বিশেষ প্রতিবেদক
কীর্তিমান মানুষটি ছিলেন সবর্জন শ্রদ্ধেয়। তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা-ভালোবাসা ছিল দেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনারও। এ কিংবদন্তিকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে নিজের জন্য পাতা লাল গালিচা পর্যন্ত ছেড়ে দিতেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুধু তাই নয়, গত বছরের ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আনিসুজ্জামানের চাদর ঠিক করে দিয়ে তার প্রতি ভালোবাসার অনন্য নজিরও স্থাপন করেছিলেন শেখ হাসিনা।
জাতীয় অধ্যাপক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আনিসুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক শোকবার্তায় শেখ হাসিনা তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আনিসুজ্জামানকে অত্যন্ত শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
আনিসুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আর ওই বাংলা বিভাগেরই ছাত্রী ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ছিলাম স্যারের টিউটোরিয়াল গ্রুপের শিক্ষার্থী।’ প্রধানমন্ত্রী এ সময় শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর অনন্য অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি আরও বলেন, তাঁর মতো বিদগ্ধ ও জ্ঞানী মানুষের মৃত্যুতে দেশের এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো।
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রতিবছরের ভাষার মাসের প্রথম দিনে বইমেলা শুরু হয়। এর উদ্বোধনীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলা একাডেমি প্রতিবছর বইমেলার আয়োজন করে আসছে। আর এতদিন এর চেয়ারম্যান ছিলেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। তিনিও অতিথি থাকতেন ওই অনুষ্ঠানে।
অনুষ্ঠানটিতে প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে লাল গালিচাও পাতা হয়। কিন্তু প্রায় প্রতিবারই প্রধানমন্ত্রী সেই লাল গালিচা ছেড়ে দেন নিজের শিক্ষক দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবী ও গবেষক আনিসুজ্জামানের সম্মানে। শুধু তাই নয়, আনিসুজ্জামানকে মধ্যমণি করে প্রতিবার মেলাও ঘুরে দেখেন শেখ হাসিনা।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও নিজের শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মান দেখিয়ে বাংলা একাডেমির রাস্তায় রাখা লাল গালিচা নিজে ছেড়ে নিচ দিয়ে হেঁটেছিলেন শেখ হাসিনা। হাঁটা অবস্থায় শিক্ষকের চাদরও ঠিক করে দিয়েছিলেন মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আমার শিক্ষক। তিনি প্রগতিশীল আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও কখনও নেতৃত্বে আসতে চাননি।’ প্রধানমন্ত্রী আনিসুজ্জামানকে ‘বাঙালি জাতির যে কোনো ক্রান্তিকালে বাতিঘরের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন’ বলেও উল্লেখ করেছিলেন।অসুস্থ হবার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী সবসময় খোঁজ রেখেছেন প্রিয় শিক্ষকের।
Discussion about this post