পি.আর জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার কমান্ড করেন। পরে ক্যাপ্টেন মতিউর রহমান এই সাব-সেক্টরের দায়িত্ব নেন); সাহেবগঞ্জ (ক্যাপ্টেন নওয়াজেশ উদ্দিন); মোগলহাট (ক্যাপ্টেন দেলওয়ার); এবং চিলাহাটি (ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট ইকবাল)। এই সেক্টরের বাহিনী রংপুর জেলার উত্তরাংশ নিজেদের দখলে রাখে। ৭ নং সেক্টর রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া এবং দিনাজপুর জেলার দক্ষিণাংশ নিয়ে গঠিত হয়। ইপিআর সৈন্যদের নিয়ে এই সেক্টর গঠিত হয়। এই বাহিনী ক্যাপ্টেন গিয়াস ও ক্যাপ্টেন রশিদের নেতৃত্বে রাজশাহীতে প্রাথমিক অভিযান পরিচালনা করে। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর নাজমুল হক এবং পরে সুবেদার মেজর এ. রব ও মেজর কাজী নূরুজ্জামান। এই সেক্টরের হেডকোয়ার্টার ছিল বালুরঘাটের নিকটবর্তী তরঙ্গপুরে। ২৫০০ নিয়মিত সৈন্য ও ১২৫০০ গেরিলা সৈন্য সমন্বয়ে প্রায় ১৫ হাজার মুক্তিযোদ্ধা এই সেক্টরে যুদ্ধ করে। এই সেক্টরের আটটি সাব-সেক্টর (কমান্ডারদের নামসহ) হচ্ছে: মালন (প্রথমে কয়েকজন জুনিয়র অফিসার এবং পরে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর); তপন (মেজর নজমুল হক এবং পরে কয়েকজন জুনিয়র ই.পি.আর অফিসার); মেহেদীপুর (সুবেদার ইলিয়াস এবং পরে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর); হামজাপুর (ক্যাপ্টেন ইদ্রিস); আঙ্গিনাবাদ (একজন গণবাহিনীর সদস্য); শেখপাড়া (ক্যাপ্টেন রশীদ); ঠোকরাবাড়ি (সুবেদার মোয়াজ্জেম); এবং লালগোলা (ক্যাপ্টেন গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী)। এই সেক্টরের বাহিনী জুন মাসে মহেশকান্দা ও পরাগপুর এবং আগস্ট মাসে মোহনপুর থানা আক্রমণ করে বিপুল সংখ্যক শত্রুসৈন্য বিধ্বস্ত করে। হামজাপুর সাব-সেক্টরের কমান্ডার ক্যাপ্টেন ইদ্রিস তাঁর বাহিনী নিয়ে কয়েকটি পাকিস্তানী বাহিনীর উপর অতর্কিত আক্রমণ চালান এবং পার্বতীপুরের নিকটে একটি ট্রেন বিধ্বস্ত করেন। ৮ নং সেক্টর এপ্রিল মাসে এই সেক্টরের অপারেশনাল এলাকা ছিল কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুর ও পটুয়াখালী জেলা। মে মাসের শেষে অপারেশন এলাকা সঙ্কুচিত করে কুষ্টিয়া, যশোর ও খুলনা জেলা, সাতক্ষীরা মহকুমা এবং ফরিদপুরের উত্তরাংশ নিয়ে এই সেক্টর পুনর্গঠিত হয়।সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর আবু ওসমান চৌধুরী এবং পরে মেজর এম.এ মঞ্জুর। এই সেক্টরের হেডকোয়ার্টার ছিল কল্যানীতে। সেক্টরের সৈন্যদের মধ্যে ৩০০০ ছিল নিয়মিত বাহিনী এবং ২৫০০০ গেরিলা সৈন্য। নিয়মিত বাহিনী কয়েকটি এলাকায় নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে এবং গেরিলা বাহিনী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কয়েকটি ঘাঁটি গড়ে তোলে। এই সেক্টরের সৈন্যরা যুদ্ধে এক অভিনব কৌশল অবলম্বন করে। নিয়মিত বাহিনী বাংলাদেশের ৭-৮ মাইল অভ্যন্তরভাগে ঢুকে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করে এবং এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করে যাতে পাকবাহিনী তাদের উপর আক্রমণ পরিচালনায় উদ্বুদ্ধ হয়। এই ব্যবস্থায় মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণকারী পাকবাহিনীর বহুসংখ্যক সৈন্য বিধ্বস্ত করে। এই সেক্টরের সাতটি সাব-সেক্টর (কমান্ডারদের নামসহ) হচ্ছে: বয়রা (ক্যাপ্টেন খোন্দকার নজমুল হুদা); হাকিমপুর (ক্যাপ্টেন শফিক উল্লাহ); ভোমরা (ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন এবং পরে ক্যাপ্টেন শাহাবুদ্দীন); লালবাজার (ক্যাপ্টেন এ.