নিজস্ব প্রতিবেদক
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে পড়েছে। আগের চেয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সময় কমেছে ৮০ শতাংশ। অর্থাৎ স্বাভাবিক সময়ে ১০ ঘণ্টা পড়াশোনায় ব্যয় করলেও এখন ২ ঘণ্টার বেশি কেউই পড়াশোনা করছে না। অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা দিনপ্রতি পড়াশোনা করছে ৮ ঘন্টা।
সম্প্রতি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) আয়োজিত একটি ওয়েবিনারে গবেষণার ফলাফলে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণায় বলেছে, সরকার টেলিভিশনের মাধ্যমে ‘ঘরে বসে শিখি’ ও ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ নামে দুটি পাঠ কার্যক্রম চালু করেছে, যা দেখছে মাত্র ১৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। ১ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাস করছে। শিক্ষার্থীদের ৬২ ভাগের বাসায় টিভি এবং ৩০ ভাগের বাসায় ইন্টারনেট সুবিধা আছে।
গবেষণায় মূলত গ্রামীণ বাংলাদেশকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এতে ৫ হাজার ১৯৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করেছে বিআইজিডি। ৭৫ শতাংশ গ্রামের শিক্ষার্থী এবং শহরের বস্তির শিক্ষার্থী ২৫ শতাংশ। গত মে মাসে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেয়ে ৫৫ ভাগ ও ছেলে ৪৫ ভাগ, প্রাথমিক ৩৪ এবং মাধ্যমিক ৬৬ শতাংশ। বেসরকারি স্কুল ৫৭, সরকারি ৩৩ এবং মাদ্রাসা ১০ শতাংশ।
গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার এই সময়ে শিক্ষার্থীদের শ্রমের হার বেড়েছে। আয়মূলক কাজে ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জড়িত থাকলেও এখন এই হার বেড়ে হয়েছে ১৬ শতাংশ। পাশাপাশি শিক্ষার্থীর মনোকষ্ট, ভয় ও দুশ্চিন্তাও বেড়েছে। অন্য দিকে কমেছে শিক্ষার্থীদের আনন্দ। পড়াশোনা ও সৃজনশীল কাজকর্ম ছাড়া অন্যান্য কারণে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষার্থীরা গড়ে সময় কাটাচ্ছে ৩৮১ মিনিট।
গবেষণায় বলা হয়, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। যাদের বাবা-মায়ের পড়াশোনা অন্তত এসএসসি পাস বা তার বেশি তারা টিভিতে ও অনলাইনে ক্লাস বেশি করে।
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন বলেন, আমাদের দেশের মূল শক্তি হলো কমিউনিটি-ভিত্তিক উদ্ভাবনী পদক্ষেপ। করোনায় এই মূল শক্তিটিকে অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। সেটি হতে পারে সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পে কিংবা শিক্ষা খাতে ডিজিটাল ব্যবস্থার উদ্ভাবনে। আমাদের অবশ্যই হাতে হাত মিলিয়ে এ ব্যাপারে কাজ করতে হবে।
Discussion about this post