নিজস্ব প্রতিবেদক
খেলতে খেলতে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের গণিত শেখানোর উদ্যোগ কার্যকর করতে অনলাইনে শিক্ষকদের জন্য অলিম্পিয়াড প্রশিক্ষণ শুরু করতে যাচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। প্রতিটি বিদ্যালয়ের কম বয়সী দুই জন শিক্ষককে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আগামী জুলাই থেকে এক লাখ ৩২ হাজার শিক্ষকের জন্য এই প্রশিক্ষণ শুরু হবে। আর করোনাকালীন ছুটি শেষ হলেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণিত অলিম্পিয়াডের কার্যক্রম শুরু করা হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গণিত অলিম্পিয়াডের জন্য ২০১৮ সালে পাইলট প্রকল্প শুরু করা হয়েছিল। ‘গণিত অলিম্পিয়াড কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের গাণিতিক দক্ষতা বৃদ্ধির সম্ভাব্যতা যাচাই’ শীর্ষক এই সমীক্ষা প্রকল্প সফল হওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২০২১ সাল থেকে সারাদেশে গণিত অলিম্পিয়াডের পদ্ধতি ছড়িয়ে দিতে হবে। পরে দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ২০২০ সাল থেকে গণিত অলিম্পিয়াড শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় হয়। এ লক্ষ্যে শিক্ষকদের মধ্য থেকে ‘মাস্টার ট্রেইনার’ তৈরির প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। তিন হাজার শিক্ষককে মাস্টার ট্রেনইনার হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ২০ শতাংশ শিক্ষকের প্রশিক্ষণ বাকি থাকে। তবে শিগগিরই এই ২০ শতাংশ মাস্টার ট্রেইনারের প্রশিক্ষণ শেষে জুলাই থেকে এক লাখ ৩২ হাজার শিক্ষকের জন্য অনলাইনে প্রশিক্ষণ শুরু হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কম বয়সী দুই জন করে শিক্ষককে অনলাইনে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এজন্য মাস্টার ট্রেইনারদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ কনটেন্ট তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর করোনার ছুটি শেষ হলে এদেরকে আবারও সরাসরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এরপর শিক্ষার্থীদের গণিত ভীতি দূর করতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে গণিত অলিম্পিয়াডের কৌশল অবলম্বন করে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত গণিত শেখাবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ্ বলেন, ‘খেলতে খেলতে শিশুরা যাতে গণিত শিখতে পারে, সে জন্য প্রথমে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। করোনার কারণে দীর্ঘ ছুটি থাকায় অনলাইনেই কয়েকটি সেশনে প্রশিক্ষণ শুরু করা হবে। আগামী জুলাই থেকে শিক্ষক প্রশিক্ষণ শুরু হবে।’
মো. ফসিউল্লাহ্ আরও বলেন, ‘‘পাইলট প্রকল্প সফল হয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম, ২০২০ সালে গণিত অলিম্পিয়াড করবো। করোনার কারণে এখন তা করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি, করোনার ছুটি শেষ হলে গণিত অলিম্পিয়াড করবো। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আগে ৮০ শতাংশ ‘মাস্টার ট্রেইনার’ এর প্রশিক্ষণ শেষ করেছি। বাকি ২০ শতাংশের প্রশিক্ষণ অনলাইনে করানো হবে। এরপর প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে দুই জন করে ইয়াং শিক্ষককে অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শিক্ষকদের পাশাপাশি উপজেলা ও থানা শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্টরাও এই প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন। মুজিববর্ষেই গণিত অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হবে।’
Discussion about this post