আর আযম চৌধুরী); বানপুর (ক্যাপ্টেন মুস্তাফিজুর রহমান); বেনাপোল (ক্যাপ্টেন আবদুল হালিম এবং পরে ক্যাপ্টেন তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী); শিকারপুর (ক্যাপ্টেন তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী এবং পরে লেফটেন্যান্ট জাহাঙ্গীর)। ৯ নং সেক্টর বরিশাল ও পটুয়াখালি জেলা এবং খুলনা ও ফরিদপুর জেলার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত। এই সেক্টরের হেড কোয়ার্টার ছিল বশিরহাটের নিকটবর্তী টাকিতে। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর এম.এ জলিল এবং পরে মেজর এম.এ মঞ্জুর ও মেজর জয়নাল আবেদীন। এই সেক্টরে প্রায় বিশ হাজার মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধ করে। এই সেক্টরকে টাকি, হিঙ্গলগঞ্জ ও শমসেরনগর তিনটি সাব-সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। এই সেক্টরে নিয়মিত বাহিনীও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আক্রমণ পরিচালনা করে। ক্যাপ্টেন শাহজাহান ওমরের নেতৃত্বে এক বিশাল গেরিলা বাহিনী বরিশালে অভিযান করে। পটুয়াখালীতে একটি স্থায়ী ঘাটি থেকে ক্যাপ্টেন মেহদী আলী ইমাম আক্রমণ পরিচালনা করেন। লেফটেন্যান্ট জিয়া সুন্দরবন এলাকায় এক বিশাল বাহিনী পরিচালনা করেন। ক্যাপ্টেন হুদা নিয়মিত বাহিনীর এক বিশাল অংশ নিয়ে সীমান্ত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। তিনি জুন মাসে শত্রুর উকশা সীমান্ত ঘাটি দখল করেন এবং বরাবর তা মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে থাকে। এই সেক্টরের বাহিনী দেভাতা ও শ্যামনগর থানা আক্রমণ করে দখল করে নেয়। নৌ-প্রহরার মাধ্যমে বরিশাল-পটুয়াখালীর নদী এলাকায় প্রাধান্য বিস্তার করা হয়। ডিসেম্বরে মাসে চূড়ান্ত আক্রমণের পূর্বে এই সেক্টরকে ৮ নং সেক্টরের সঙ্গে একীভূত করা হয় এবং এর দায়িত্ব অর্পিত হয় মেজর মনজুর উপর। ১০ নং সেক্টর নৌ-কমান্ডো বাহিনী নিয়ে এই সেক্টর গঠিত হয়। এই বাহিনী গঠনের উদ্যোক্তা ছিলেন ফ্রান্সে প্রশিক্ষণরত পাকিস্তান নৌবাহিনীর আট জন বাঙালি নৌ-কর্মকর্তা। এঁরা ছিলেন গাজী মোহাম্মদ রহমতউল্লাহ (চীফ পেটি অফিসার), সৈয়দ মোশাররফ হোসেন (পেটি অফিসার), আমিন উল্লাহ শেখ (পেটি অফিসার), আহসান উল্লাহ (এম.ই-১), এ.ডব্লিউ.চৌধুরী (আর.ও-১), বদিউল আলম (এম.ই-১), এ.আর মিয়া (ই.