সাদ্দিফ অভি
দেশে শুরু হয়েছে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম। বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিকালে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে প্রাথমিকভাবে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে বিভিন্ন পেশার ২৬ জনকে ভ্যাকসিন প্রয়োগের মাধ্যমে শুরু হয়েছে প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ।
দেশে প্রথম দিনে যারা স্বেচ্ছায় ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন স্বাস্থ্যকর্মী রুনু ভেরোনিকা কোস্তা, ডা. আহমেদ লুৎফুল মোবেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা, মো. দিদারুল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম ইমরান হামিদ, মো. মাজেদুল ইসলাম, সানজিদা সুলতানা, মো. আব্দুল হালিম, মো. এনামুল হাসান, মো. হামজা, শাম্মী আকতার, ডা. আল মামুন শাহরিয়ার সরকার, মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান, ডা. ফরিদা ইয়াসমিন, ডা. আফরোজা জাহিন, ডা. অরূপ রতন চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. আবদুল কাদের খান, মো. আব্দুর রহিম, কাজী জসিম উদ্দিন, মোশারফ হোসাইন, সাংবাদিক মাসুদ রায়হান পলাশ, সাংবাদিক মো. আল- মাসুম মোল্লা, আমিরুল মোমেনিন, মিস মুন্নি খাতুন, মো. আশিফুল ইসলাম ও দেওয়ান হেমায়েত হোসাইন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা প্রথম দিনেই ভ্যাকসিন নিয়েছেন। কিন্তু ভ্যাকসিন নেওয়ার বিষয়ে আগে থেকে পরিবারকে কিছু জানাননি তিনি। তিনি বলেন, যেভাবেই হোক মানুষের মধ্যে একটা অপপ্রচার ছড়িয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে অন্য কর্মীদের বলবো ভ্যাকসিন নেওয়ার কথা, আমি যদি না নিয়ে বলি তাহলে সেটা হয়তো সঠিক হবে না। আমি আমার পরিবার, সহকর্মীদের জানাইনি। আমি নিজে থেকেই সংকল্প করেছি। ভ্যাকসিন নিলে মানুষের যে ক্ষতি হবে এই অপপ্রচার বন্ধ হবে।
তিনি আরও বলেন, ভ্যাকসিন খুবই সাধারণ একটা বিষয়। খুবই ছোট একটি সুই, কোনও ব্যথাও অনুভব করিনি আমি। ছোটবেলায় আমরা ভ্যাকসিন নিতেও ব্যথা পেয়েছি। এখন আরও আধুনিক, এখন মানুষকে কম কষ্ট দেওয়া হয়।
ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, ভ্যাকসিন আমাদের দেশে একটি আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। আমি যেহেতু একজন ফ্রন্টলাইন সৈনিক, আমার প্রথম থেকেই ইচ্ছা ছিল ভ্যাকসিন নেওয়ার। এটি আমাদের প্রত্যেকের জন্য জরুরি। আমি আজকে এটা নিয়ে প্রমাণ করলাম যে এটার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নাই। যাদের মনে সন্দেহ রয়েছে বা ভয় পাচ্ছেন তাদের বলতে চাই–আমি নিয়েছি আপনারাও নিন।
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আহমেদ লুৎফুল মোবেন বলেন, করোনার মধ্যেও আমরা কাজ করে গেছি। এখন ভ্যাকসিনের সুযোগ এসেছে, ভ্যাকসিনের মাধ্যমে যুদ্ধের সুযোগ হয়েছে, তাই মোকাবিলা করছি। এই মোকাবিলা আমাদের সবাইকে করতে হবে। যেকোনও ভ্যাকসিনের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। সেটার জন্য অবজারভেশন টিম আছে। একটি নিরাপদ সময় পর তাদের ভ্যাকসিন সেন্টার থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে। যদি কোনও সমস্যা হয় সেটা জানানোর মাধ্যম আছে।
দেশে প্রথম ভ্যাকসিন নিয়েছেন একই হাসপাতালের নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা। টিকা নেওয়ার পর তিনি জানান, টিকা নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেন। আমার কাছে মনে হয় এটা কোনও সমস্যা না। একজন স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে আমার নেওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষ যেন টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ হয় এবং কোনও ভয়ভীতি যেন না থাকে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত তেমন কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখিনি। তবে সঙ্গে সঙ্গে হবে এমন কোনও কথা নেই। যেকোনও টিকাতে কিছু মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। বাচ্চাদের যখন টিকা দেওয়া হয় তখন টিকার জায়গায় ব্যথা হয়, জ্বর জ্বর ভাব হতে পারে। যাতে গুরুতর কিছু না হয় সেদিকে আমরা দৃষ্টিপাত করছি। আমাদের টিম তৈরি আছে এদের ফলোআপ করার জন্য।
Discussion about this post