নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনা সংকটে চাপ দিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায় না করতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে শিক্ষাবোর্ড। এই বিষয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড।
কর্মকর্তারা বলছেন, চলমান জাতীয় সংকটে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো টিউশন ফি আদায়ে ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের উপর চাপ দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ দিয়ে কোনো টিউশন ফি আদায় না করতে গত ২৩ এপ্রিল জরুরি নির্দেশনা জারি করে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। এরপরও কিছু প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের কাছে বিকাশ, রকেট ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর পাঠিয়ে টিউশন ফি পরিশোধ করতে চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা টিউশন ফি আদায়ের পক্ষেই সাফাই দিয়ে বলছেন, এই মুহূর্তে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। কিন্তু গত দুই মাস শিক্ষকদের বেতন পরিশোধ করা যাচ্ছে না। ফলে প্রতিষ্ঠান সচল রাখতেই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি চাওয়া হচ্ছে।
আবার ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে শুরু হচ্ছে নতুন সেশন। ফলে আগের সেশনের কার্যক্রমও সম্পন্ন করতে হচ্ছে তাদের।
বিষয়টি সামনে এনে বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জিএম নিজামুদ্দিন বলেন, ‘ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে নতুন সেশন শুরু হতে যাচ্ছে। এ কারণে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন কার্যক্রমও শুরু করতে হচ্ছে। শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সবার বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে শিক্ষার্থীদের কাছে টিউশন ফি আদায় করছে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো।’
তবে ভিন্ন সুরে কথা বললেন রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফওজিয়া। তিনি জানান, বর্তমান মহামারি অবস্থায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায় স্থগিত রাখা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে অনেকের আয় উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে। এসব বিষয় বিবেচনা করে আমরা টিউশন ফি আদায়ে কাউকে চাপ সৃষ্টি করছে না।
এদিকে সংকটকালীন ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের উপর চাপ দিয়ে টিউশন ফি আদায় করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে কঠোর বার্তা দিয়েছেন ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে চাপ সৃষ্টি না করতে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি। এরপরও যদি কোনো অভিযোগ আসে, আমরা দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব’।
এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে টিউশন ফি না নিতে অনুরোধ করে আসছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ বিষয়ে ‘অভিভাবক ঐক্য ফোরাম’ এর সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বলেন, ‘বন্ধের সময় শিক্ষার্থীর টিউশন ফি মওকুফ করতে হবে।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় আপদকালীন ব্যয়ভার বহন প্রসঙ্গে জিয়াউল কবির দুলু বলেন, ‘সরকার বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা দিচ্ছে। সেই প্রণোদনা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও দিতে হবে। তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অভিভাবকরাও উপকৃত হবে।’
Discussion about this post