এন-১) এবং আবেদুর রহমান (স্টুয়ার্ড-১)। এই আটজন বাঙালি নাবিককে ভারতীয় নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় দিল্লির পার্শ্ববর্তী যমুনা নদীতে বিশেষ নৌ-প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এর পর পাকিস্তান নৌবাহিনীর কিছুসংখ্যক নৌ-সেনা এদের সঙ্গে এসে যোগ দেন। বিভিন্ন সেক্টর থেকে এমন ১৫০ জন ছাত্র ভলান্টিয়ারকে বাছাই করা হয় যারা দক্ষ সাতারু হিসেবে পরিচিত এবং তাদের প্রশিক্ষণের জন্য এই ক্যাম্পে পাঠানো হয়। তাদের বোমা নিক্ষেপ এবং জাহাজ ধ্বংসের জন্য লিম্পেট মাইন ব্যবহারের কৌশল শিক্ষা দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে এদের চারটি দল চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, দাউদকান্দি ও মংলা বন্দরে পাঠানো হয়। এদের দায়িত্ব ছিল উপকূলে নোঙ্গর করা জাহাজ ধ্বংস করা। পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে (১৪ আগস্ট) এই চারটি দল একযোগে আক্রমণ চালিয়ে বেশ কিছুসংখ্যক পাকিস্তানি জাহাজ ধ্বংস করে। এ ডব্লিউ চৌধুরীর নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়োজিত দলটি পাকিস্তানি কার্গো জাহাজ এমডি ওহ্রমাজ্দ ও এমভি আল-আববাস সহ সাতটি জাহাজ ধ্বংস করে। এর পর অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে দেশের সকল বন্দরে অনুরূপ আরো কয়েকটি অপারেশন চালানো হয় এবং বেশ কিছুসংখ্যক সমুদ্রগামী ও উপকূলীয় জাহাজ বন্দরে ডুবিয়ে দেয়া হয়। পরে ভারতীয় কমান্ডার এম.এন সুমন্ত এ বাহিনীর নেতৃত্ব দেন। ১১ নং সেক্টর টাঙ্গাইল জেলা এবং কিশোরগঞ্জ মহকুমা ব্যতীত সমগ্র ময়মনসিংহ জেলা নিয়ে গঠিত। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর এম. আবু তাহের। মেজর তাহের যুদ্ধে গুরুতর আহত হলে স্কোয়াড্রন লীডার হামিদুল্লাহকে সেক্টরের দায়িত্ব দেয়া হয়। মহেন্দ্রগঞ্জ ছিল সেক্টরের হেডকোয়ার্টার। এই সেক্টরে প্রায় ২৫ হাজার মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধ করেছে। এই সেক্টরের আটটি সাব-সেক্টর (কমান্ডারদের নামসহ) হচ্ছে: মাইনকারচর (স্কোয়াড্রন লীডার হামিদুল্লাহ); মহেন্দ্রগঞ্জ (লেফটেন্যান্ট মিজান); পুরখাসিয়া (লেফটেন্যান্ট হাশেম); ঢালু (লেফটেন্যান্ট তাহের আহমদ এবং পরে লেফটেন্যান্ট কামাল); রংরা (মতিউর রহমান); শিববাড়ি (ই.পি.আর-এর কয়েকজন জুনিয়র অফিসার); বাগমারা (ই.পি.আর-এর কয়েকজন জুনিয়র অফিসার); এবং মহেশখোলা (জনৈক ই.পি.আর সদস্য)। এই সেক্টরে ব্যাপক গেরিলা অপারেশন পরিচালিত হয়। নিয়মিত বাহিনী সীমান্ত এলাকায় মুক্ত অঞ্চল দখল করে রাখে। সুবেদার আফতাব যুদ্ধের সারা নয় মাস ধরে রাহুমনিতে মুক্ত এলাকা দখলে রাখেন। এই সেক্টরে মহিলারাও পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে। তাছাড়া টাঙ্গাইলের মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকী তার জেলায় ১৬০০০ গেরিলা যোদ্ধা সংগঠিত করেন এবং সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি সফল অভিযান পরিচালনা করেন। সতর্কতা!! পোস্টটি জব স্টাডি টুয়েন্টিফোর ডট কম এর পূর্ব অনুমতি ব্যতিত যদি কোন ব্যক্তি বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠান অন্য কোথাও যেমন- ফেসবুক বা অন্য কোন পোর্টালে প্রকাশ করেন তাহলে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানে বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোন ধরণের ক্ষমা বা মুচলেকা গ্রহণযোগ্য হবে না।] · মুক্তিযুদ্ধ → অপারেশনসার্চ লাইট হলো – ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের বর্বরহত্যাকান্ড। → বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন – ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে ওয়্যারলেসযোগে। → বঙ্গবন্ধুকে শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয় – ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে আনুমানিক রাত ১.