নিজস্ব প্রতিবেদক
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, করোনা মহামারি একটি বৈশ্বিক সঙ্কট, যেটি শিক্ষা ব্যবস্থাকে এক ধরনের সঙ্কটে ফেলেছে। প্রতিটি সঙ্কটই সম্ভাবনার নতুন দিক উন্মোচন করে। করোনা শিক্ষা ব্যবস্থায় অনলাইন শিক্ষা (ই-লার্নিং) কার্যক্রম ব্যবহার বাড়াতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করেছে।
শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘ই-লার্নিং’ শীর্ষক ওয়েবিনারে তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের বর্তমান শিক্ষানীতি ২০১০ সালে প্রণয়ন করা হয়েছে, এটাকে যুগোপযোগীকরণ এবং সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিক্ষানীতিতে ই-লার্নিংকে আরও বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে।
মন্ত্রী জানান, দেশের মানুষ অত্যন্ত প্রযুক্তিবান্ধব, যার কারণে বিশেষ করে শিক্ষাকার্যক্রমে ই-লার্নিংয়ের ব্যবহার বৃদ্ধিতে আমাদের জন্য খুব বেশি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে না। সামনের দিনগুলোতে ক্লাশরুমে সরাসরি শিক্ষাদান কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমে ‘ই-লার্নিং’ কার্যক্রম চালু রাখতে এবং শিক্ষার্থীদের নতুন নতুন বিষয়ে দক্ষতা উন্নয়নে ‘ই-লার্নিং’ কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও এ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে এবং করোনা মহামারি মোকাবিলায় সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। সামনের দিনে কী ধরনের দক্ষ লোকবল প্রয়োজন হবে, একটি প্রাক নির্বাচনের মাধ্যমে সে অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম, অবকাঠামো এবং শিক্ষকদের দক্ষতা উন্নয়ন করতে হবে। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা আরও সম্প্রসারণে মানসিকতা একটি বড় বাধা বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মেধাবীদের শিক্ষা কার্যক্রমে নিয়ে আসতে এ পেশাকে আরও আকর্ষণীয় এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরও দক্ষ করে তুলতে হবে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও বেশি বেশি গবেষণা পরিচালনায় তাগিদ দেন তিনি। বর্তমানে দেশের ১৭ শতাংশ শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় রয়েছে। তিনি পরীক্ষা এবং সনদ সর্বস্ব শিক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত মানুষ গড়া সম্ভব নয় বলে মত প্রকাশ করেন এবং শিল্পখাত ও শিক্ষাব্যবস্থার সমন্বয় আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন।
ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাজ্যের ‘ইউনির্ভাসিটি অব সারের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ওসামা খান।
মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, ই-লার্নিংয়ের ক্ষেত্রে সেবা প্রদানের জন্য ইন্টারনেটের পাশাপাশি রেডিও, টেলিভিশন, মোবাইল ও পোস্টাল সার্ভিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এ ক্ষেত্রে পাঠ্যসূচির গুণগত মান নিশ্চিত এবং এ ধরনের শিক্ষাকার্যক্রমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর কার্যকর অংশগ্রহণ অতীব জরুরি।
তিনি আরও বলেন, কী এবং কীভাবে শিখানো হবে সেটা যথাযথভবে নির্ধারণ করা গেলে তা যথার্য হবে।
অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর রশিদ, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. কারম্যান জেড লামাংনা, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. মুরাদ হোসেন মোল্লা, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. খাজা ইফতেখার উদ্দিন আহমদ, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইশতিয়াক আজিম প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।
Discussion about this post