নিজস্ব প্রতিবেদক
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম চলতি মাসে শুরু হচ্ছে না। জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে আবেদন নেয়া হতে পারে।
এবার শুধু অনলাইনে আবেদন করা যাবে। ১ সেপ্টেম্বর ভর্তিকৃতদের ক্লাস শুরু হতে পারে। তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি-অবনতির ওপর এটা আগ-পিছ হতে পারে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, আমরা করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত ১৫ জুনের আগে হবে।
রোববার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এ বছর ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। সাধারণত আগের বছরের এসএসসি ও সমমান পাস করা শিক্ষার্থীদের একটি অংশও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে থাকে। সেই হিসাবে এবার ভর্তিচ্ছু প্রায় ১৯ লাখ। ফল হাতে পাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে কলেজে ভর্তির দুশ্চিন্তা ভর করেছে। তাদের সঙ্গে উদ্বিগ্ন বাবা-মা-অভিভাবকও। সবার একটিই প্রশ্ন, ভালো বা পছন্দের কলেজে ভর্তি মিলবে তো?
সাধারণত অন্যান্য বছর ফলপ্রকাশের এক সপ্তাহের মধ্যে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু করোনার কারণে এবার সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানান ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক।
তিনি বলেন, ভর্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে অনেক কাজ জড়িত। কলেজ ও মাদ্রাসার নিজস্ব কার্যক্রম আছে। ভর্তি শুরু করা হলে শিক্ষার্থীদের কাজে বাইরে বের হতে হবে। বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট কলেজ বা মাদ্রাসায় এবং অনেককে দোকানে আবেদন ফরম পূরণ করতে যেতে হবে। আবার ভর্তির ফলপ্রকাশের পর বোর্ডে দৈনিক ৪-৫ হাজার শিক্ষার্থীর আসা-যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে অতীতে। এতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে ভর্তির ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ইতোপূর্বে প্রধানমন্ত্রী সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কথা বলেছেন। রোববার ফলপ্রকাশের সময়ও তিনি এ নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি কিছুতেই শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিতে ফেলতে চান না। যে কারণে এসএসসির ফলও প্রকাশ করা হয়েছে সম্পূর্ণ ডিজিটাল মাধ্যমে। ফলপ্রকাশের সময়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি এমপি বলেন, ‘ক্লাস কতদিন বন্ধ থাকবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে যখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে, তখন ক্ষতি কীভাবে পোষানো যায় সে চেষ্টা আমাদের থাকবে।’
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, সেপ্টেম্বরে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হতে পারে। সেটা ধরেই ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। আমরা সার্বিকভাবে প্রস্তুত আছি। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
৯৫ শতাংশ আসনে মেধায় ভর্তি করা হবে। সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ পছন্দের তালিকায় দেয়া যাবে। শুধু ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে শিক্ষা বিভাগীয়, প্রবাসী ও বিকেএসপি এবং বিভাগীয় বা জেলা কোটা। তবে প্রবাসী ও বিকেএসপির শিক্ষার্থী এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী বিশেষ বিবেচনায় ভর্তি করা হবে। প্রতিবন্ধী, প্রবাসী ও বিকেএসপি শিক্ষার্থীরাও এ সুবিধা পাবে।
Discussion about this post