বিশেষ প্রতিবেদক
মাধ্যমিক পর্যায়ে (৬ষ্ঠ থেকে ৯ম) শ্রেণির জন্য ৩০ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস বাস্তবায়ন শুরু হচ্ছে। রবিবার (২৫ অক্টোবর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়।আগামী ১ নভেম্বর থেকেই শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করে তা জমা দিতে হবে।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে স্থানান্তরিত শিক্ষার্থীরা যেখানে রয়েছে সেই এলাকার নিকটতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করতে এবং জমা দিতে পারবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) নির্ধারিত সময়ে অ্যাসাইনমেন্টে বিষয়বস্তু জানিয়ে দেবে।
নির্দেশনায় বলা হয়, কোভিড-১৯ সংক্রামণ রোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় প্রত্যক্ষ শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালীন সংসদ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে পাঠদান এবং স্কুল পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনলাইন শ্রেণি পাঠদান ও অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এছাড়াও শিক্ষকরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পাঠদান অব্যাহত রেখেছেন। এরকম নানাবিধ কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কতটুকু শিখন ফল অর্জন করলো তা মূল্যায়ন করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ মূল্যায়ন যেনও তাদের ওপর কোনও মানসিক ও শারীরিক চাপ সৃষ্টি করতে না করে।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিজেরাও যেন তাদের পাঠ অগ্রগতি ও দুর্বলতা সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে সেজন্য সার্বিক দিক বিবেচনা করে আটটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। এগুলো হলো:
১) এনসিটিবি কর্তৃক নির্ধারিত মাধ্যমিক পর্যায়ের জন্য ৩০ কর্ম দিবসের সিলেবাস অনুসরণ করতে হবে (www.dshe.gov.bd) ওয়েবসাইটে যথা সময় প্রকাশ করা হবে)।
২) এনসিটিবি সংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় নির্ধারিত সিলেবাস থেকে অ্যাসাইনমেন্ট (নির্ধারিত কাজ) -এর জন্য বিষয়বস্তু নির্ধারণ করেছে। বিষয়বস্তু অনুযায়ী প্রণীত অ্যাসাইনমেন্ট (নির্ধারিত কাজ) মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিকট প্রতি সপ্তাহে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রেরণ করা হবে।
৩) অ্যাসাইনমেন্ট প্রদান/গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধান শ্রেণিভিত্তিক কর্মসূচি নির্ধারণ এবং আলাদাভাবে প্রদান/গ্রহণের ব্যবস্থা করবেন। এ ক্ষেত্রে অনলাইনের সাহায্যে/সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রতিষ্ঠানপ্রধান/অভিভাবক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অ্যাসাইনমেন্ট প্রেরণ ও গ্রহণ করবেন।
৪) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অ্যাসাইনমেন্ট ব্যতীত মূল্যায়ন সংক্রান্ত অন্য কোনও কার্যক্রম (যেমন পরীক্ষা গ্রহণ, বাড়ির কাজ দেওয়া ইত্যাদি) গ্রহণ করতে পারবেন না।
৫) অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের দুর্বল দিক চিহ্নিত করবেন এবং পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে সেগুলোর ওপর বিশেষ নজর দিয়ে কাঙ্ক্ষিত শিখন ফল অর্জনের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। প্রতিষ্ঠান প্রধানরা শিক্ষকদের মূল্যায়নসহ অ্যাসাইনমেন্টগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবেন।
৬) কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে স্থানান্তরিত শিক্ষার্থীরা নিকটবর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ/জমা প্রদান করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে অভিভাবক/শিক্ষার্থী তার নিকটবর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন।
৭) এই কার্যক্রম ১ নভেম্বর থেকে শুরু হবে।
৮) এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে সকল আঞ্চলিক উপপরিচালক, জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সমন্বয় করবেন।
প্রসঙ্গত, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে গত ২১ অক্টোবর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি মাধ্যমিকের বার্ষিক পরীক্ষা বাতিল করেন। ওই দিনই তিনি জানান, ৩০ কার্যদিবসের জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করা হচ্ছে। অনলাইনে অথবা শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সপ্তাহে একটি করে অ্যাসাইনমেন্ট শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে। শিক্ষকরা তা মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থীর দুর্বলতা চিহ্নিত করবেন। তবে তা ফলাফল মূল্যায়নের জন্য নয়, পরবর্তী শ্রেণিতে ঘাটতি দূর করার জন্য। শিক্ষামন্ত্রী ওইদিন আরও জানান, যেসব বিষয় পরবর্তী শ্রেণির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয় সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এর আগে গত এইচএসসি, জেএসসি পরীক্ষাও বাতিল করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
Discussion about this post