নিউজ ডেস্ক
বঙ্গভ্যাক্স টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ইথিক্যাল অ্যাপ্রুভাল বা অনুমোদনের জন্য বিএমআরসির (বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল) অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে গ্লোব বায়োটেক। শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) গ্লোব বায়োটেকের গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের প্রধান ড. আসিফ মাহমুদ এ তথ্য জানান।
এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি গ্লোব বায়োটেক তাদের উদ্ভাবিত করোনা ভ্যাকসিন বঙ্গভ্যাক্সের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রটোকল জমা দেয়। সেদিন ড. আসিফ জানিয়েছিলেন, বঙ্গভ্যাক্সের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ইথিক্যাল অ্যাপ্রুভাল বা ইথিক্যাল ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করা হলো।
তিনি শুক্রবার বলেন, ‘বিএমআরসি এখনও আমাদের অ্যাপ্রুভাল দেয়নি। তবে গতকাল (বৃহস্পতিবার) তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে মত বিনিময় হয়েছে। এই প্রথম কোনও মন্ত্রী আমাদের হয়ে কিছু একটা বললেন, তাই আমরা আশাবাদী। বিএমআরসির অ্যাপ্রুভাল না পেলে আমরা হিউম্যান ট্রায়াল শুরু করতে পারছি না। তবে তারা এখনও কিছু জানায়নি আমাদের। আর কবে তারা অ্যাপ্রুভাল দেবে সেটাও বুঝতে পারছি না। এখনও তাদের অনুমোদন পাওয়া যায়নি।’বিএমআরসি কী বলছে জানতে চাইলে ড. আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘তারা বলছেন বিষয়টি প্রসেসিংয়ে রয়েছে। আর এ প্রক্রিয়াটি একটু সময় সাপেক্ষ বলেই সময় লাগছে।’
বঙ্গভ্যাক্সের ডোজ একটা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অ্যানিমেল ট্রায়াল বা প্রাণীদেহে এক ডোজেই সুফল পাওয়া গিয়েছিল, কিন্তু সেটা হিউম্যান ট্রায়ালের আগে নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। প্রাণীদেহে এক ডোজে ভালো রেসপন্স পাওয়া গেছে। একই ঘটনা যদি মানবদেহেও ঘটে তাহলে হয়তো একটা ডোজে কাজ করতে পারে, কিন্তু সেটা কেবলমাত্র মানবদেহে পরীক্ষার পরেই নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
তিনি বলেন, ‘এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি গ্লোব বায়োটেকের পক্ষে তাদের সিআরও (ক্লিনিক্যাল রিসার্চ অর্গানাইজেশন) এই প্রটোকল জমা দেয়। তাদের পক্ষে সিআরও লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের কাজটি করবে। আর অনুমোদন হলে একটি সরকারি হাসপাতালে এই ট্রায়াল দেওয়া হবে।’
গত ২৮ ডিসেম্বর গ্লোব বায়োটেককে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হয়। শুরুর দিকে গ্লোবের এই টিকার নাম ব্যানকোভিড থাকলেও সেটি পরিবর্তন করে বঙ্গভ্যাক্স নাম রাখা হয়।
ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য আইসিডিডিআর,বি’র সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) থাকলেও গত ১ ডিসেম্বর আইসিডিডিআর,বি’র অনাগ্রহের অভিযোগ তুলে তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে গ্লোব, জানান প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ।
মানবদেহে বঙ্গভ্যাক্সের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের এই গবেষণায় কাজ করবেন ৫৭ জনের একটি দল। যার প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব জানান, অনুমোদন পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যেই ট্রায়াল শুরু করতে পারবেন তারা। শতাধিক স্বেচ্ছাসেবকের ওপর এটা প্রয়োগের পরিকল্পনা তাদের।
‘বাংলাদেশে কোনও ভ্যাকসিনের ফেইজ-১-এর ট্রায়াল হবে, এটা আমাদের জন্য মাইলফলক।’ বলেন ড. আসিফ মাহমুদ।
এর আগে ২ জুলাই প্রতিষ্ঠানটি দেশে প্রথম ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়। সেদিন তারা জানায়, গত ৮ মার্চ তারা এই টিকা আবিষ্কারের কাজ শুরু করেন। ৫ অক্টোবর গ্লোব জানায়, তারা সফলভাবে প্রাণীদেহে ট্রায়াল সম্পন্ন করেছেন।
Discussion about this post