শিক্ষার আলো ডেস্ক
শিক্ষার্থীরা কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) প্রশাসন।
আওয়ামী লীগ আমলের শেষ দিকে আদালতের রায়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতি ফেরার যে পথ তৈরি হয়েছিল, ছয় মাসের মাথায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নতুন এক নিষেধাজ্ঞায় তা ফের বন্ধ হল।
বুয়েট প্রশাসন জানিয়েছে, কোনো শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত কোনো ক্লাব বা সোসাইটি ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দল বা সহযোগী অন্য কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না।
শনিবার বুয়েটের রেজিস্ট্রার ফোরকান উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের এক জরুরি সভায় রাজনৈতিক দল করা নিয়ে ওই সিদ্ধান্ত হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুয়েট অর্ডিন্যান্সের বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনের ১৬ নম্বর ধারায় অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের ৫০৩তম জরুরি সভায় সর্বোপরি রাজনীতির লেজুড়বৃত্তায়ন নিবৃত্ত করার লক্ষ্যে কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত কোনো ক্লাব বা সোসাইটি ব্যতীত কোনো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি অথবা অন্য যে কোনো সংগঠনের সঙ্গে জড়িত হতে পারবেন না।
এতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের নিয়মসমূহ যথাযথভাবে পালন করতে হবে এবং তা অমান্য করলে অধ্যাদেশে বর্ণিত নিয়ম মোতাবেক তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরে বাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী।
ওই হত্যাকাণ্ডের পর ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিভিন্ন অভিযোগ সামনে আনেন শিক্ষার্থীরা। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর এক ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে’ ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে বুয়েট প্রশাসন।
ওই নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই গত এপ্রিলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ অনেকে গভীর রাতে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে নতুন করে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। তখন বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি ফেরানোর দাবিতে পাল্টা কর্মসূচি দেয় ছাত্রলীগ।
এরপর এক ছাত্রলীগ কর্মীর রিট আবেদনে হাই কোর্ট বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের আদেশ স্থগিত করে দেয়। তাতে দেশের প্রকৌশল শিক্ষার শীর্ষ এ বিদ্যাপীঠে ছাত্র রাজনীতি চর্চায় বাধা কাটে।
তাছাড়া সবশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং শিক্ষকদের সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের আন্দোলনে জুলাই থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দেশের অন্যতম শীর্ষ এ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীরা সেশনজটের মুখে পড়েছেন।
Discussion about this post