অনলাইন ডেস্ক
কেউ নভেল করোনাভাইরাসে একবার আক্রান্ত হলে ভবিষ্যতে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা থেকে কিছুটা সুরক্ষা পাওয়া যায় বলে দুটি নতুন গবেষণায় আশাব্যঞ্জক প্রমাণ পাওয়া গেছে। সংবাদ সংস্থা এপি এ খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. নেড শার্পলেস বলেন, গবেষকেরা দেখেছেন স্বাভাবিক সংক্রমণের পর যাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, তারা কার্যকর ভ্যাকসিন যে ধরনের সুরক্ষা দেবে, ঠিক একই ধরনের সুরক্ষায় থাকেন।’
একজনের পুনরায় করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা ‘খুব, খুব বিরল’, যোগ করেন নেড শার্পলেস।
ক্যানসার ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. নেড শার্পলেস জানান, ইনস্টিটিউটের গবেষণাটির সঙ্গে ক্যানসারের কোনো সম্পর্ক ছিল না। ক্যানসার নিয়ে গবেষণা করা অনেক গবেষক মহামারিজনিত কারণে করোনাভাইরাস নিয়ে কাজ করছেন।
দুটি গবেষণাতেই দুই ধরনের পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। একটি হলো করোনায় সংক্রমণের কয়েক মাস পর অ্যান্টিবডির রক্ত পরীক্ষা এবং সম্প্রতি আবার করোনায় আক্রান্ত কি না, তা শনাক্তের আরেকটি পরীক্ষা।
দুটি গবেষণার একটি গত বুধবার নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত হয়। এতে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ১২ হাজার ৫০০ জন স্বাস্থ্যকর্মী জড়িত ছিলেন। কয়েক মাস আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এমন এক হাজার ২৬৫ জনের পরীক্ষা করে প্রায় সবার শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে এবং শুধু দুজনের শরীরে আক্রান্ত হওয়ার ছয় মাস পর করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যদিও তাদের কারো মধ্যেই কোনো উপসর্গ পাওয়া যায়নি।
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় (জেএইচইউ) থেকে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বব্যাপী প্রায় সাত লাখ মানুষের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া এই সময়ের মধ্যে আরো প্রায় ১৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
জেএইচইউর তথ্য অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ২৯ হাজার ১৬৬ জনে। গতকাল বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ছিল ১৭ লাখ ১৫ হাজার ৮১৫ জন। এ ছাড়া করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাত কোটি ৮৬ লাখ ২৩ হাজার ৭৫২ জনে। গতকাল বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিল সাত কোটি ৭৯ লাখ ৫৫ হাজার ৭৪৯ জন।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। চলতি বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে মহামারি ঘোষণা করে। এর আগে ২০ জানুয়ারি জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে আরো দুই লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত এক কোটি ৮৪ লাখ ৫৫ হাজার ৬৫৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার মৃত্যু নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ২৬ হাজার ৮৮ জনে। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র দুটি করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে। ফাইজারের পর গত সপ্তাহে মডার্নার ভ্যাকসিনও অনুমোদন দেয় দেশটির কর্তৃপক্ষ।
পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ভারত রয়েছে করোনায় আক্রান্ত দেশের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে এবং মৃত্যুর হিসাবে আছে তৃতীয় অবস্থানে। লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল আক্রান্ত দেশের তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকলেও সর্বাধিক মৃতের সংখ্যায় রয়েছে দ্বিতীয়তে।
Discussion about this post