নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধ ও দালালদের দৌরাত্ম্য কমাতে বাগেরহাটে সরকারি প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা জমির মালিকদের বাড়ি গিয়ে ক্ষতিপূরণের চেক হস্তান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এরই অংশ হিসেবে গতকাল রামপাল উপজেলার বড় নওয়াবপুর ও ধলদা গ্রামে গিয়ে খুলনা মোংলা রেললাইন ও খানজাহান আলী বিমানবন্দরের জন্য অধিগ্রহণ করা ২১ জন জমির মালিকের কাছে ক্ষতিপূরণের চেক হস্তান্তর করা হয়। জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ নিজে এ চেক হস্তান্তর করেন। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ ও ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
এ সম্পর্কে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা জেলার বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছি। ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের সময় ও অর্থ বাঁচাতে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ক্ষতিপূরণের চেক দিচ্ছি। এখন থেকে উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকদের বাড়িতে গিয়েই ক্ষতিপূরণের চেক দেয়া হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, সামনে ঈদ। এদিকে করোনা পরিস্থিতির কারণে ঘর থেকে মানুষ বের হতে পারছে না। মানুষ এক ধরনের অর্থ সংকটে রয়েছে। তাই জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের তাদের ক্ষতিপূরণের চেক পৌঁছে দিচ্ছি।
ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, আগে অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকদের ডিসি অফিসে গিয়ে গণশুনানিতে অংশগ্রহণ করতে হতো। যার ফলে জমির মালিকদের অর্থ ও সময় দুটোই নষ্ট হতো। এ কথা চিন্তা করে তাদের ভোগান্তি কমাতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বাড়িতে বসে ভূমি অধিগ্রহণের চেক পেয়ে খুশি ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা। আজিজুর রহমান, জামিল শেখ ও হাই শেখ বলেন, জমির টাকা পেতে আমাদের অনেক ঘুরতে হতো। ডিসি অফিসে গনশুনানিতে অংশ নিতে হতো। অনেক কাজ নিজেরা বুঝতে পারতাম না। বাধ্য হয়ে দালালদের শরণাপন্ন হতে হতো। জমি অধিগ্রহণের ফলে পাওয়া টাকার একটি বড় অংশ দালাল ও ঘুষ দিতে চলে যেত। এদিকে করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে নগদ অর্থের সংকটে ছিলাম। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বাড়িতে এসে অধিগ্রহণের চেক দিলেন। এ সময়ে এই চেক পেয়ে আমরা খুব খুশি। এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হলে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা হয়রানি থেকে বাঁচবেন।
Discussion about this post