নিউজ ডেস্ক
দেশের সব জেলার ডিসি, সিভিল সার্জন এবং সিটি করপোরেশনের মেয়রদের কাছে এলাকাভিত্তিক লাল, হলুদ ও সবুজ জোন ঘোষণার বিষয়ে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এতে প্রাথমিকভাবে তিনটি জেলা গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী এবং ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যথাক্রমে রাজাবাজার ও ওয়ারী এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে জোনিং সিস্টেম বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে।
সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ অনুযায়ী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ এই গাইডলাইন পাঠিয়ে অফিসে আদেশ জারি করেছেন। এতে বলা হয়েছে, ‘কভিড-১৯ রোগের চলমান ঝুঁকি বিবেচনায় বাংলাদেশের যেকোনো ছোট বা বড় এলাকাকে লাল, হলুদ বা সবুজ জোন হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে। জোন ব্যবস্থাপনা ‘বাংলাদেশ রিস্ক জোন বেজড কভিড-১৯ কনটেইনমেন্ট ইমপ্লিমেন্টেশন স্ট্র্যাটেজি/গাইড অনুসরণ করে বাস্তবায়ন করতে হবে।’ এ আইনের ৩০ ধারা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জনের কাছে জোনিং সিস্টেম ঘোষণার ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সিভিল প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা ও সশস্ত্র বাহিনী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় জোনিং কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবেন।
আদেশে বলা হয়েছে, সুনির্দিষ্টভাবে সংশ্লিষ্ট এলাকার কোন অংশে জোনিং সিস্টেম কার্যকর হবে এবং এর পরিধি কী হবে, তা প্রয়োজন অনুসারে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে। গাইডলাইন অনুযায়ী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একটি কেন্দ্রীয় কারিগরি গ্রুপ তৈরি করবে। এই কমিটি সময়ে সময়ে জোনিং সিস্টেমের সংজ্ঞা পর্যালোচনা করবে এবং সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে পর্যালোচনা করে জোনিং সিস্টেমের সংজ্ঞা ও বাস্তবায়নপ্রক্রিয়া পরিবর্তন করতে পরামর্শ দেবে। পরিবর্তিত কৌশল/গাইডলাইন সবাইকে অবহিত করা হবে। সব সময় পরিবর্তিত গাইডলাইন অনুযায়ী জোনিং সিস্টেম বাস্তবায়ন করতে হবে।
বিদ্যমান বা নতুন এলাকায় জোনিং সিস্টেম প্রস্তাব বা পরিবর্তনের জন্য প্রতিটি সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা ও উপজেলায় স্থানীয় কমিটি থাকবে। বিদ্যমান কভিড-১৯ প্রতিরোধ সংক্রান্ত কমিটিগুলোও এই দায়িত্ব পালন করতে পারবে। কমিটি জোনিং সিস্টেমের হালনাগাদ সংজ্ঞা ও বাস্তবায়ন কৌশল অনুযায়ী অব্যাহতভাবে স্থানীয় পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে এবং জোনিং সিস্টেম চালু করতে হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতামত চাইবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কেন্দ্রীয় কারিগরি কমিটির মতামত সাপেক্ষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
বাস্তবায়নাধীন জোন এলাকায় কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলাচল, ছুটি ও দায়িত্ব পালন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তর প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে। এরই মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় পরীক্ষামূলক লকডাউন কার্যক্রম চলছে। সেখানে লকডাউনের কারণে আটকে পড়া অনেক সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিস করতে পারছেন না। সেখানে সাধারণ ছুটিও ঘোষণা করা হয়নি। এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম সাধারণ ছুটির বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে গত বুধবার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, তাঁরা এই বিষয়টি ভেবে দেখছেন।
এদিকে নরসিংদীর মাধবদী পৌরসভার দুটি ওয়ার্ডকেও প্রাথমিকভাবে রেড জোন ঘোষণা করার কথা। গতাকাল এ তথ্য জানিয়েছেন জেলার ডিসি সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন। জানা গেছে, ডিসিদের মধ্যে তিনিই প্রথম জোনভিত্তিক লকডাউনের একটি প্রস্তাব (এসওপি) দিয়েছিলেন। সেটি যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন করেছে সরকার। ফারহানা কাউনাইন বলেন, ‘আমার দেওয়া প্রস্তাব চূড়ান্ত হওয়ায় ভালো লাগছে। তবে ওয়ার্ডভিত্তিক লকডাউনের জন্য আমাদের আরো অনেক কাজ করতে হবে। এসংক্রান্ত একটি পৃথক এসওপিও তৈরি করে ফেলেছি আমরা। আশা করি সফল হব।’
Discussion about this post