বিশেষ প্রতিবেদক
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবছর জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন শিক্ষার্থী। যা গতবছরের তুলনায় ৩০ হাজারেরও বেশি। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক জিপিএ-৫ পাওয়ার পরও এবছর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা। ভালো ফল পেয়েও নিজের পছন্দের সেরা কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে অনেকের মাঝেই দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। কেননা সারা দেশে ভালো মানের কলেজে আসন রয়েছে মাত্র ৫০ হাজার। অর্থাৎ ৮৬ হাজার মেধাবী শিক্ষার্থী ভালো কলেজে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।
জানা যায়, দেশে মানসম্মত কলেজের সংখ্যা প্রায় ১৭৫টি। এসব কলেজে ৫০ হাজারের মতো আসন রয়েছে। আর এ বছর জিপিএ-৫ পাওয়া ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জনই এ আসনগুলোর একটি দখল করতে চাইবে। সেই হিসেবে জিপিএ-৫ পেয়েও ৮০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী প্রথম সারির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবে না। এদের অধিকাংশই বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। এ অবস্থায় জেলা ও জেলার বাইরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মানোন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক একরামুল কবির গণমাধ্যমকে জানান, গত বছরের তুলনায় এবার জিপিএ-৫ এবং পাসের হার দুটিই বেড়েছে। এতে করে শিক্ষার্থীরা ভর্তি নিয়ে একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে পারে। কেননা বেশিরভাগ ভালো রেজাল্টধারী শিক্ষার্থীরা ভালো প্রতিষ্ঠান পছন্দ দিয়ে থাকে। তিনি আরও জানান, কয়েক ধাপে আবেদন করেও অনেক শিক্ষার্থী নিজেদের পছন্দের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পায় না। এক্ষেত্রে ভালো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সুবিধা মতো বদলির সুযোগ রাখা প্রয়োজন, এতে জেলাভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের মান বাড়বে, শিক্ষার্থীরা সেখানে যেতে আগ্রহী হবে।
এদিকে, এবারের এসএসসি ও সমমানের ফলাফলে দেখা গেছে, পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮২ দশমিক ৮৭ শতাংশ। ২০ লাখ ৪০ হাজার ২৮ জন শিক্ষার্থী চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়, তাদের মধ্যে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন পাস করেছে। করোনার মধ্যেও মাধ্যমিকের ফল প্রকাশে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে পাসের হারে গত কয়েক বছরের মতো এবারও শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড। বোর্ডটিতে পাসের হার ৯০ দশমিক ৩৭ শতাংশ। ৭৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ পাসের হার নিয়ে এবারও সবার নিচে অবস্থান করছে সিলেট বোর্ড। এবার ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮২ দশমিক ৩৪, কুমিল্লায় ৮৫ দশমিক ২২, বরিশালে ৭৯ দশমিক ৭০, যশোর বোর্ডে ৮৭ দশমিক ৩১, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৮৪ দশমিক ৭৫, দিনাজপুর বোর্ডে ৮২ দশমিক ৭৩ ও ময়মনসিংহ বোর্ডে ৮০ দশমিক ১৩ শতাংশ। এছাড়া মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮২ দশমিক ৫১ শতাংশ। এবার দুই লাখ ৭৬ হাজার ৮১৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে দুই লাখ ২৮ হাজার ৪১০ জন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে এবছর পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৯০৫ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৯৫ হাজার ৮৯৫ জন। মোট পাসের হার ৭২ দশমিক ৭০ শতাংশ।
Discussion about this post