জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
করোনা মহামারীর আঘাতে শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে হারিয়ে গেছে একটি শিক্ষাবর্ষ। শুধু দেশে নয়, বিশ্বব্যাপী ঘটেছে এই ঘটনা । এরপর বছরের শেষ ভাগে এসে দেশব্যাপী শুরু হয়েছে ধর্ষণের প্রকোপ ! বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরাই বেশির ভাগ আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। এসব বিষয় বিবেচনায় পাঠ্যপুস্তকে করোনা এবং ধর্ষণ ইস্যু দু’টিকে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
জানা গেছে, করোনাভাইরাস সম্পর্কে আরো বেশি জানতে এবং এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতেই পাঠ্যপুস্তকে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। তবে করোনা যেহেতু শুধু আঞ্চলিক কোনো বিষয় নয়, তাই আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট ও আনুসঙ্গিক নানা দিক বিবেচনায় নিয়েই শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। একইভাবে ধর্ষণ প্রতিরোধ এবং এর সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে এটিও পাঠ্যভুক্ত করা হচ্ছে।
এনসিটিবি সূত্র জানায়, আগামী ২০২১ সালের শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যসূচিতে করোনাকে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব না হলেও পরের শিক্ষাবর্ষে পাঠ্যবইয়ে করোনাভাইরাস নামে পৃথক একটি অধ্যায় শিক্ষার্থীদের সিলেবাসের মধ্যে নিয়ে আসার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেন, মানুষ গড়তে শিক্ষা হচ্ছে বড় হাতিয়ার। শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আমরা সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। বর্তমানে নারী ধর্ষণ একটি সামাজিক ব্যাধি হিসেবে পরিণত হয়েছে। প্রত্যেককে মিলে এই সামাজিক ব্যাধি দূর করতে হবে। এর জন্য সমাজে সতেচনতা সৃষ্টি করতে হবে। নারীর উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিতে নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন, নারীর মর্যাদা, ধর্ষণের কুফল ও এ সম্পর্কিত বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ধর্ষণ প্রতিরোধে একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
এদিকে বর্তমানের করোনা মহামারীর প্রেক্ষিতে এবং দীর্ঘমেয়াদে অত্যাবশ্যকীয় সচেতনতা গড়ে তোলার অংশ হিসেবে শিশুদের মধ্যে হাত ধোয়ার অভ্যাস জোরদার করতে পাঠ্যক্রমে ‘হ-তে হাত ধোয়া’ ও ‘এইচ ফর হ্যান্ডওয়াশিং’ অন্তর্ভুক্তির পরামর্শ দিয়েছে উন্নয়ন সহযোগীরা।
তারা বলেছেন, এ সময়ের করোনা মহামারী এবং দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শিশুদের মধ্যে হাত ধোয়ার অভ্যাস জোরদার করতে হবে। এজন্য পাঠ্যক্রমে ‘হ-তে হাত ধোয়া’, ‘এইচ ফর হ্যান্ডওয়াশিং’ অন্তর্ভুক্ত হলে তা কাজে আসবে।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা জানান, করোনা সম্পর্কে জানা ও সচেতন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। সময়ের প্রয়োজনে এবং বাস্তবতার আলোকে আমরা নতুন যেকোনো বিষয়কে শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও বিভাগ অনুযায়ী সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করি। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষাবিদ, গবেষক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতামত গ্রহণ করা হয়।
তিনি বলেন, করোনা একটি বৈশ্বয়িক সমস্যা। করোনা সম্পর্কে জানা ও সচেতন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। করোনাকে পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার আগে আমরা দেখবো আন্তর্জাতিকভাবে এটিকে কিভাবে অন্যান্য দেশ তাদের পাঠ্যসূচিতে নিতে চায়। তাই আমরা দেখব অন্যান্য দেশের পাঠ্যসূচিতে কিভাবে এই বিষয়টিকে উপস্থাপন করে। সেই আলোকে আমরাও সিদ্ধান্ত নেব।
Discussion about this post