অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর অনেক দেশেই নানা প্রচারণায় কান দিয়ে নিজে থেকে ওষুধ গ্রহণের প্রবণতা বেড়েছে। এতে হীতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কিছুতেই ওষুধ সেবন করা ঠিক নয়। মহামারির এ সময় কিছু বিষয়ে সচেতন থাকলে করোনা মোকাবিলা করা সম্ভব।
• জ্বর বা করোনার কোনো উপসর্গ দেখা দিলে আতঙ্কিত না হয়ে পরিবারের অন্যদের থেকে আলাদা হয়ে যান। তারপর নিবিড়ভাবে নিজের উপসর্গগুলোকে লক্ষ করুন। করোনার সংক্রমণে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মৃদু উপসর্গ দেখা দেয়। উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসায় রোগী সেরে ওঠেন। তাই বলে সমস্যাকে একেবারে গুরুত্ব না দেওয়াও ঠিক নয়। এতে নিজের ও পরিবারের বিপদের কারণ হতে পারে। মহামারির এ সময় যেকোনো জ্বর বা সন্দেহজনক উপসর্গকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।
• জ্বর, ডায়রিয়া, কাশি দেখা দিলে নিজে নিজে চিকিৎসা না করে আগে ৩৩৩ অথবা ১৬২৬৩ নম্বরে কল দিন, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বাড়ির কাছের কোনো কেন্দ্রে গিয়ে নমুনা দিয়ে আসুন।
• করোনা শনাক্ত হলে জ্বরের জন্য সাধারণ প্যারাসিটামল সেবন করুন। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন, মিনারেলস খেতে পারেন। কাশি থাকলে গরম ভাঁপ নিন, গরম আদা চা–পান করুন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। পুষ্টিকর খাবার খান।
• রোগ শনাক্ত হওয়ার আগেই ওষুধ খেলে আসল রোগ ধরা না–ও পড়তে পারে। আবার ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে। এ সময় ডেঙ্গু, নিউমোনিয়া বা টাইফয়েডের কারণেই জ্বর হতে পারে। কাজেই শুরুতেই অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে ফেললে আসল রোগ নির্ণয়ে সমস্যা হতে পারে।
• শ্বাসকষ্টের কারণ যে শুধু করোনা, তা নয়। হাঁপানি, ক্রনিক ব্রংকাইটিস, হৃদ্রোগ ইত্যাদি নানা কারণেও এ সমস্যা হতে পারে। কাজেই নিজে নিজে ওষুধ খেয়ে নিলে এ ক্ষেত্রেও আসল রোগ ধরা নাও পড়তে পারে। ফলে সমস্যা জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
• শুধু পিসিআর টেস্ট রিপোর্ট নয়, আরও কিছু আনুষঙ্গিক রিপোর্টের ভিত্তিতেও করোনা চিকিৎসা করা হয়। কাজেই নিজে নিজে ওষুধ খাওয়া শুরু করে দিলে অন্যান্য সমস্যা যেমন রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা, ফুসফুসের নতুন কোনো জটিলতা, যকৃত বা কিডনির সমস্যা ইত্যাদি অচিহ্নিতই রয়ে যাবে।
লেখক: বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ
Discussion about this post