নিজস্ব প্রতিবেদক
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, দক্ষতাভিত্তিক কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কম। এ কারণে সরকার সময় উপযোগী কারিগরি শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য ভবিষ্যতে মোট শিক্ষার্থীর ৫০ শতাংশকে কারিগরি শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা।
একশনএইড বাংলদেশ ও ডেইলি স্টারের যৌথ উদ্যোগে ‘বাংলাদেশে কোভিড-১৯ সংকট সম্পর্কে যুবদের দৃষ্টিভঙ্গি: জাতীয় বাজেটের প্রতিফলন ২০২০-২১’ শীর্ষক এক অনলাইন সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্ত্যব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, প্রথাগত শিক্ষার বাইরে এসে বাস্তব প্রয়োজনীয়তার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাব্যবস্থাকে উৎসাহিত করা, শহরমুখী প্রবণতা কমিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে শিক্ষা এবং কর্মস্থানের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন আনতে হবে। সরকার এরইমধ্যে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমাদের উচ্চশিক্ষার মান এখনও আন্তর্জাতিক মানের নয় যে, আমরা দেশের বাইরে গিয়ে ভালো কর্মসংস্থানের সুযোগ পেতে পারি।
কোভিড পরিস্থিতিতে পরিবর্তিত চিন্তার সময় এসেছে উল্লেখ করে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ধনী হওয়া লক্ষ্যের চেয়ে টেকসই মানব উন্নয়নের দিকে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে এবং এই লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের প্রফেসর ড. আতিউর রহমান বলেন, যে হারে মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে, সেটা যদি আমরা এখনই রোধ করতে না পারি, স্বাস্থ্যখাতকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা যদি মানুষকে আশ্বস্ত করতে না পারি, তাহলে সব ব্যর্থ।
স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়লেও তাদের দক্ষতা এখনও নাজুক উল্লেখ করে প্রায় দুই লাখ স্বাস্থ্যকর্মী জরুরি ভিত্তিতে প্রস্তুত ও তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তুলতে হবে। চিন্তা, ভাবনা, ও কর্মে তরুণরাই সবচেয়ে এগিয়ে উল্লেখ করে নীতি নির্ধারণে তরুণদের ভাবনাকে অন্তর্ভূক্ত করার প্রতিও জোর দেন ড. আতিউর।
করোনা পরীক্ষার যন্ত্রপাতি ও টেস্ট কিট প্রান্তিক পর্যায়ে সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং সেখানে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে যুব ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার কথাও বলে ড. আতিউর রহমান।
সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্ক ওন ইকোনোমিক মডেলিং (সানেম) এর নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. সেলিম রায়হান তার বক্তব্যে বলেন, করোনা পরিস্থির কারণে তরুণ, নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে বাজেটে এই বিষয়ে বিশেষ কোনো প্রতিফলন দেখছি না।
করোনা পরিস্থিতি মাথায় রেখে বিভিন্ন খাতকে নতুনভাবে সাজানোর কথা উল্লেখ করে একশনএইড বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, আনুষ্ঠানিক খাতে বাংলাদেশের প্রায় ৮৫-৯০ শতাংশ মানুষ কাজ করে, করোনার কারণে সেই খাতগুলোতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। মানুষ কাজের জন্য গ্রাম থেকে শহরমুখী ছিল, এখন অনেকেই কর্ম হারিয়ে গ্রামে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে এই বাজেট দেখতে চান বলে তিনি আরও উল্লেখ করেন, যুবদের জন্য অনলাইনে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যখাতেও যুবদের কথা চিন্তা করে বাজেট প্রণয়ন প্রয়োজন।
গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার মোস্তফা বলেন, যুবদের বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রণের সুযোগ না থাকলেও স্থানীয় সরকার এই প্রক্রিয়ায় তাদের যুক্ত করতে পারে।
আরও বক্তব্য দেন, প্রথম আলো ইয়ুথ প্রোগ্রাম প্রধান মুনির হাসান, বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টারের (বিওয়াইএলসি) সভাপতি ইজাজ আহমেদ, এসএমই ফাউন্ডেশনের পরিচালক ইসমত জেরিন খান ও ডিনেট নির্বাহী পরিচালক অনন্য রায়হান।
Discussion about this post