বিশেষ প্রতিবেদক
আজ ৮ ডিসেম্বর। বাংলাদেশের প্রথম নারী শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির জন্মদিন। ১৯৬৫ সালের এই দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন ।ডা. দীপু মনি দশম জাতীয় সংসদে চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর-হাইমচর) এর প্রতিনিধিত্ব করছেন। তিনি এমপি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী।২০০৮ সালে আওয়ামীলীগের জয়লাভের মধ্য দিয়ে চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
আওয়ামী লীগ সরকার আমলের ২০০৯-১৩ পর্যন্ত দেশের প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দেশের হাল ধরেছেন ডা. দীপু মনি। বর্তমানে শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
দীপু মনি ১৯৬৫ সালের ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর সদর উপজেলার কামরাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র লীগের প্রথম কাউন্সিল-নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এম.এ ওয়াদুদের ২ সন্তানের মধ্যে একমাত্র কন্যা দীপু মনি। দীপু মনি’র মা শিক্ষিকা রহিমা ওয়াদুদ ছিলেন মানুষ গড়ার কারিগর।ষাটের দশকের মাঝামাঝি ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ এবং শিক্ষিকা রহিমা ওয়াদুদের ঘর আলোকিত করে জন্ম নেয়া শিশুটিই আজকের দীপু মনি ।
তিনি হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে এলএলবি পড়েন। এমবিবিএস ডিগ্রি লাভের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব পাবলিক হেলথ থেকে এমপিএইচ ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমঝোতা ও দ্বন্দ্ব নিরসন এর ওপর একটি কোর্স সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের একজন আইনজীবী ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে তিনি কমনওয়েলথ মিনিস্ট্রেরিয়াল অ্যাকশন গ্রুপ-এর প্রথম নারী এবং দক্ষিণ এশীয় চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হন। এছাড়া তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সমুদ্র জয় করে। এতে করে বাংলাদেশ সরকার প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার এবং ভারতের সাথে প্রায় চার দশকের সমুদ্র সীমা সংক্রান্ত অমীমাংসিত বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় চূড়ান্ত ভাবে নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করে।
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের এ্যাডভোকেট তৌফীক নাওয়াজ দীপু মনি`র স্বামী। তিনি আন্তর্জাতিক একটি ল’ফার্মের প্রধান। তিনি উপমহাদেশের দু’ হাজার বছরের ঐতিহ্য মন্ডিত ধ্রুপদী সঙ্গীতের উৎস হিসেবে পরিচিত ‘আলাপ’ এর একজন শিল্পী। তাঁদের রয়েছে দু’সন্তান। পুত্র তওকীর রাশাদ নাওয়াজ ও কন্যা তানি দীপাভলী নাওয়াজ।
সামাজিক উন্নয়ন ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে তার অনন্য অবদানের জন্য তিনি মাদার তেরেসা আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিলে তিনি পুনরায় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। ৬ জানুয়ারি ২০১৯-এ তিনি একাদশ জাতীয় সংসদের অধীনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। শিক্ষা মন্ত্রণালয় দায়িত্বগ্রহণের পর নানা সাফল্য দেখিয়েছেন দীপু মনি।
সবারই তিনি ‘আপা’ হিসেবে পরিচিত। ‘দীপু আপা’ নামেই বেশি পরিচিত তিনি। তাই তো সাধারণ মানুষের সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে নিজের ভোট দিয়েছেন।তিনি মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে চাঁদপুর সদর, হাইমচরের বিশাল জনগোষ্ঠীকে রক্ষার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। শতভাগ বিদ্যুতায়নের ফলে চাঁদপুরের চরাঞ্চলগুলোর মানুষ আলোর সন্ধান পেয়েছে। সাধারণের মতো জীবন-যাপন করে আপন করে নিয়েছেন সবাইকে। কোনো বাধাই তাকে আটকাতে পারেনি। তাই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে চাঁদপুরবাসী বারবার বেছে নিয়েছে দীপু মনিকে।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। রবিবার রাতে তিনি করোনা পজেটিভ হওয়ার রিপোর্ট পেয়েছেন। বর্তমানে সরকারি বাসভবনে আইসোলেশনে আছেন। তাঁর কোন শারীরিক জটিলতা নেই বলেও জানা গেছে।
এদিকে শিক্ষামন্ত্রীর জন্মদিনে তাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চাঁদপুরের বাসিন্দাসহ শিক্ষা ক্যাডারের সদস্য এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। পাশাপাশি নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকেও অভিনন্দিত হন তিনি।
‘শিক্ষার আলো’ পরিবারের পক্ষ থেকে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর শুভ জন্মদিনের অযুত শুভেচ্ছা !
Discussion about this post