নিজস্ব প্রতিবেদক
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেছেন, ‘বাঙালির প্রতি বঙ্গবন্ধুর ছিল অপার ভালবাসা। পারিবারিকভাই অসাম্প্রদায়িক, মানবতাবাদী, সমাজসচেতন এবং গণতান্ত্রিক বিশ্বাস নিয়ে তিনি বেড়ে উঠেছেন। ঝঞ্ঝা বিক্ষুদ্ধ এক কঠিন জীবন ছিল তাঁর নিত্য দিনের পথ চলা। স্বাধীনতা এবং মুক্তির সংগ্রামে তিনি নিজেকে সবসময় নিবেদিত রেখেছেন।
বিশ্বে যতো আধুনিক বিজ্ঞানমুখী সমাজব্যবস্থা তৈরি হবে বঙ্গবন্ধু ততোবেশি প্রাসঙ্গিক ও অপরিহার্য হবেন। তাঁর লেখা বইগুলো যতোবার পড়ি ঠিক এই কথাগুলোই বেশি মনে হয়। তাঁর সময়ে তিনি যা কিছু করেছেন, যা কিছু বলেছেন তাঁর সবকিছুই এখন অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক। সে কারণেই তিনি ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন আমাদের বাতিঘর ও দ্রুবতারা হয়ে। তাঁর জন্মশতবর্ষিকী আয়োজনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যে বই প্রকাশ করেছে সেটি সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ।’
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন উপলক্ষ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু: সমাজ ও রাষ্ট্রভাবনা’ শীর্ষক গবেষণা গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। সম্মানিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইতিহাসবিদ ও বিইউপির বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘দারিদ্র্য, অশিক্ষা, দুর্নীতি, কুসংস্কারমুক্ত, উন্নত সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো ও সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠাই ছিল বঙ্গবন্ধুর সমাজভাবনা। আর বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রভাবনা ছিল বাঙালির জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। সেই রাষ্ট্রভাবনা বাস্তবায়নে তিনি পাকিস্তান আন্দোলন পর্বে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর স্বাধীন ও অভিন্ন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগের সঙ্গে দেশ বিভাগের পূর্বে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়েছিলেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলনে শুরু থেকে শুধু সক্রিয় ভূমিকাই পালন করেননি, তিনি ভাষা আন্দোলনের উভয় পর্বে নেতৃত্বাস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন।
ভাষা আন্দোলন বঙ্গবন্ধুর কাছে নিছক একটি রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতির আন্দোলন ছিল না, ভাষা আন্দোলন ছিল বাঙালির জাতীয় মুক্তি ও স্বাধীনতার আন্দোলনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত। আর ৫২’র ভাষা শহীদের রক্তই ১৯৭১ সালের ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তে মিশে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জন্ম লাভ করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।’
Discussion about this post