শিক্ষার আলো ডেস্ক
বুধবার (১৯ মার্চ) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘বাংলাদেশে মাদ্রাসা শিক্ষার অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, ছাত্রছাত্রীদের চাহিদানুযায়ী কীভাবে মাদ্রাসা শিক্ষাকে ঢেলে সাজানো যায়, তার জন্য রাষ্ট্র কী করতে পারে, এক্ষেত্রে নাগরিক সমাজের ভূমিকা কী, এগুলো নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
ন্যায়নিষ্ঠ, বিজ্ঞানভিত্তিক ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলারও আহ্বান জানান শিক্ষা উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, মূলত আরব বণিকরা যখন এ অঞ্চলে এসেছিল, তারপর থেকেই এখানে মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠা লাভ করে। মোহাম্মদ ঘুরির ভারত বিজয়ের পরে ১১৯২ সালে আজমীরে প্রথম রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। মোঘল আমলে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় মাদ্রাসা শিক্ষা প্রসার লাভ করে। এরপর ১৮৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মাদ্রাসা-ই-আলিয়া কলকাতা মাদ্রাসা। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। আমাদের দেশের তিনটি ধারায় শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালিত হয়। এর মধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষা একটি অন্যতম ধারা। এ শিক্ষার সঙ্গে প্রায় ৩০/৪০ লাখ ছাত্রছাত্রী ও দুই লাখ শিক্ষক সম্পৃক্ত। সমাজের সুবিধা বঞ্চিত ও অস্বচ্ছল পরিবার থেকে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের দেখভালের দায়িত্ব মাদ্রাসা শিক্ষকদের। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে মেধা, যোগ্যতা, সময় ও সুযোগের সদ্ব্যবহার করে তাদেরকে কর্মক্ষম করে তোলার দায়িত্ব আমাদের।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের টাকায় চলে। জনগণের সম্পদের সদ্ব্যবহার করতে হবে। কোন খাতে, কোনভাবে ব্যয় করলে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবো, এই সেমিনারে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও প্রশাসন কার কী দায়িত্ব এবং এ দায়িত্ব কীভাবে পালন করলে মাদ্রাসা শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত এসব সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে কর্মক্ষম করা যায়— এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
উপদেষ্টা আরো বলেন, আমাদের গর্বের সঙ্গে মনে রাখতে হবে— ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহ থেকে প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ২৪’এর গণঅভ্যুত্থানে মাদ্রাসা ছাত্রদের ভূমিকা ছিল। আমাদের দায় ও দরদ থেকে এদেশটাকে গড়ে তুলতে হবে।
এসময় কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. এবিএম সিদ্দিকুর রহমান নিজামী।
Discussion about this post