অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর শরীরে এর বিরুদ্ধে যে ইমিউনিটি গড়ে ওঠে তা কমপক্ষে পাঁচ থেকে সাত মাস টিকে থাকতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনার একদল গবেষক করোনায় আক্রান্ত অন্তত ৬ হাজার মানুষের শরীরের অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় নতুন এই তথ্য পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়টির সহযোগী অধ্যাপক ও গবেষক দলের সদস্য দীপ্ত ভট্টাচার্য বলেছেন, আমরা পরিষ্কারভাবে দেখতে পেয়েছি, নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পাঁচ থেকে সাত মাস পরও শরীরে উচ্চ-মানের অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে।
গবেষকরা ব্যাখ্যায় বলেছেন, যখন একটি ভাইরাস শরীরের কোষে আক্রমণ করে, তখন শরীরের ইমিউন সিস্টেম স্বল্পকালীন প্ল্যাজমা কোষকে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে মোতায়েন করে। তখন ভাইরাসটির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে এই কোষ অ্যান্ডিবডি তৈরি করে।
গবেষকরা বলছেন, দ্বিতীয় ধাপে শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা দীর্ঘকালীন প্ল্যাজমা কোষ তৈরি করে; যা শরীরে করোনার বিরুদ্ধে উচ্চ-মানের অ্যান্ডিবডি উৎপন্ন করে। এই অ্যান্ডিবডি শরীরের করোনারোধী ইমিউনিটিকে দীর্ঘমেয়াদে টিকে রাখে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে অ্যান্টিবডির মাত্রা শনাক্ত করেছেন দীপ্ত ভট্টাচার্য এবং নিকোলিস-জুগিচ। এতে তারা দেখতে পান, রক্তে করোনা আক্রান্তের প্রথম দিন থেকে অন্তত পাঁচ থেকে সাত মাস পর্যন্ত ইমিউনিটি স্থায়ী থাকে। যদিও তারা মনে করেন, শরীরে করোনার এই ইমিউনিটি আরও অনেকদিন স্থায়ী হতে পারে।
দীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, প্রথম সার্স করোনাভাইরাসে যারা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের শরীরে ১৭ বছর পর এখনও ইমিউনিটি রয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনার এই বিজ্ঞানী বলেন, নভেল করোনাভাইরাস যেহেতু সার্স করোনাভাইরাসের সমগোত্রের; সেহেতু আমরা প্রত্যাশা করছি- করোনার এই ইমিউনিটিও কমপক্ষে দুই বছর ধরে শরীরে স্থায়ী হতে পারে।
গত বছরের চীনের উহানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হওয়ার বিশ্বের দুই শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে। এতে বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৩ কোটি ৮৩ লাখ এবং মারা গেছেন ১০ লাখ ৯০ হাজারের বেশি।
বিশ্বজুড়ে করোনার তাণ্ডব চললেও এখন পর্যন্ত কোনও দেশই এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন কিংবা ওষুধ আনতে পারেনি। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, চলতি বছরেই অথবা আগামী বছরের শুরুর দিকে করোনার যেকোনও একটি ভ্যাকসিন পেতে পারে বিশ্ব।
Discussion about this post