নিজস্ব প্রতিবেদক
আগামী ২৬ তারিখ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অনার্স ও মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা নেয়া হবে। বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়ার পর এবার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেয়া হয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে আবাসিক হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আজ রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) ঢাবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন-৫) আব্দুল কুদ্দুছ ভূঞা স্বাক্ষরিত এ চিঠি ঢাবি প্রক্টর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা-২) ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা-৩) বরাবর পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় কোভিড-১৯ উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থীদের সেশনজট নিরসনকল্পে নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়-
১) বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের আবাসিক সুবিধা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না বিধায় সংশ্লিষ্ট বিভাগ/ইনস্টিটিউট নিজ নিজ শিক্ষার্থীদের সাথে যােগাযােগ ও উপস্থিতি নিশ্চিত করে বিভিন্ন পরীক্ষার সময়সূচি প্রণয়ন করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের নিকট প্রেরণ করলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অনার্স শেষবর্ষ ও মাস্টার্স-এর কোর্স/সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষাসমূহ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আগামী ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখ থেকে নেয়া যায়। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে স্বল্পদিনের বিরতি দিয়ে পরীক্ষার সময়সূচি প্রণয়ন করতে হবে; প্রয়ােজনে একদিনে দুটি পরীক্ষা নেয়া যাবে। পরীক্ষার সময়কাল হবে বিদ্যমান নির্ধারিত সময়ের ৫০% অর্থাৎ অর্ধেক। একইভাবে ব্যবহারিক পরীক্ষাসমূহ নেয়া যাবে। ক্রমান্বয়ে অন্যান্য পরীক্ষাও একই নিয়মে অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা সংক্রান্ত যে কোন তথ্য নিজ নিজ বিভাগ/ইনস্টিটিউট থেকে জানবে।
২) শিক্ষার্থীদের ইনকোর্স/মিডটার্ম/টিউটোরিয়াল পরীক্ষা অনলাইনে অ্যাসাইনমেন্ট/মৌখিক/টেকহােম পদ্ধতিতে নেয়া হবে।
৩) ব্যবহারিক পরীক্ষা বিশেষ করে বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, ফার্মেসী, আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস, ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনােলজি অনুষদ ও সংশ্লিষ্ট ইনস্টিটিউটের শিক্ষক/তত্ত্বাবধায়ক/গবেষণা পরিচালক সংশ্লিষ্ট ব্যবহারিক পরীক্ষার গুরুত্ব ও আবশ্যকতা বিবেচনায় নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্রহণ করবেন। বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদ্যমান ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্রহণের নীতির ব্যতিক্রমও হতে পারে। এক্ষেত্রেও লিখিত পরীক্ষার ন্যায় ব্যবহারিক পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সময়ে অর্থাৎ ৫০% কম সময়ে নেয়া বাঞ্ছনীয়।
৪) কোর্সের ক্রেডিট/পূর্ণমান অপরিবর্তিত থাকবে। তবে যেহেতু পরীক্ষা গ্রহণের সময় অনুমােদিত সময়ের অর্ধেক নির্ধারণ করা হয়েছে তাই সময় ও শিক্ষার্থীদের লিখন সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে পরীক্ষা কমিটি প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করবেন।
৫) থিসিস শিক্ষার্থীদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সুপারভাইজার/তত্ত্বাবধায়ক কোভিড-১৯ এর বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বিশেষ নির্দেশনায় সম্পাদন করাবেন।
৬) ইতােমধ্যে যাদের অবশিষ্ট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও সময়সূচি ঘােষণা করা হয়েছে তাদের জন্য পূর্বের বিদ্যমান নীতিমালা বহাল থাকবে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক কাউন্সিলের এক সভা উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালকসহ একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ সংযুক্ত ছিলেন। সভায় কোভিড-১৯ উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থীদের সেশনজট নিরসনকল্পে আগামী ২৬ তারিখ থেকে অনার্স ও মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
Discussion about this post