চাকরির আবেদনে আমাদের সবারই কমবেশি সিভি বা রেজ্যুমে ও কভার লেটার লাগে। ইউরোপে বা ব্রিটেনে সিভির চল বেশি। অন্যদিকে আমেরিকায় রেজ্যুমের প্রাধান্য। অনেক ক্ষেত্রে আমাদের দেশে সিভি-রেজ্যুমে একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। তবে একটা ব্যাপার খেয়াল রাখা দরকার। সিভি, রেজ্যুমে ও কভার লেটার এক নয়। এদের উদ্দেশ্য, আকার ও গঠনে রয়েছে ভিন্নতা। জেনে নেয়া যাক সে সম্পর্কে।
সিভি (Curriculum Vitae)
সিভি মূলত দুই থেকে তিন পাতার হয়। এখানে আপনার জীবনের যাবতীয় প্রায় সব কিছু লেখা থাকে – আপনার ক্যারিয়ারের লক্ষ্য, শিক্ষা, কাজের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, অর্জন, প্রকাশনা, সম্মাননা ইত্যাদি।
সিভি সাধারণত সময়ানুক্রমিক হয়ে থাকে। সাম্প্রতিক পর্যায় থেকে এর শুরু হয়। কাজের প্রয়োজন অনুসারে যত পেছনে যাওয়া যায়, ততটাই উল্লেখ করা হয়।
সিভি সাধারণত বিভিন্ন কাজের আবেদনের সময় অপরিবর্তিত থাকে। তবে নিয়মিত হালনাগাদ করা জরুরি।
সিভি বা কারিকুলাম ভিটাই শব্দটি এসেছে ল্যাটিন ভাষা থেকে। এর আক্ষরিক অর্থ হলো জীবনের পথ!
রেজ্যুমে (Résumé)
রেজ্যুমে সাধারণত এক পাতার হয়ে থাকে। এতে পুরো জীবনবৃত্তান্ত থাকে না। সংক্ষিপ্ত হবার কারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়।
সার্বজনীন কোন গঠন না থাকায় ব্যক্তি ও কাজের বা আবেদনের উপর ভিত্তি করে রেজ্যুমের গঠন ভিন্ন হয়। এখানে কেবল যে কাজের জন্য অবেদন করছেন, সে কাজের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, শিক্ষা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রাসঙ্গিক তথ্য দেয়া থাকে।
রেজ্যুমের তথ্য সময়ানুক্রমিক হতে পারে। আবার কাজভিত্তিকও হতে পারে। অর্থাৎ নির্ধারিত কাজের জন্য আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দিয়ে রেজ্যুমে সাজানো। অবশ্য অনেকে দুই ধরনকে এক জায়গায় নিয়ে আসেন। রেজ্যুমে লেখা তাই ব্যক্তিগত প্রেক্ষাপটের উপর নির্ভরশীল।
অনেক সময় রেজ্যুমের তথ্য বুলেট লিস্ট আকারে দেয়া থাকে। এতে চাকরিদাতা কম সময়ের মধ্যে আবেদনকারী সম্পর্কে ধারণা পান।
কভার লেটার (Cover Letter)
সিভি ও রেজ্যুমে অনেকটা এক রকম হলেও কভার লেটার কিছুটা আলাদা। এর মূল উদ্দেশ্য চাকরিপ্রার্থী হিসাবে আপনার যোগ্যতা যথাসম্ভব সংক্ষেপে তুলে ধরা।
চাকরির আবেদনের সময় কভার লেটার সাধারণত সিভি বা রেজ্যুমের সাথে লিখে দিতে হয়। নাম থেকেই বোঝা যায় যে এটি এক ধরনের চিঠি বা পত্র। এটি লিখতেও হয় চাকরিদাতা বরাবর। এতে থাকে সম্বোধন, কিছু প্যারাগ্রাফ ও সমাপ্তি।
এক নজরে সিভি, রেজ্যুমে ও কভার লেটার
সিভি | ২-৩ পাতা পুরো শিক্ষা ও কর্ম জীবনের সময়ানুক্রমিক বৃত্তান্ত তথ্যের ধরনঃ কে, কী, কখন ও কীভাবে ব্যক্তিগত অর্জনকে তুলে ধরে অপরিবর্তনশীল হালনাগাদ করলেই যথেষ্ট |
রেজ্যুমে | ১ পাতা তথ্যের ধরনঃ কে, কী, কখন ও কীভাবে ব্যক্তিগত অর্জনকে তুলে ধরে কাজের ভিত্তিতে আলাদা হয় |
কভার লেটার | চিঠি/আবেদনপত্রের সাথে মিল তথ্যের ধরনঃ যে কারণে আবেদনকারী সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী ব্যক্তিত্বকে তুলে ধরে |
এক কথায় বলা যায়, সিভি ও রেজ্যুমের সাথে কভার লেটার পরিপূরক ভূমিকা পালন করে। যে কোন প্রতিষ্ঠানে আবেদনের বেলায় এ বিষয়গুলোতে মনোযোগ দেবেন।
Discussion about this post