শিক্ষার আলো ডেস্ক
ঈদের ছুটি শেষে তাপদাহের কারণে সাত দিনের বাড়তি ছুটি কাটিয়ে রোববার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার আদেশে অভিভাবকদের অনেকেই বিরুপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।। এমন গরমে শিশুদের আসা যাওয়া ও ক্লাস করতে কষ্ট হয়ে যাবে বলে মনে করছেন তারা। তাদের দাবী এই সময়টুকুতে অনলাইন ক্লাস চালু রাখলে ভালো হতো।
এদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো আগের মতোই শনিবার বন্ধ থাকলেও, এখন থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো শনিবার খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
তবে তাপপ্রবাহের কারণে বেশ কিছুদিন স্কুল বন্ধ থাকায় এবং নতুন কারিকুলামের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। পরে প্রয়োজনে অন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলেও জানান তিনি।
রোববার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৪ উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান।
২০২২ সালের আগস্ট থেকে সরকার শুক্রবারের পাশাপাশি শনিবারও স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে ঈদের ছুটি শেষে গরমের কারণে স্কুল বাড়তি বন্ধ রাখার কারণে মাধ্যমিকে এখন শনিবারও স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন কারিকুলামের যে প্রক্রিয়া সেখানে পুরো বছর শনিবার বন্ধ দেওয়া উচিত কি-না সেটি নিয়ে আমাদের আলোচনা আছে। এই মুহূর্তে যেহেতু আমরা ১০ দিন পাঠদান মিস করেছি, তাই এই মুহূর্তে শনিবার স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ পরে সেটি যদি প্রয়োজন না হয়, তাহলে অন্য সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর উঠলে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে ধরা হয়, এমন পরিস্থিতি হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হবে কি-না জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোনো জেলায় যদি ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রা যায়, সেখানে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আছেন, তারা আঞ্চলিক পর্যায়ে আলোচনা করে সেই জায়গার প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ ও পাঠদানে সময়ও পরিবর্তন করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃতীব্র তাপদাহে প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দিলো মন্ত্রণালয়
এরআগে, তাপপ্রবাহের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, “আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী পাঁচটি জেলায় তাপমাত্রা ৪০ এর পর্যায়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাংলাদেশে নতুন কিছু নয়। সুতরাং, পাঁচটি জেলায় তাপমাত্রা ৪০ এর উপরে যাওয়ার পূর্বাভাসের ওপর ভিত্তি করে সারাদেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া যুক্তিযুক্ত নয়।”
স্কুল খোলার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিভাবকরা আলোচনা-সমালোচনা করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এই আলোচনা-সমালোচনার ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালিত হয় না। আমাদের শিক্ষার্থীদের শিখন ও ফল অর্জন করার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নতুন কারিকুলামের কাজ চলছে। তাই জনপ্রিয়তার নিরিখে আমারা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না, বাস্তবতার নিরিখে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কিছু হলেই স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার এত আলোচনা কেন আসে? বাংলাদেশে কি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান নেই? এখন সবকিছু খোলা থাকবে আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে- এই প্রত্যাশাটি যথাযথ নয়।
এরআগে, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৪ উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। এ সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার, এনএসডিএ এর নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) নাসরীন আফরোজ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আজিজ তাহের খান।
Discussion about this post