চট্টগ্রাম নগরীর ১২ থানাকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হটস্পট বা রেড জোন হিসেবে শনাক্ত করেছে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ এর উপরে শনাক্ত হওয়ায় এসব থানাকে রেড জোন হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ জুন) চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। তালিকায় ৩২৪ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায় শীর্ষে রয়েছে কোতোয়ালী থানা।
এছাড়া পাঁচলাইশে ২১৫, খুলশীতে ১৮৩, পতেঙ্গায় ১৬৮, হালিশহরে ১৬৭, ডবলমুরিংয়ে ১৪১, বন্দরে ১২৩, পাহাড়তলীতে ১১৪, ইপিজেডে ১১২, বন্দরে ১১১, চকবাজারে ১১১ ও চান্দগাঁওয়ে ১০৬ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায় এসব থানাকে রেড জোনে রাখা হয়েছে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ১০০ এর উপরে যেসব থানায় করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে, সেসব থানাকে রেড জোনে রাখা হয়েছে। যেসব থানায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ থেকে ৯০ এর মধ্যে সেসব থানাকে ইউলো জোনে, ১ থেকে ১০ জনের মধ্যে থাকা এলাকা ব্লু জোনে এবং আক্রান্তের সংখ্যা শূন্য থাকা এলাকাকে গ্রিন জোনে রাখা হয়েছে।
এদিকে, নগরীতে করোনা আক্রান্ত সংখ্যার সাথে বাড়ছে ভবন ও কাঁচা ঘর লকডাউন সংখ্যা। এখন পর্যন্ত লকডাউনের কবলে পড়ছে ৬টি ঝুকিপূর্ণ জোনের ৭৩২ টি এলাকার ৯৪০ টি ভবন ও ১ হাজারেরও বেশি কাঁচা ঘর।
নগর পুলিশের বিশেষ শাখা (সিটিএসবি)সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত নগরীতে করোনো আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩০০ জন। এরমধ্যে সাধারণ নাগরিক, ডাক্তার, আইনজীবী ও সরকারি চাকরিজীবীর পাশাপাশি ১৬৮ জন আইন শৃংখলা বাহীনির সদস্যও রয়েছেন। নগরীতে এ পর্যন্ত ৭৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তার মধ্যে ২ হচ্ছেন সিএমপির সদস্য।
গত ৩ এপ্রিল সর্ব প্রথম নগরীতে করোনা রোগী পাওয়া যায় গত এপ্রিলের ৩ তারিখ। প্রথম সে রোগীর বাসা ছিল চকবাজার থানার দামপাড়া মসজিদ গলির একটি তিন তলা ভবনে। সেখান থেকে শুরু হয়ে পাহাড়তলী, দামপাড়া পুলিশ লাইন, কাট্টলি, চান্দগাঁও ও চকবাজার হয়ে এখন ছড়িয়ে পড়েছে সব থানা এলাকায়। মোট ৭৩২ টি এলাকায় এখন করোনা ভাইরাসের প্রকোপ রয়েছে। ধীরে ধীরে সেটির পরিধিও বাড়ছে।
সিটিএসবি জানায়, নগরীর ১৬ থানার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত সংখ্যা কোতোয়ালি থানা এলাকায়। ৩২৪ জন নিয়ে বর্তমানে এ থানা এলাকাটি-ই রয়েছে শীর্ষে। এরপরে ২১৫ জন নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাঁচলাইশ।
বাকী থানাগুলোতে করোনা রোগী রয়েছে যথাক্রমে বাকলিয়ায় ৯৯ জন, চকবাজার ১১১ জন, সদরঘাট ৮৬ জন, চান্দগাঁও ১০৬ জন, বায়েজিদ ৯৯ জন, খুলশী ১৮৩ জন, ডবলমুরিং ১৪১ জন, পাহাড়তলী ১১৪ জন, হালিশহর ১৬৭ জন, আকবরশাহ ১১১ জন, ইপিজেড ১১২ জন, বন্দর ১২৩ জন ও পতেঙ্গা ১৬৮ জন। এছাড়া ঠিকানা অসম্পূর্ণ এমন করোনা রোগী রয়েছে ৮৬ জন।
সিটিএসবির উপ-কমিশনার আব্দুল ওয়ারিশ বলেন, ‘গত ৩ এপ্রিল নগরীতে করোনা আক্তান্ত রোগী পাওয়া যায়। সেদিন দামপাড়ায় প্রথম নগরীর কোনো ভবন লকডাউন করা হয়। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ভবন ও কাঁচা ঘর লকডাউন করা হয়েছে। আক্রান্ত সংখ্যা বাড়ার কারণে এবং সিএমপির জনবল সংকটের কারণে ভনগুলোতে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে নিয়মিত মনিটরিং করে লকডাউনকৃত ভবন ও কাঁচা ঘরগুলো পরিদর্শন করা হয়।’
Discussion about this post