চট্টগ্রাম: বিশ্বের সেরা ১০০ কনটেইনার হ্যান্ডলিংকারী বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ৬ ধাপ এগিয়ে ৬৪তম অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। ২০১৮ সালে এ তালিকায় দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরের অবস্থান ছিল ৭০তম। ২০০৮ সালে ছিল ৯৫তম।
মেরিটাইম ওয়ার্ল্ডে অত্যন্ত জনপ্রিয় গণমাধ্যম ‘লয়েডস লিস্ট’ প্রতিবছর তাদের ওয়েবসাইটে এ তালিকা প্রকাশ করে।
এবার ‘ওয়ান হানড্রেড পোর্টস ২০১৯’ শীর্ষক ওই তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে চীনের সাংহাই বন্দর। ২০১৮ সালেও বন্দরটি শীর্ষে ছিল। যথারীতি দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে সিঙ্গাপুর পোর্ট। তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম ও নবম অবস্থান চীনের বিভিন্ন বন্দরের দখলে রয়েছে এবার। ষষ্ঠ অবস্থানে এসেছে দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান বন্দর। দশম অবস্থানে মধ্যপ্রাচ্যের দুবাই পোর্ট। নেদারল্যান্ডসের রটারডেম পোর্ট রয়েছে ১১তম অবস্থানে। মালয়েশিয়ার পোর্ট কেলাং ১২তম হয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের জওহরলাল নেহেরু বন্দর ২৮তম ও মুন্দারা ৩৬তম অবস্থানে রয়েছে। শততম অবস্থানে রয়েছে তাইওয়ানের তাইপে বন্দর।
লয়েডস লিস্টের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম বন্দর ২৯ লাখ ৩ হাজার ৯৯৬ টিইইউ’স (২০ ফুট দীর্ঘ) কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে। ২০১৭ সালে যা ছিল ২৬ লাখ ৬৭ হাজার ২২৩ টিইইউ’স। প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৯ শতাংশ।
অন্যদিকে বিশ্বসেরা চীনের সাংহাই ২০১৮ সালে হ্যান্ডলিং করেছিল ৪ কোটি ২০ লাখ ১০ হাজার ২০০ টিইইউ’স। ২০১৭ সালে যা ছিল ৪ কোটি ২ লাখ ৩৩ হাজার টিইইউ’স। প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৪ শতাংশ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, সরকার ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় বন্দরের জন্য ‘কি গ্যান্ট্রি ক্রেন’ বা ‘কিউজিসি’সহ আধুনিক কনটেইনার হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ, ইয়ার্ড ও টার্মিনাল ফ্যাসিলিটি বাড়ানো, অটোমেশন, দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং বন্দর ব্যবহারকারীদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির কারণেই লয়েলডস লিস্টে বিশ্বের সেরা বন্দরের তালিকায় ৬৪তম অবস্থানে উন্নীত হতে পেরেছি আমরা। নিঃসন্দেহে এটি জাতির জন্য গৌরবের।
তিনি বলেন, নির্মাণাধীন পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি), বে-টার্মিনাল অপারেশনে গেলে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ ক্রমে বাড়বে। তখন বিশ্বের সেরা ১০০ বন্দরের তালিকায় চট্টগ্রাম আরও অনেক এগিয়ে আসবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ এক প্রশ্নের উত্তরে বাংলানিউজকে বলেন, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াচ্ছি আমরা। অনেক প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। এর মধ্যে ওভার ফ্লো ইয়ার্ড, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। বে টার্মিনালে আধুনিক ট্রাক টার্মিনাল ও ডেলিভারি ইয়ার্ড নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সব মিলে ২০২৫ সালের মধ্যে লয়েডস লিস্টে বিশ্বের সেরা ৫০টি বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর স্থান পাবে আশাকরি।
অনুভূতি জানতে চাইলে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের এ অর্জন পুরো দেশের ভাবমূর্তি বহির্বিশ্বে বিশেষ করে মেরিটাইম ওয়ার্ল্ডে উজ্জ্বল করেছে। এ সাফল্যের ভাগীদার দেশের সব নাগরিক।
Discussion about this post