শিক্ষার আলো ডেস্ক
২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বাঙালি জাতির ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম ‘বাংলাদেশ’ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের স্ফুলিঙ্গে উজ্জীবিত সশস্ত্র জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের মুক্তির ইতিহাস, স্বাধীনতার ইতিহাস। স্বাধীনতার ইতিহাস ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান আর দুই লক্ষ মা-বোনের ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং কোটি বাঙালির আত্মনিবেদন ও সংগ্রামের গৌরবগাঁথা গণবীরত্বের ইতিহাস।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ভোরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মুক্তিযোদ্ধা ও নানা শ্রেণি পেশার মানুষ এসে ভিড় করে।
এদিন সকালে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর শহীদদের স্মরণ করে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা দিবসের ৫৪ বছর পূর্তির দিনটি কর্মসূচি শুরু করেন। জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদ বেদীতে প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রী পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুকও বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
স্মৃতিসৌধে প্রথমে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। রাষ্ট্রপতির পরপরই জাতির সূর্য সন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সেখানে এক মিনিট নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি দল রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায় এবং বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।
এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। পরে কিছু সময় নিরবে দাঁড়িয়ে থেকে জাতির বীর সন্তানদের স্মরণ করেন।
জাতীয় সংসদের স্পিকার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান ও ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকরা এ সময় স্মৃতিসৌধে উপস্থিত ছিলেন।শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইয়ে সই করেন ভুটানের রাজা ও তার স্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।
এরপর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন। এরপর জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় সর্বস্তরের জনগণের জন্য। সারিবদ্ধ ভাবে ফুল নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে লাখো জনতা। মুহূর্তেই জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি, আধা-সরকারি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ। তাদের ফুলেল শ্রদ্ধায় ভরে ওঠে শহীদ বেদি।
স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে যুদ্ধাহত অনেক মুক্তিযোদ্ধাও এসেছেন শ্রদ্ধা জানাতে। তাদের অনেকের হাতে ছিলো লাল-সবুজের বিজয় পতাকা।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার পরিবারসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষের মুখর হয়ে ওঠে স্মৃতিসৌধ প্রাণ।
Discussion about this post