শিক্ষার আলো ডেস্ক
২৩ বছরের যুবক তৈরি করেছেন তিনশ’ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ। এখন নিজের কর্মীদের মাসিক বেতনই দেন প্রায় কোটি টাকা।
শুধু ফ্রিল্যান্সিং করে তিন বছরেই মাল্টি মিলিয়নিয়ার এই যুবকের নাম নয়ন হাসান। নিজের প্রতিষ্ঠানে যুক্ত করেছেন ২০০ বাংলাদেশি ও ১০০ ফিলিপিনো তরুণ-তরুণীকে।
এইচএসসি পাস করে পাঁচ বছর আগে ঢাকায় পা রাখেন নয়ন হাসান। পুরো পরিবারের দায়িত্ব তখন কাঁধে। পড়াশোনার পাশাপাশি একটাই চিন্তা, কিভাবে হাতে কিছু টাকা আসবে?
বাবা আছমত আকনের পেশা কৃষিকাজ, মা বিলকিস বেগম চাকরি করতেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। ছোট ভাই রবিন ও ছোট বোন আছমাকে নিয়ে টানাটানির সংসার।
তাই পরিবারের খরচের চিন্তা কম বয়সেই শুরু করেন নয়ন। স্কুলে পড়ার সময়ই ছাত্র পড়াতে হতো। ঢাকায় পা রেখে শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং।
ছোটবেলা থেকে প্রযুক্তির প্রতি ছিলো তার সহজাত টান। সেই সহজাত আগ্রহ থেকে মাত্র দুজন নিয়ে শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ। এখন কাজ করছেন তিনশ’ কর্মী।
শরীয়তপুরের জাজিরায় জন্ম ও বেড়ে ওঠা নয়ন হাসান ২০১৪ সালে উপজেলাতে লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং’ নামের এক কর্মসূচিতে বিনা মূল্যে পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ নেন।
পরের বছর নয়ন জানতে পারেন, আবারও তাঁর জাজিরা উপজেলায় একটি পাঁচ দিনের কম্পিউটার কোর্স করানো হবে। এবারের বিষয় ফ্রিল্যান্সিং।
২০১৭ সালে ঢাকায় আসেন নয়ন। তিতুমীর কলেজে ইংরেজি বিভাগে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হন। তিনি যে মেসে থাকতেন সেখানে পরিচয় হয় বড় ভাই অরবিন্দ কুমার রায়ের সঙ্গে।
আরও পড়ুনঃ ‘জেসিআই’ বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড পেলেন ৩১ তরুণ উদ্যোক্তা
তার কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে শিকে ফেলেন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট। এরপর শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং। প্রথম কাজ আসে ২০১৯ সালের শুরুতে। আয় করেন ১০০ ডলার।
ঢাকায় বসে বিদেশি একটি অনলাইন দোকান ব্যবস্থাপনার কাজ সামলাতেন নয়ন। একা দোকান সামলাতে সামলাতে আরও একটা দোকানের দায়িত্ব পেয়ে, বাড়তে থাকে মার্চেন্ট গ্রাহক।
বিশ্বখ্যাত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন ও ওয়ালমার্টের ‘মার্চেন্ট স্টোর’ ব্যবস্থাপনায় জড়িয়ে যান। রাত জেগে ওই সব দোকানে আসা ভিনদেশি ক্রেতাদের সামাল দিতেন নয়ন।
কাজ বাড়তে থাকলে আরও দুই তরুণকে ‘মার্চেন্ট স্টোর’ ব্যবস্থাপনার কাজ শেখান। তাঁদের নিয়ে নেন নিজের দলে।
এরপর দেশের শতাধিক তরুণের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন নয়ন। শুধু দেশেই নয়, নয়নের ইকম সলিউশনসে কাজ করছেন ফিলিপাইনের তরুণেরাও।
নয়নের ইকম সলিউশনসে প্রায় ৩০০ কর্মী ঘরে বসে কাজ করছেন। সবার বয়স ২০ থেকে ২৬ বছরের মধ্যে। এই কর্মীদের প্রতি মাসে এক কোটি টাকার বেশি বেতন দেয় ইকম সলিউশনস।
মাত্র ২৩ বছরেই শুণ্য থেকে কোটিপতি নয়ন মনে করেন, ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হবার প্রথম শর্তই হলো কাজটি ঠিকমতো বোঝা। বাকিটা শুধুই একাগ্রতা আর পরিশ্রম।সৌজন্যে-একাত্তর.টিভি
Discussion about this post