নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকার সর্বশেষ ২০১২ সালে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় সংস্কার এনেছিল । আরও একবার সংস্কার হচ্ছে শিক্ষাক্রম। সে অনুযায়ী, নতুন প্রস্তাবনার আলোকে শুরুতে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাক্রম তৈরি হচ্ছে। এর আলোকে আগামী বছর প্রথম ও দ্বিতীয় এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন পাঠ্যবই পাবে। প্রাথমিকের পাশাপাশি তারাও পাবে রঙিন বই। আর প্রচলিত মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তে তাদের মূল্যায়ন হবে ধারাবাহিকভাবে।
সূত্র জানায়, এসব শ্রেণির শিক্ষাক্রম লেখার কাজ শেষ হবে আগামী ১৫ এপ্রিলের মধ্যে। এরপর শুরু হবে পাঠ্যবই লেখা। নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে ২০২৫ সালে এসএসসির প্রথম পরীক্ষা হবে। আর এইচএসসির প্রথম পর্ব (একাদশ শ্রেণিতে) ২০২৬ সালে এবং দ্বিতীয় পর্ব (দ্বাদশ শ্রেণি) হবে ২০২৭ সালে। দশম শ্রেণির ২০২৪ সালের মধ্যে এবং দ্বাদশ শ্রেণির জন্য ২০২৬ সালের মধ্যে নতুন শিক্ষাক্রমে বই প্রবর্তন শেষ হবে।
এছাড়া ২০২৩ সালে তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন পাঠ্যবই পাবে। আর দুই বছরের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা হবে আগামী বছর থেকে। নতুন শিক্ষাক্রমে সাপ্তাহিক ছুটি দু’দিন হবে। তবে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা নিয়ে বর্তমান শিক্ষাক্রমে কিছু বলা নেই। প্রস্তাবিত শিক্ষাক্রমেও কোনো দিকনির্দেশনা থাকছে না।
আগামী বছর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের চার শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রমে যে পাঠ্যবই পাবে সেগুলো হবে চার রঙে ছাপানো। এরমধ্যে এখন প্রথম দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীরা চার রঙে ছাপানো বই পাচ্ছে। তাদের সঙ্গে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বইও চার রঙে ছাপানো হবে।
এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মশিউজ্জামান এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বলেন, ভিশন ২০৪১ রূপকল্প, আওয়ামী লীগের ইশতেহার, জাতীয় শিক্ষানীতি ও জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজি বিবেচনায় নতুন শিক্ষাক্রম করা হচ্ছে। এর রূপরেখা প্রথমে তৈরি করা হয়। সেটি অনুমোদন পেলে শিক্ষাক্রম লেখার কাজ শুরু হয়েছে। প্রথমে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখা হবে। নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে আগামী বছর চারটি শ্রেণিতে পাঠ্যবই যাবে। এগুলো তৈরির কাজ শেষ হবে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে বলে জানান তিনি।
এদিকে পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে মূল্যায়নেও পরিবর্তন আসছে। পরীক্ষা নির্ভরতার পরিবর্তে ধারাবাহিক মূল্যায়ন গুরুত্ব পাবে, যা দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত থাকবে। প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা না রাখার পরিকল্পনা করা হেয়েছে। শিক্ষকরা ধারাবাহিকভাবে মূল্যায়ন করবেন তাদের। তার আলোকে পরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে।
ধারাবাহিক মূল্যায়নে চতুর্থ থেকে সপ্তম শ্রেণিতে থাকবে ৭০ শতাংশ নম্বর, বাকি ৩০ শতাংশ পরীক্ষা থাকবে। এছাড়া অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে ৬০ শতাংশ ধারাবাহিক মূল্যায়ন ও বাকি ৪০ শতাংশ আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা থাকবে। নবম ও দশম শ্রেণিতে ৫০ শতাংশ ধারাবাহিক মূল্যায়ন ও বাকি ৫০ শতাংশ পরীক্ষায় থাকবে। আর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ধারাবাহিক মূল্যায়ন ৩০ শতাংশ ও বাকি ৭০ শতাংশ পরীক্ষায় থাকবে। এ পরিকল্পনায় এসএসসিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান এ পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষা হবে। বাকি পাঁচ বিষয়ের মূল্যায়ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হবে।
Discussion about this post