নিজস্ব প্রতিবেদক
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান বিজয় দিবসে জাতীয় পতাকা বিকৃত করে উপস্থাপন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করার ঘটনায় প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। সেই কারণে আমাদের তদন্ত প্রতিবেদনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর কাছে পাঠানো হয়েছে।ওই প্রতিবেদনে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার তথ্যসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান তদন্ত কমিটির একজন সদস্য।
ওই কমিটির প্রধান ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম রব্বানী। অন্য সদস্যরা হলেন- মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সদরুল আলম দুলু এবং মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার জিন্নাহ আল মামুন।
অন্যদিকে পতাকা বিকৃতির ঘটনার এক সপ্তাহ পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকাস্থ লিয়াজোঁ অফিসে সিন্ডিকেটের ৭৩তম বিশেষ সভায় তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
এতে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর নাজমুল ইসলামকে আহ্বায়ক, প্রক্টর আতিউর রহমানকে সদস্য সচিব এবং একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য সুচিত্রা শারমিনকে সদস্য করা হয়েছে। তবে কবেনাগাদ প্রতিবেদন জমা দিতে হবে তার সুনির্দিষ্ট কোনো সময় বেঁধে দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি নিয়েও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অভিযোগ, পতাকা অবমাননার ঘটনায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর সভাপতিত্বে এবং আরেক অভিযুক্ত শিক্ষক আরএম হাফিজুর রহমানের উপস্থিতিতে সুপারিশে সিন্ডিকেট সভায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই তদন্ত কমিটি মূলত তাদের দায়মুক্তি দিতে গঠন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পতাকা বিকৃতির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহামুদুল হক বলেন, পতাকা অবমাননার ঘটনায় সাত দিন পর তদন্ত কমিটি গঠন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বহীনতারই বহিঃপ্রকাশ।
উল্লেখ্য, মহান বিজয় দিবসে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারকে বিকৃত পতাকা নিয়ে ছবি তোলেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক। পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় ওঠে। এ ঘটনায় ৯ শিক্ষকসহ উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষক ও একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তাজহাট থানায় দুটি এজাহার দায়ের করেছেন।
রোববার (২০ ডিসেম্বর) রংপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শওকত আলী এ দুটি অভিযোগ তদন্ত করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া পতাকা কাণ্ডের পর থেকে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাস ও পার্কের মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন অব্যাহত রয়েছে।
Discussion about this post