নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, পুলিশি সহায়তা পেতে জনগণকে এখন পুলিশের কাছে আসতে হয়। এমন একটি ব্যবস্থা চালু করতে চাই, যাতে জনগণকে পুলিশের কাছে আসতে না হয়, বরং পুলিশই জনগণের কাছে সেবা নিয়ে যাবে।
রোববার (২১ জুন) রাতে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট প্রধান এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পুলিশ সদরদপ্তর থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদানকালে তিনি এ কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, আমাদের দেশের প্রতিটি ইউনিয়নকে একেকটি বিটে ভাগ করে প্রতিটি বিটের দায়িত্বে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়োজিত করা হবে। তিনি নিয়মিত ওই ইউনিয়নের মানুষের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা ইত্যাদির খোঁজ রাখবেন, প্রতিনিয়ত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন, তাদের মতামত জানবেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের সমস্যার সমাধান করবেন এবং কাঙ্ক্ষিত সেবা দেবেন।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা, ময়মনসিং এবং সিলেটে বিট পুলিশিংয়ের সাফল্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব এলাকায় বিট পুলিশিং সফল হয়েছে। আমরা সারাদেশে বিট পুলিশিং চালু করতে চাই, মানুষের কাছে যেতে চাই, মানুষের হৃদয় জয় করতে চাই।
বর্তমান করোনাকালে পুলিশের সেবার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, করোনার সময় জনগণকে আমাদের কাছে আসতে হয়নি। আমরা জনগণের কাছে গিয়েছি, তাদের পাশে থেকেছি, তাদের করোনা সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখতে গিয়ে নিজেরা আক্রান্ত হয়েছি, জীবন বিলিয়ে দিয়েছি। তাদের বাসায় খাবার পৌঁছে দিয়েছি, যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছি, তাদের ধান কাটার ব্যবস্থা করেছি, করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তির আপনজনরা যখন কাছে আসেনি তখন আমরা তার দাফন এবং সৎকারের ব্যবস্থা করেছি।
এসব আমাদের দায়িত্ব ছিল না, কিন্তু আমরা মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে কাজটি করেছি। প্রধানমন্ত্রী এ ভূমিকার জন্য আমাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। দেশবাসী আমাদের প্রশংসা করছেন। দেশের জ্ঞানী গুণী ব্যক্তিরা আমাদের পক্ষে কলম ধরেছেন। আমরা মানুষের মনের মণিকোঠায় স্থান করে নিতে পেরেছি।
তিনি বলেন, একদিন করোনা থাকবে না, তখনও মানুষের আস্থা, ভালোবাসা ধরে রাখার জন্য আমাদের নিরন্তর প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ ও মানুষের কল্যাণে একযোগে কাজ করতে হবে।
আইজিপি বলেন, মানুষকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে, তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ কর্মকর্তা ও ফোর্সেরও সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা হবে। বর্তমানে কোনো পুলিশ সদস্য চাকরিরত অবস্থায় নিহত হলে অথবা কঠিন রোগে আক্রান্ত হলে তাকে ও তার পরিবারকে আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হয়। আমরা চাকরিরত অবস্থায়ই পুলিশ কর্মকর্তা ও ফোর্সের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে চাই। তাদের সন্তানদের লেখাপড়া, চিকিৎসাসহ অন্য সুবিধা নিশ্চিত করতে চাই, যাতে তারা নির্বিঘ্নে জনগণকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে পারেন।
বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর আধুনিক সমরাস্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা শুধুমাত্র থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার জন্য নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকেও উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ হিসেবে তৈরি হতে হবে।
আইজিপি তার বক্তব্যের শুরুতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে গিয়ে আত্মদানকারী পুলিশ সদস্যদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং যারা অসুস্থ রয়েছেন তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
Discussion about this post