এস, এম, পারভেজ
প্রিয় এসএসসি/ দাখিল ফলপ্রার্থীরা আজকের দিনটি তোমাদের জন্য খুবই কাঙ্খিত একটি দিন। কারণ অনেক জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আজ তোমাদের এসএসসির ফলাফল প্রকাশিত হলো! প্রতিবছরই এই দিনটি আসে কিন্তু এবার করোনা দানবের খপ্পরে পড়ে এটি একটু দেরীতেই এসেছে।
স্থবির শিক্ষাংগন, মুষড়ে পড়া অর্থনীতি, নড়বড়ে সামাজিক বন্ধনকে সংগী করে গৃহবন্দী দীর্ঘদিন। সবকিছু মিলিয়ে এমনিতেই মানসিক স্বাস্থ্য কারোরই ভালো নেই।এর মধ্যে এসএসসির ফলাফল অনেকের জন্য আনন্দের আবেশ নিয়ে এসেছে, আবার ফলাফল আশানুরুপ হয়নি যাদের তারা প্রচন্ডভাবে হতাশ হয়েছে। সফলদের প্রতি অভিন্ন্দন জানিয়ে আজকের লেখাটুকু‘মন খারাপ’দের জন্য উৎসর্গ করছি।
দশ দশটি বছরের সাধনার ফল যদি মনের মত না হয় তবে ভেংগে পড়াটাই স্বাভাবিক।কিন্তু প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধু!
আসলেই কি তুমি ব্যর্থ হয়েছ?খুবই অপমানকর বা অসম্মানজনক কিছু করে বসেছো? একটি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ না পাওয়া কিংবা কোন একটি বিষয়ে পাশ না করলেই কি সবকিছু শেষ হয়ে গেলো?
তুমি কি জানো, এসএসসি-তে জিপিএ-৫ পাওয়াদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ এইচএসসিতে গিয়ে জিপিএ-৫ পেতে ব্যর্থ হয়!আবার এসএসসি-তে জিপিএ-৪ পেয়েও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে মেডিকেল কলেজে বা ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে এমন উদাহারণ ভুড়িভুড়ি। অন্যদিকে এসএসসি ও এইচএসসি উভয়টিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েও মেডিকেল বা ইঞ্জিনিয়ারিং-এ তো নয়ই কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তির সুযোগ পায়নি এমন অনেক ছাত্রছাত্রীও রয়েছে ।
অন্যদিকে খারাপ করা বিষয়ে আবার পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে জিপিএ -৪.৫ পেয়ে জীবনে সফল হওয়া কোন অলীক স্বপ্ন নয় , বরং এটি বাস্তবতা। আসলে বিষয়টি হচ্ছে বিশেষ বিশেষ সময়ে নিজকে কাজে লাগাতে পারলে সফলতা আসবেই।হতাশার কাছে নিজেকে সঁপে না দিয়ে নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে।ভবিষ্যত ধাপের জন্য নিজকে প্রস্তুত করতে হবে।
বারংবার ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ারিং এর কথাইবা আসছে কেনো! ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে না পারলে কি জীবনের সব লক্ষ্ শেষ? জিপিএ-৩ মানেতো তুমি প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছো। এই মানের জিপিএ পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শেষে তুমি বিসিএস ক্যাডার হয়ে ম্যাজিস্ট্র্যাট হতে পারবে, হতে পারবে জাদরেল সচিব বা বিচারক।
সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে হতে পারবে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, স্থপতি,আইনবিদ,ব্যারিস্টার, চার্টার্ড একাউন্টেন্ট ,শিক্ষক, ব্যাংকার,গবেষক, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি। বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা নিয়ে হতে পারো আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব। হতে পারবে সফল শিল্পপতি বা উদ্যোক্তা।
যারা পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে ,তাদের মনে রাখা ভালো, পৃথিবীর অনেক সফল, বিখ্যাত ব্যক্তি পড়াশোনায় তেমন ভালো করতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল, বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন, স্টিভ জবস, বিল গেটস, এমনকি আইনস্টাইন। শেষবেঞ্চের এইসব ছাত্ররাই এখন সারাবিশ্বে বরণীয় ও স্মরণীয় !
এবার ভাবো তোমার সামনে কি বিশাল সম্ভাবনা! অতএব সাময়িক পিছিয়ে পড়া মানে আত্মসমর্পণ নয় বর্ং পরবর্তী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়া।এগিয়ে যাও এবং এগিয়ে যাও সফল তুমি হবেই। শিক্ষার আলো পরিবারের নিরন্তর শুভকামনা তোমার জন্য।
Discussion about this post