শিক্ষার আলো ডেস্ক
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় দুজন, চট্টগ্রামে তিনজন ও রংপুরের একজন বলে জানা গেছে।
আজ মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল থেকেই রাজধানীসহ সারাদেশে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ খবর পাওয়া যায়।
জানা গেছে, বেলা তিনটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়। এ সময় কয়েকজন অস্ত্রধারীকে গুলি করতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে হাতবোমার বিস্ফোরণও ঘটানো হয়। যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ হামলা চালিয়েছেন বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টা থেকে চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট এবং ষোলশহরসহ আশপাশের এলাকায় কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এর আগে দুপুর থেকে বিভিন্ন মোড়ে অবস্থা নেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা। দুই নম্বর গেট এলাকায় একটি বাস ভাঙচুর করে তারা। দফায় দফায় চলা সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন।
আরও পড়ুনঃক্যাম্পাসে বহিরাগতদের ঠেকাতে পুলিশ মোতায়েন ঃ প্রক্টর
নিহতরা হলেন ওয়াসিম, ফয়সাল আহমেদ শান্ত ও ফারুক। এর মধ্যে ওয়াসিম চট্টগ্রাম কলেজ শিক্ষার্থী। তিনি কক্সবাজারের পেকুয়া এলাকার বাসিন্দা। ফয়সাল আহমেদ শান্ত নগরের এমইএস কলেজের ছাত্র। পথচারীর ফারুকের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।সে একটি আসবাবের দোকানের কর্মচারী বলে জানা গেছে।
এদিকে আজ বিকেলে রাজধানীর ঢাকা কলেজের সামনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষের মধ্যে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহত ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর নাম-পরিচয় জানা যায়নি। এছাড়াও সন্ধ্যায় সিটি কলেজের সামনে থেকে রক্তাক্ত একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত নিহতের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
আজ দুপুর ২টায় রংপুর খামার মোড় থেকে শিক্ষার্থীরা বিশাল মিছিল নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং ফটকের সামনে আসেন। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় পুলিশ প্রায় ২০০ রাউন্ড গুলি ও রাবার বুলেট ছোড়ে। পুলিশের গুলিতে আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সাইদ নিহত হন।
নিহত আবু সাঈদ (২২) রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা আন্দোলন সমন্বয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকাসহ চার জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
Discussion about this post