অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ বিনিয়োগ ও ব্যবসার ক্ষেত্র অধিকতর সম্প্রসারণের জন্য একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) এবং ইউএস চেম্বারের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ সময় বুধবার সন্ধ্যায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সকালে অনুষ্ঠিত একটি অনলাইন সম্মেলনে (ওয়েবিনার) এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
যেখানে পিএমও এবং রাজধানীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনও ভিভিও কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিল। এ সময় তারা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কারিগরি পর্যায়ে একাধিক সভা আয়োজন এবং বাংলাদেশ-ইউএস বাণিজ্য কাউন্সিল গঠন করার বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখার বিষয়েও সম্মত হন।
প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী এই বিশেষ সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
ডিজিটাল প্লাটফর্মে সম্মেলনটি পিএমও থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং ইউএস চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নিশা বিসওয়াল যৌথভাবে সঞ্চালন করেন।
বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোর মধ্যে এফবিসিসিআই, এমসিসিআই, ডিসিসিআই, বিজিএমইএ, বেসিস, এলএফএমএবি, বিএপিআই এবং বাংলাদেশ-মার্কিন যৌথ বিনিয়োগ ও ব্যবসা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ সম্মেলনে সংযুক্ত ছিল। অন্যদিকে মার্কিন চেম্বারের পক্ষে শতাধিক মার্কিন কোম্পানি ও উদ্যোক্তাসহ ইউএসটিআর, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষাপটে স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য অব্যাহত রাখা, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থাপনা সংহতকরণ এবং বিদ্যমান প্রেক্ষাপটে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনাময় প্রেক্ষিত বিবেচনায় দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগক্ষেত্রসমূহ সম্প্রসারিত করার প্রতিপাদ্য নিয়ে এ অনলাইন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
মার্কিন চেম্বারের পক্ষে নিশা বিসওয়াল স্বাগত বক্তব্য প্রদানের পর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অগ্রগতির চিত্র এবং সাম্প্রতিক কোভিড-১৯ মহামারির ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন আর্থিক ও অ-আর্থিক প্রণোদনা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।
প্রসঙ্গত, তিনি মার্কিন বিনিয়োগকারীদের সহায়তা প্রদানে সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বাংলাদেশের অনুকূল বিনিয়োগ পরিবেশ এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ সুরক্ষায় আইনি বিভিন্ন দিক সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করেন। তিনি কোভিড-১৯ পরবর্তী সংকট মোকাবিলায় সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং মার্কিন বিনিয়োগকারীদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে উদাত্ত আহ্বান জানান।
এরপর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশে আইসিটি খাতের অপার সম্ভাবনার চিত্র মার্কিন বিনিয়োগকারীদের কাছে তুলে ধরেন এবং এখাতে দেশে বিদ্যমান দক্ষ জনবল বিষয়ে তাদের অবহিত করেন। তিনি বাংলাদেশ হাইটেক পার্কে বিনিয়োগের বিভিন্ন সুবিধাদি বিস্তারিতভাবে অবহিত করেন এবং আইসিটি খাতে বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেন।
এ সময় ইউএস চেম্বারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার ভূয়সী প্রশংসা করা হয় এবং বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়নে মার্কিন আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
সম্মেলনে যোগদানকারী মার্কিন কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- টার্গেট, শেভরন, প্রাইমা ডলার, জারা, এক্সন, মবিল, হেলথ কেয়ার ইত্যাদি।
কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন সিইও বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিবেশ এবং বিনিয়োগ সুরক্ষার বিভিন্ন কারিগরি ও আইনি দিক সম্পর্কে খোলামেলা আলোচনা করেন। তারা বিনিয়োগ ও বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য ও সেবা আমদানিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
Discussion about this post