৩০ মিনিটে। → শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন- ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে২৫ মার্চ রাত ১২ টার পর। → বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি ছিল – ইংরেজিতে। → বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করা হয় – ইপিআর ট্রান্সমিটার, টেলিগ্রাম ও টেলিপ্রিন্টারের মাধ্যমে। → বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা চট্টগ্রাম থেকে প্রচার করেন – ২৬ মার্চ দুপুর ও সন্ধ্যায় এম, এ, হান্নান। → মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র পাঠ করেন – ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে। → বাঙ্গালী পাকিস্তানের শাসনের অধীনে ছিল- ২৪ বছর। → মেহেরপুর জেলার অন্তর্গত – বৈদ্যনাথ তলা এবং আম্রকানন → বৈদ্যনাথ তলার বর্তমান নাম – মুজিবনগর। → মুজিবনগর সরকার গঠিত হয় – ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল। → বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা আদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত হয় – ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল। → মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহন করে – ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল। → মুজিব নগর সরকারের রাষ্ট্রপতি ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক – বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। → উপরাষ্ট্রপতি – সৈয়দ নজরুল ইসলাম। → প্রধান মন্ত্রী – তাজ উদ্দীন আহমেদ। → অর্থমন্ত্রী – এম. মনসুর আলী। → স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী – এ.এইচ. এম. কামারুজ্জামান। → পররাষ্ট্রমন্ত্রী – খন্দকার মোশতাক আহমেদ। → মুজিব নগর সরকারের শপথবাক্য পাঠ করান – অধ্যাপক ইউসুফ আলী। → মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি ছিলেন – কর্ণেল ( অব.) এম.এ. জি ওসমানী। → মুজিব নগর সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল – মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা ও বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বে জনমত সৃষ্টি করা। → মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রনালয় ছিল – ১২ টি। → মুজিবনগর সরকারের বিশেষ দূত ছিলেন – বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। → বাংলাদেশে কয়টি সামরিক জোনে ভাগ করা হয় – ৪ টি ( ১৯৭১ সাল ১০ এপ্রিল)। → ৪ সামরিক জোনে ছিলেন – ৪ জন সেক্টর কমান্ডার। → ১১ এপ্রিল পুনঃরায় ভাগ করা হয় – ১১ টি সেক্টরে। → মুক্তিযুদ্ধের ব্রিগেড ফোর্স ছিল – ৩ টি। → কাদেরীয়া বাহিনী ছিল – টাঙ্গাইলের। → ইপিআর – ইষ্ট পাকিস্তান রাইফেল। → বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বলা যায় – গণযুদ্ধ বা জনযুদ্ধ। → ভারতে শরার্থী ছিল – ১ কোটি। → বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকরা হয় – ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর। → ১১ দফা আন্দোলন হয়েছিল – ১৯৬৮ সালে। → ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে চলছিল – বঙ্গবন্ধুর অসহযোগ আন্দোলন। **পূর্ববঙ্গ জমিদারি দখল ও প্রজাস্বত্ব আইন কবে প্রণীত হয়? –১৯৫০ সালে। **ইংরেজ ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি কখন বাংলা,বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করে? –১৭৬৫ সালে। **ছিয়াত্তরের মন্বন্তর কত সালে ঘটে? –বাংলা ১১৭৬ সালে। **মুসলিম পারিবারিক আইন কবে প্রণীত হয়? –১৯৬১ সালে। **সূর্যাস্ত আইন চালু হয় কত সালে? –১৭৯৩ সালে। **কাগমারী সম্মেলন আনুষ্ঠিত হয় কবে? –১৯৫৭ সালে। **শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেয়া হয় কবে? –২৩ফেব্রুয়ারি,১৯৬৯ সালে। **স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা প্রথম উত্তোলিত হয় কবে? –২ মার্চ,১৯৭১ সালে। **বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্রের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়েছিল কবে? –১৭ এপ্রিল,১৯৭১সালে। **স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুজিবনগর কয় নং সেক্টরের অধীনে ছিল? –৮ নং সেক্টর। **স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ঢাকা কয় নং সেক্টরের অধীনে ছিল? –২ নং সেক্টর। **অপারেশন সার্চলাইন সংঘটিত হয় কবে? –২৫ মার্চ,১৯৭১ সালে। **অপারেশন জ্যাকপট সংঘটিত হয় কবে? –১৫আগস্ট,১৯৭১সালে। **গণ অভ্যুত্থান দিবস পালিত হয় কোন তারিখে? –২৪ জানুয়ারি। . .মুক্তিযুদ্ধের_১১টি_সেক্টর . ১ নং সেক্টর–১ কেজি কুল । . ব্যাখ্যা:কেজি-মেজর জিয়াউর রহমান, কুল-মেজর রফিকুল ইসলাম। . ২ নং সেক্টর— ২ টা মশা হায়দারকে কামড় দিল। . ব্যাখ্যা:মশা-মেজর খালেদ মশাররফ, হায়দার-মেজর হায়দার। . ৩ নং সেক্টর– নারীকে নিয়ে শপিং করতে হেব্বি লাগে। . ব্যাখ্যা:নারী-মেজর নুরুজ্জামান, শপিং-মেজর শফিউল্লাহ . ৪ নং সেক্টর-চার সিকি পয়সাও নাই। . ব্যাখ্যা:সিকি- মেজর সি আর দত্ত। . ৫ নং সেক্টর:৫’শত টাকা দাও। . ব্যাখ্যা:শত-মেজর মীর শওকত আলী। . ৬ নং সেক্টর–হাবিবুল বাশার ৬ মারল। . ব্যাখ্যা:বাশার-উইং কমান্ডার বাশার। . ৭ নং সেক্টর–সাত আসমান। . ব্যাখ্যা:আসমান-মেজর কাজী নুরুজ্জামান। . ৮ নং সেক্টর–ওসমান ৮ টা মেয়ের মনচুরি করল। . ব্যাখ্যা:ওসমান-মেজর আবু ওসমান চৌধুরী, মনচুরি-মেজর এম.এ মনছুর। . ৯ নং সেক্টর– প্রেমিকার জন্য ৯ টা লাল গোলাপ মঞ্জুর করলাম। . ব্যাখ্যা:লাল-মেজর আবদুল জলিল, মঞ্জুর- এম.এ মঞ্জুর। . ১০ নং সেক্টর নৌ কমান্ডার দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। . ১১ নং সেক্টর– তাহেরকে ১১ টি হামের টিকা দিল। . ব্যাখ্যা-তাহের-মেজর আবু তাহের, হাম-লে: এম হামিদুল্লাহ। |
Discussion about this post